|
|
|
|
তারকেশ্বরের পুণ্যার্থীদের জন্য একগুচ্ছ পরিষেবা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বৈদ্যবাটি |
তারকেশ্বরের উদ্দেশে বাঁক কাঁধে পাড়ি আর অন্ধকার পথে নয়। শ্রাবণ মাসে তারকেশ্বর মন্দিরে লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থী জল ঢালতে আসেন দীর্ঘ পথ হেঁটে। সেই পথ এ বার আলো ঝলমল করবে তাঁদের সুবিধার জন্য। পুরসভা, পঞ্চায়েত, পুলিশ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এই আয়োজন।
শেওড়াফুলি থেকে তারকেশ্বরের দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার। তারকেশ্বরের শ্রাবণী মেলায় শুধু এই রাজ্য নয়, ভিন রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আসেন। বৈদ্যবাটির নিমাইতীর্থ ঘাট থেকে জল নিয়ে পায়ে হেঁটে পাড়ি দেন সব বয়সের মহিলা-পুরুষ। শনি-রবিবার সব থেকে বেশি ভিড় হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই দু’দিনে লক্ষাধিক মানুষ যান বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোড দিয়ে। |
|
বসেছে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। ছবি: প্রকাশ পাল। |
দীর্ঘ ওই পথে এত দিন কোনও আলোর ব্যবস্থা ছিল না। এ বার বৈদ্যবাটি পুরসভার উদ্যোগে নির্মাইতীর্থ ঘাট থেকে দিল্লিরোড-সংলগ্ন চাঁপসড়া পদ্মাবতী কলোনি পর্যন্ত স্থায়ী আলো বসানো হয়েছে। ওই অংশের পর থেকে সংশ্লিষ্ট সিঙ্গুর, হরিপাল এবং তারকেশ্বর ব্লকের পঞ্চায়েতগুলির উদ্যোগে আলোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেন, “রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অনুমতি সাপেক্ষে সরকারি নিয়মমাফিক টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এই ব্যবস্থা থাকবে শুধুমাত্র শনি এবং রবিবার।” রাস্তার যে অংশে বিদ্যুৎ নেই, সেই সমস্ত জায়গায় জেনারেটরের সাহায্যে আলো জ্বালানো হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বলছে, এত দিন প্রবল ভিড় এবং অন্ধকারের ফলে নানা দুর্ঘটনা লেগেই থাকত। অন্ধকারের সুযোগে নানা অবাঞ্ছিত কাজকর্মও হত। সুযোগ নিত দুষ্কৃতীরা। এ বার সেই পরিস্থিতি থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে বলে পুলিশের দাবি।
শুধু পূণ্যার্থীদের যাত্রাপথ আলোকিত করাই নয়, জল নেওয়ার সময় দুর্ঘটনা এড়াতে নিমাইতীর্থ ঘাটে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে বৈদ্যবাটি পুরসভা এবং পুলিশ-প্রশাসন। ওই ঘাট চত্বরে এ বারেই প্রথম ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। অস্থায়ী জেটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু নিমাইতীর্থ ঘাট নয়, পূণ্যার্থীরা ভিড় এড়াতে আশেপাশের অন্তত ন’টি ঘাট থেকে জল নিয়ে তারকেশ্বরের উদ্দেশে রওনা দেন। ওই সব ঘাটেও পুরসভা পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রাবণী মেলার সময় টানা একমাস অন্তত ২০ লক্ষ মানুষ ওই সমস্ত ঘাটগুলি থেকে জল নেন। দুর্ঘটনা এড়াতে ডুবুরিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। গঙ্গায় স্পিড বোটে নজরদারিরও ব্যবস্থা থাকছে। বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ বলেন, “পুরসভার পক্ষ থেকে মোট ১০০ মহিলা গ্রিন পুলিশ এবং ১০০ সিভিল পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, শুশ্রূষার জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্পেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।” নিমাইতীর্থ ঘাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখানে যান জেলার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী। পুরসভার কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। পুলিশ সুপার জানান, জলযাত্রীদের সুবিধার জন্য এবং বিপদ এড়াতে তারকেশ্বরের দুধপুকুরেও ডুবুরি থাকবে। নিমাইতীর্থ ঘাট থেকে তারকেশ্বর পর্যন্ত রাস্তায় প্রতি ৪ কিলোমিটার অন্তর পুলিশের সহায়তা কেন্দ্র থাকবে। সেখানে জলসত্রেরও আয়োজন থাকবে। মেলা চলাকালীন শনি ও রবিবার ওই রাস্তায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে বাইকে টহল দেবেন পুলিশকর্মীরা। তারকেশ্বর মন্দির চত্বরেও রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে ৬টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “শ্রাবণী মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে পুলিশ সব রকম ভাবে তৈরি।” |
|
|
|
|
|