|
|
|
|
যৌথ উদ্যোগে নয়া বন্দর প্রকল্পে সাড়া ৩০ সংস্থার |
পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
নাব্যতা কম হওয়ায় হলদিয়া বন্দরের ব্যবসায় মন্দার টান। তাই হলদিয়ার পুরনো বন্দরের কিছু দূরে সালুখালিতে যৌথ উদ্যোগে চারটি বার্থ নিয়ে নতুন একটি বন্দর গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবিত ওই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়ে সম্প্রতি দরপত্র জমা দিয়েছে দেশ-বিদেশের প্রায় ৩০টি সংস্থা।
কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান মণীশ জৈন জানান, দু’কোটি টন ক্ষমতাসম্পন্ন ‘হলদিয়া ডক-২’ প্রকল্পটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রূপায়ণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। যে-সব সংস্থা বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের মধ্য থেকে যোগ্য সংস্থাকে বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। জাহাজ মন্ত্রকের অনুমোদন পেলে ডিসেম্বরের মধ্যে পছন্দের সংস্থার সঙ্গে প্রকল্প গড়ার জন্য চুক্তি সেরে ফেলা হবে।
দেশ জুড়ে আর্থিক মন্দার জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে লগ্নিকারী সংস্থাগুলি এখন অনেকটাই ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে চলছে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ রাজারহাটে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত অর্থতালুক প্রকল্প। বারবার বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও ব্যাঙ্ক, বিমা-সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি এখনও পর্যন্ত ওই অর্থতালুকে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এই অবস্থায় হলদিয়ায় প্রস্তাবিত বন্দর প্রকল্প গড়ার ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে থেকে বিপুল সাড়া পাওয়ায় কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষ বেশ উৎসাহিত।
নতুন বন্দর গড়ে তুলতে দু’হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। প্রকল্পের যে-রূপরেখা তৈরি হয়েছে, তাতে বন্দরটি গড়ে উঠবে দু’ভাগে। ‘হলদিয়া ডক-২ উত্তর’ এবং ‘হলদিয়া ডক-২ দক্ষিণ’। উত্তর ও দক্ষিণ দু’টি বন্দরেই দু’টি করে বার্থ থাকবে। একটি বার্থের মাধ্যমে জাহাজ থেকে পণ্য নামানো-ওঠানো সবই হবে। অন্য বার্থটিতে শুধু পণ্য নামানোর কাজ চলবে।
বন্দরের চেয়ারম্যান জানান, প্রকল্প শুরুর দু’বছরের মধ্যে বন্দর তৈরির কাজ শেষ করে ফেলা হবে। মূলত যে-সব জাহাজ আমদানির কয়লা, আকরিক লোহা এবং ম্যাঙ্গানিজ নিয়ে এখানে আসে অথবা আন্তর্জাতিক বাজারে যায়, সেগুলিকেই নতুন বন্দরে আনার কথা ভাবা হয়েছে।
নতুন বন্দরের পরিকল্পনা কেন? কয়েক বছরে হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা-পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে, বছরের অধিকাংশ সময় ভারী পণ্যবাহী জাহাজ ঢুকতে পারে না। ড্রেজারের সাহায্যে জলপথের পলি তুলে দূর সমুদ্রে ফেলে আসা হলেও জলের টানে সেই পলিমাটি ফের নদীর বুকে এসে জমে। সেই কারণেই বিকল্প উপায়ের কথা ভাবা হচ্ছিল। নতুন বন্দর গড়ার পরিকল্পনা সেই ভাবনা থেকেই।
নতুন বন্দরে নাব্যতার কী হবে? কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষের দাবি, সালুখালিতে প্রস্তাবিত বন্দরে নাব্যতা নিয়ে বিশেষ কোনও সমস্যা হবে না। কারণ পুরনো বন্দরের লকগেটের বাইরে যেখানে ওই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য জায়গা চিহ্নিত হয়েছে, সেখানে জলের গভীরতা অনেক বেশি।
কলকাতা বন্দরের এক কর্তা জানান, প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার সালুখালিতে প্রায় ১৬০ একর জমি দিয়েছে। ওই অঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ রেলপথ তৈরির করতে কলকাতা বন্দরের পক্ষ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করা হবে।
|
|
|
|
|
|