বছর দুই আগে রাজপুত পরিবারের মেয়ে ভালবেসে বিয়ে করেন গ্রামেরই এক তথাকথিত ‘নিম্নবর্ণের’ যুবককে। বিয়ের পর তাঁরা কাজের সূত্রে চলে যান জালন্ধরে। এক বছর আগে একটি মেয়েও হয়েছে তাঁদের। বহুদিন পরে দেশে ফিরছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু জানতেন না তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে বিহারের সেই জাতপাতের তীব্র রোষ। জামাইকে মারাত্মক জখম করে, নাতনিকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়েছে তাঁর ‘রাজপুত’ বাবা।
আজ ভোরে এই ঘটনা ঘটেছে বিহারের মোতিহারি স্টেশনে। জখম কৃষ্ণ রাম হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। শিশুকন্যাটিকে পাঠানো হয়েছে সরকারি হোমে। পুলিশ এখন জখম কৃষ্ণ রামের জবানবন্দির অপেক্ষায়।
কৃষ্ণ এবং খুশবু মোতিহারির গনাহি গ্রামের বাসিন্দা। খুশবুর বিয়ের পরই তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা কৃষ্ণর নামে অপহরণ এবং জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ আনে থানায়। সেই মামলার শুনানির সুবাদেই ওই দম্পতি মোতিহারিতে আসেন। ভোর তিনটে নাগাদ ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে নামেন তাঁরা। মেয়ে-জামাই বাইরে আসা মাত্র খুশবুর বাবা মনোজ সিংহ ও তাঁর লোকেরা কৃষ্ণ রামকে ঘিরে ধরে ছুরি দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করতে থাকে। খুসবু প্রতিবাদ করলে তাঁর কোলের মেয়েকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেয় হামলাকারীরা। তার পরে খুশবুকে মোটরসাইকেলে তুলে উধাও হয়ে যায়। ভোর রাতে স্টেশন চত্বরে এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে কেউ সাহস পাননি। পরে মাটিতে পড়ে থাকা শিশুটিকে কিছু যাত্রী তুলে নিয়ে গিয়ে দুধ খাওয়ান। কৃষ্ণকে মোতিহারির সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সদর থানার পুলিশ যখন আসে তত ক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। বাচ্চাটিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সদর থানার ওসি রামাশিস খেমাতি বলেন, “বাচ্চাটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে জখম কৃষ্ণ মাঝে মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। ফলে তাঁর কাছ থেকে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কৃষ্ণ জানিয়েছেন, শ্বশুর ও তাঁর বাড়ির লোকেরা তাঁকে জখম করে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে।” |