উত্তরের চিঠি

টাঙ্গনের বুক থেকে হারিয়েছে কাশ
নেই কোনও রাখালের বাঁশির সুর। গোধূলি বিকেলে গরু-মোষ-ছাগল নিয়ে আশপাশের গ্রামের ছেলেমেয়েদের প্রাণচঞ্চল কর্মব্যস্ততা হারিয়ে গিয়েছে বহু দিন। এক দিন এখানে শরতের কাশফুলের বাহারি মেলা বসে যেত। আর রুক্ষ-শুষ্ক শীতের দিনে কুলবাগান জুড়ে ছিল ছেলেমেয়েদের দিনরাত আনাগোনা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারি ব্লকের জামাড় ও সিহলের মাঝখানে মোকামপুর গ্রামের টাঙ্গন নদীর তীরবর্তী এই কাশবন আর কুলবন আজ আর নেই। কিছু মাটি চোরের সক্রিয়তা ও প্রশাসনের উদাসীনতায় এই প্রাকৃতিক উদ্যান আজ তার অস্তিত্বের অন্তিম পর্যায়ে। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা এই কাশবন কম করেও পঞ্চাশ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। কিন্তু এখন এক একর জমিতেও কাশবন নেই। আসলে জমিই নেই। জমি কেটে গভীর ও প্রশস্ত এক খাল কাটা হয়েছে। যেখানে হয়তো কোনও দিনই কাশ বা কুলগাছের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। টাঙ্গনের বুক চিরে মাটি খোঁড়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

বিস্তৃত ও উঁচু জমিতে কাশের বন আজ
নিশ্চিহ্ন। এখন তা নিচু ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

টাঙ্গন নদীর পাড়ের রাস্তা
কেটে মাটি তোলা হচ্ছে।
অধিকাংশ মাটি নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী ইটভাটায়। কিছু দালাল এই মাটি চুরিতে ইটভাটার মালিকদের সহায়। মাটি কাটতে কাটতে টাঙ্গন নদী, মহীপাল-বুনিয়াদপুর রোডের কাছে চলে এসেছে। বর্ষাকালে নদীর জল রাস্তায় চলে আসে। বাঁধ বলতে পিচ ঢালা রাস্তাটি। অন্য দিকে রাস্তার পূর্ব দিকেও কিছু দিন আগে মাটি কাটা হচ্ছিল। এ ভাবে চলতে থাকলে নদী কিন্তু রাস্তার অস্তিত্ব ধ্বংস করে অন্য খাতে বইতে শুরু করবে। নদী ও রাস্তার এ রকম চরম পরিস্থিতিতেও প্রশাসনের হেলদোল নেই। স্থানীয় কিছু পরিবেশপ্রেমী যুবক বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ভূমি সংস্কার দফতরের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একটি নীরব নদী ও একটি সদাচঞ্চল রাস্তার স্বার্থে।


আলু অপচয়
হিমঘরের আলু মাটিতে পুঁতে দেওয়া আমাদের লজ্জা। আজকের এই দ্রুত ও সংরক্ষণশীল খাবারের যুগে আলুর মতো একটা ফসলকে নষ্ট করে দিতে হয়। এটা কৃষি বিভাগের দুর্বলতা। কোচবিহার ও সন্নিহিত জলপাইগুড়ি জেলায় আলু ও টম্যাটোর চাষ বেশি হয়। অথচ উৎপাদিত ফসলের চাহিদা অসমে না থাকলে কৃষকের কপাল পোড়ে। সরকারি তরফে আলুর চিপস ও টম্যাটো সস এর কারখানা তৈরি করা হলে এই অপচয় বন্ধ হবে। রোদে শুকিয়ে আলুকে পরবর্তীতে চিপস তৈরির জন্যও রাখা যায়। এ ব্যাপারে সরকারই পারে কৃষকদের উৎসাহিত করতে।


মৌলিক চিন্তাধারা
বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীরা শুধু নম্বর পেতে চায়। তাদের বাস্তব বিষয়ের জ্ঞান নিয়ে কেউ চিন্তা করে না। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই জ্ঞান খুবই জরুরি। ওই নম্বর নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষাই হল সমস্যা সমাধানের উপায়। পরীক্ষার মাধ্যমেই ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞানের গভীরতা যাচাই করা যায়। অভিভাবকরাও ছেলেমেয়েদের ওপর বেশি নম্বর আনার ইচ্ছেটা চাপিয়ে দেন। সব মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীরা মৌলিক চিন্তাভাবনা থেকে বিরত থাকছে। নম্বর নয়, মৌলিক চিন্তাধারাই হোক উচ্চশিক্ষার শেষ কথা।

উত্তরের চিঠি,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি- ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.