উত্তরে বান, দক্ষিণ পাচ্ছে না বর্ষার দাক্ষিণ্য
বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনলেও দক্ষিণবঙ্গের বর্ষা-ভাগ্য খোলার লক্ষণ নেই। অথচ উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি-ধসে রবিবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পাহাড় ও ডুয়ার্স। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ারই ইঙ্গিত আবহাওয়া দফতরের।
চলতি মরসুমের গোড়া থেকেই বর্ষা খামখেয়ালি। পশ্চিমবঙ্গেই উত্তর-দক্ষিণে বর্ষার আচরণ সম্পূর্ণ বিপরীত! জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে অতিবর্ষণে উত্তরবঙ্গ এমনিতেই বিপর্যস্ত। উপরন্তু মৌসুমি অক্ষরেখা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে ফের হিমালয়ের পাদদেশের দিকে সরে গিয়েছে। রবিবার সন্ধ্যার উপগ্রহ-চিত্র অনুযায়ী, সেটি রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, দ্বারভাঙা, শিলিগুড়ি, কোচবিহার হয়ে নাগাল্যান্ডের উপরে অবস্থান করছে।
আর তাই অবিরল বর্ষণে ভেসে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের হিমালয় সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। বাগডোগরায় শনিবার বিকেল থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সিকিমে ৭০ মিলিমিটার। এই পরিস্থিতিতে আরও দুঃসংবাদই শুনিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। তাদের হুঁশিয়ারি: মৌসুমি অক্ষরেখাটি পাহাড়ের দিকে আরও সরে আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে হিমালয়ের পাদদেশে আরও বৃষ্টি হবে, দার্জিলিং ও সিকিমের পাহাড়েও অতিবৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা। উত্তর-পূর্বেও ব্যাপক বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে।
বস্তুত, অবিরাম বৃষ্টিতে ডুয়ার্সের সমস্ত নদীতে জল বাড়ছে। ময়নাগুড়ি-জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তায় লাল সঙ্কেত জারি হয়েছে। জলঢাকা-রায়ডাক-সঙ্কোশে হলুদ সঙ্কেত। শিলিগুড়ির কাছে চম্পাসারিতে মহানন্দার বাঁধ ভেঙে বিরাট অঞ্চল প্লাবিত হয়ে যায়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া পোড়াঝাড়ে মহানন্দা দু’কূল উপচে গ্রাম ভাসিয়ে দিয়েছে। ডুয়ার্সে রেতি-সুক্রিতি নদী উপচে সামসিতে ভারত-ভুটান সার্ক সড়কে যান চলাচল বন্ধ। রেতি নদীর বাঁধেও ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি রাতভর লাগাতার বৃষ্টিতে জায়গায়-জায়গায় ধস নামায় এ দিন সকালে দার্জিলিং কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল। সকালে সিকিমগামী ৩১(এ) জাতীয় সড়কে রম্ভির কাছে ধস নামে। ধস নামে দার্জিলিঙের পথেও। পরে দার্জিলিংগামী একটি রাস্তা এবং সিকিমগামী রাস্তা কিছুটায় ধস সরিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা হয়।
দক্ষিণবঙ্গে পরিস্থিতি ঠিক উল্টো। চাষ-আবাদের জন্য তামাম গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ যার মুখ চেয়ে থাকে, সেই বর্ষা এ দিকে বিশেষ নজরই দিচ্ছে না। আবহবিদেরাও এখানে আগামী ক’দিনে তেমন বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন না। বরং দক্ষিণবঙ্গে আপাতত অস্বস্তিকর আবহাওয়াই চলবে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন, মৌসুমি-অক্ষরেখার এই ‘বৈষম্যমূলক’ আচরণের শিকার সারা দেশই। তাই উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রবল বর্ষণ সত্ত্বেও দেশে বৃষ্টির সার্বিক ঘাটতি ১৩%। মধ্য ও দক্ষিণ ভারতে ২২%। ঘাটতি সর্বাধিক উত্তর-পশ্চিম ভারতে। এ মরসুমে ওই তল্লাটে বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিকের ৩৬% কম।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.