তরুণ বয়সে গরিব খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন। তখন খাসজমি উদ্ধার করে গরিবদের মধ্যে বিলিবণ্টন করতে গিয়ে পুলিশের হাতে একাধিক বার গ্রেফতার হয়েছেন। জেলও খাটতে হয়েছে। পরে নানুরের পালিটা গ্রামের মনিরুল হক বুলবুল নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন নানা সাংস্কৃতিক কার্যকলাপে। লিটল ম্যাগাজিন ছাপানো, তার প্রচ্ছদ করা (লিনো কাঠে বিশেষ খোদাই করে প্রায় শ’খানেক প্রচ্ছদ বানানোর কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর), ছবি আঁকা। জীবনের নানাবিধ অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ কবিতা, প্রবন্ধ লেখা। এই সময়েই জেলার একটি লিটল ম্যাগাজিনে লিখেছিলেন ‘বীরভূমের যাত্রার একাল সেকাল’। পরে তা পুনর্মুদ্রিত হয় গৌড়াঙ্গপ্রসাদ মজুমদারের ‘রাজ্যের তিনশো বছরের যাত্রার ইতিহাস’ শীর্ষক সংকলন গ্রন্থটিতেও। তাঁর লেখা আরও একটি প্রবন্ধ এক সময় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল। জেল জীবনের কাহিনি নিয়ে মনিরুলবাবু সেই প্রবন্ধের নাম ‘থালা, বাটি, কম্বল জেলখানায় সম্বল’। এ সবের মধ্যে দিয়েই কেটে গিয়েছে জীবনের একটা বড় অংশ।
রাজ্যের প্রাক্তন কারামন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরীর দীর্ঘ সময়ের এই আপ্ত সহায়কের আরও একটি নেশা রয়েছে। তিনি কাঁথা স্টিচেরও শিল্পী। যখন কম্পিউটারের এত রমরমা ছিল না, সেই নব্বইয়ের দশক থেকে হাতে এঁকেই কাঁথা স্টিচের অজস্র নকশা করে চলেছেন মনিরুলবাবু। ইতিমধ্যে তাঁর কাছে কাজ শিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন ১৩২ জন কাঁথা স্টিচের শিল্পী। ১৯৮৮ সালে তাঁর প্রতিবেশী ওলিমা খাতুন ‘ভীষ্মের শরশয্যা’র থিমে একটি কাঁথা স্টিচের ‘ওয়াল ম্যাট’ তৈরি করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন। সেই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন মনিরুলবাবুই। ওলিমা নিজেও এ বিষয়ে মনিরুলবাবুকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। বর্তমানে বোলপুরের একটি ভাড়া বাড়িতে থেকে এখনও সমান আগ্রহে কাঁথা স্টিচের নকশার কাজ করে চলেছেন।
|
তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন স্বয়ং মান্না দে। তিনি জেলার সঙ্গীত জগতের পরিচিত মুখ শান্তিব্রত নন্দন। সিউড়ির এই সঙ্গীতশিল্পী সুনাম কুড়িয়েছেন জেলার বাইরেও। তাঁর গানের প্রথম গুরু মেজদা সুব্রত নন্দন। পরে নলহাটির প্রখ্যাত সঙ্গীত গুরু গৌর দাস, কলকাতার বিমান মুখোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট শিল্পীদের কাছে তালিম নিয়েছেন। শান্তিবাবু বর্তমানে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ছাত্র। গত পঁচিশ বছর ধরে সিউড়িতে ‘অলঙ্কার’ ও ‘নান্দনিক’ নামে দু’টি সঙ্গীত সংস্থা চালাচ্ছেন তিনি। কার্যত সিউড়িতে এমন বাড়ি খুব কমই আছে যেখানে শান্তিবাবুর কোনও শিক্ষার্থী নেই। এখন সিউড়ির গণ্ডি ছাড়িয়ে বক্রেশ্বর থার্মাল পাওয়ার ও দুর্গাপুরেও গান শেখান তিনি। নিজে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ও নজরুল গীতির ভক্ত হলেও শিক্ষার্থীদের শেখান সবরকমের গানই। পাশাপাশি দূরদর্শন ও অন্যান্য চ্যানেলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের গানও গেয়ে চলেছেন।
|
বড়জোড়ার সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘দিগন্ত’ একটি বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করল। রবিবার বড়জোড়া চৌমাথা মোড়ের কাছে একটি হলঘরে অঙ্কন প্রতিযোগিতা হয়। একই সঙ্গে নানা রকমের শিল্প ও চিত্রকলার প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বড়জোড়ার পঞ্চায়েত প্রধান অলোক মুখোপাধ্যায়। উদ্যোক্তা সংগঠনের সম্পাদক পরেশ সেন জানান, প্রতিযোগিতায় প্রায় ১৫০ জন ছেলেমেয়ে যোগ দিয়েছিল।
|
সম্প্রতি বড়জোড়ার একটি প্রতিবন্ধী স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা নৃত্য, সঙ্গীত ও আবৃত্তি পরিবেশন করে। স্কুলের সম্পাদিকা সোমা মুখোপাধ্যায় জানান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে মাধ্যমিকে কৃতী ছাত্র বড়জোড়ার অভীক মুখোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
|
সোনামুখীর রাধামোহনপুর উচ্চবিদ্যালয়ে রবিবার একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এসএফআই। অনুষ্ঠানে নাচ, গান ও আবৃত্তি মঞ্চস্থ করে ওই বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া রাধামোহনপুর পঞ্চায়েতের প্রায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওই স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃগাঙ্কশেখর মুখোপাধ্যায়, এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক ধর্মেন্দ্র চক্রবর্তী প্রমুখ। |