তিন জায়গায় নামল ধস, রাস্তায় ফাটল
য়েক ঘণ্টার মধ্যে তিন জায়গায় ধস ও ফাটল দেখা দিল রানিগঞ্জে।
বৃহস্পতিবার প্রথমে রানিগঞ্জের বাঁশরা খনিকর্মী আবাসন এলাকা ও রতিবাটি কোলিয়ারি এলাকায় ধস নামে। পরে রানিসায়রের দাগা ৩ নম্বর কলোনি এলাকার একটি কালভার্টের একাংশ ধসে ফাটল দেখা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশরা খনিকর্মী আবাসন থেকে ৫০ ফুট দূরে তৈরি হয়েছে গর্ত। তার থেকে ১০০ ফুট দূরে কিছুটা এলাকা বসে গিয়েছে। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ আবার রতিবাটি এলাকায় চাঁদা-কুয়ারডিহি প্রধান রাস্তায় ফাটল দেখা দেয়। রতিবাটি কোলিয়ারি ও ইসিএলের ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের মাঝে এই রাস্তায় ১২ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া ফাটল দেখা দেয়। সারা দিন ধরে সংলগ্ন এলাকায় আগুন জ্বলছে ও ধোঁয়া বেরোনোয় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারাও। যানচলাচল চলাচল বন্ধ। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “অবৈধ খননের জেরেই এই ধস।”
রানিগঞ্জের বাঁশরায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ছবিটি তুলেছেন ওমপ্রকাশ সিংহ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাঁশরার খনিকর্মী আবাসনের সামনে মাস কয়েক আগে ধস নেমেছিল। রতিবাটির ইসিএলের কর্মী আবাসনের কিছুটা দূরে ওই রাস্তায় ফাটলও দেখা দেয়। এর আগেও ধসের কারণে ওই এলাকার ৮টি কর্মী আবাসনের ৩টিই গর্তে ঢুকে যায়। ইসিএল ৮টি পরিবারকেই অন্যত্র স্থানান্তর করে। আবাসনগুলিও ভেঙে দেয় তারা। বাঁশরাতেও সেই সময়ে ইসিএল মাটি ভরাট করে দিয়েছিল। নীলাদ্রিবাবু জানান, এ দিন ছাই ভরাট করতে গেলে ইসিএলকে বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই তারা ধস বিধ্বস্ত এলাকাটি তার কাঁটা দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন। তৃণমূলের রানিগঞ্জ ব্লক সভাপতি সেনাপতি মণ্ডলের দাবি, ইসিএলের মানুষের প্রতি আস্থা নেই। বছরখানেক আগেও অন্ডালের পরাশকোল এলাকায় বিধি না মেনে ছাই ভরাট করেছিল ইসিএল। তারই জেরে দুই সন্তান-সহ ছাইয়ের ভিতরে তলিয়ে যান দুই যুবক। নিয়ম অনুযায়ী, ছাই ভরাট করার আগে গাছের গুড়ি, পাথর, মাটি দেওয়ার কথা। তার পরে ফের মাটি দিতে হয়। এ দিনও ইসিএল ভূগর্ভে সরাসরি ছাই ফেলতে গিয়েছিল। তাই বাসিন্দারা বাধা দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রতিবাটির যে এলাকায় ধস নামে, তার ২০ ফুট দূরে রয়েছে ইসিএলের চারটি খনিকর্মী আবাসন। আবাসনের বাসিন্দা শ্যামময় বাউরি, হরেরাম ধাড়ি, অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়দের কথায়, “দুপুরে হঠাৎ একটা আওয়াজ পাই। দেখি, ঘরের সামনের রাস্তা ভেঙে চুরমার। এখন বাইক নিয়ে ওই রাস্তা পার হতেও ভয় করছে।” অবিলম্বে খনিকর্মী আবাসন অন্যত্র স্থানান্তরের ব্যবস্থা না করা হলে অথৈ জলে পড়বেন বলে জানান তাঁরা।
—নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা আইএনটিউসি নেতা তথা কোলিয়ারি মজদুর ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস রায়চৌধুরী জানান, প্রশাসনিক পর্যায়ে এর আগে বারবার বৈঠক হয়েছে। ২৭ জুন অতিরিক্ত জেলাশাসক জয়ন্তকুমার আইকতের অফিসে শেষ বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, মহকুমাশাসক সুরজিৎ দত্তশর্মা, বিডিও পার্থপ্রতিম সরকার, পুলিশ এবং ইসিএলের আধিকারিকেরা। সেখানে ঠিক হয়, অবৈধ খননের জেরে রতিবাটির ভূগর্ভে ছড়িয়ে পড়া আগুন থেকে এলাকাকে বাঁচাতে দ্রুত ভূগর্ভস্থ কয়লা কেটে নেবে ইসিএল। খনিকর্মীদেরও অন্যত্র স্থানান্তর করবে তারা।
দেবাশিসবাবুর দাবি, “২০০৯ সাল থেকে রতিবাটি এলাকায় ক্রমাগত আগুন ও ধোঁয়া বেরোচ্ছে। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী, ওই এলাকাকে ‘ফায়ার প্রজেক্ট’ অঞ্চল ঘোষণা করে ইসিএল খোলামুখ খনি করে কয়লা কাটা শুরু করেছিল। এলাকার ৫২ জন বেআইনি দখলদারকে অন্যত্র স্থানান্তরও করে তারা। কিন্তু, এর পরে প্রজেক্টের কাজ আর কিছুই এগোয়নি।” তাঁর ক্ষোভ, “বারবার এই ঘটনা ঘটছে। এমন চললে পুরো এলাকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। তখন ইসিএল দায় এড়াতে পারবে না।” নীলাদ্রিবাবুর দাবি, “ওই এলাকায় এক দল জবরদখলকারী উঠতে না চাওয়ায় কয়লা কাটা যাচ্ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.