ঘুরে গেলেন মন্ত্রী, পানাগড়ের ভবিষ্যৎ তবু অস্পষ্ট
পানাগড়ে জাতীয় সড়কের ফাঁস খোলার উপায় খুঁজতে ঘুরে গেলেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী। কিন্তু সমাধানের দিশা তেমন দেখাতে পারলেন না। বরং প্রকাশ্যে এল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপোড়েন। তবে আজ, শুক্রবার মহাকরণে দু’পক্ষের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
কলকাতা থেকে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল হয়ে বরাকর যাওয়ার যে মূল ধমনী, সেই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতেই তিন কিলোমিটারের ছোট্ট কিন্তু প্রাণান্তকর ফাঁস পানাগড় বাজার। কেন্দ্রীয় স্বর্ণ চতুষ্টয় প্রকল্পে যখন পুরনো জি টি রোডের অংশ-সহ গোটা রাস্তা চার লেনের হয়, দার্জিলিং মোড় থেকে রেল ওভারব্রিজ পর্যন্ত দোকান-বাড়ি ভাঙতে দেননি এলাকাবাসী। ওই অংশটুকু দু’লেনেরই রয়ে গিয়েছে। নিত্য যানজট এড়াতে বাইপাস গড়ার কথা চলছে গত দশ বছর ধরে। কিন্তু তা কবে বাস্তবায়িত হবে, তা এখনও আদৌ পরিষ্কার নয়।
গত বছর জুনে মুখ্যমন্ত্রী হয়েই বর্ধমানের জেলাশাসককে পানাগড়ের যানজট সমস্যা দ্রুত মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই রাস্তার দু’পাশে বসতে অভ্যস্ত হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা রুখতে সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা ও জরিমানার ব্যবস্থা করা হয়। ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়ে। সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে মাল নামানো নিষিদ্ধ হয়। মোড়ে-মোড়ে বৈদ্যুতিক সিগন্যাল বসে। সে সময়ে রাজ্য সরকারের আবেদনে ৮৮ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তাতেই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টে নাগাদ পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার যখন কলকাতা থেকে পানাগড়ে গিয়ে পৌঁছন, তখনও যানজট বিশেষ ছিল না। কিন্তু বাইপাস ছাড়া যে স্থায়ী সমাধান হবে না, তা-ও কার্যত সকলেরই জানা।
জাতীয় সড়কের এই অংশের যানজটই হয়ে ওঠে যন্ত্রণার কারণ। ছবি: বিশ্বনাথ মশান
বাইপাস গড়ার কাজ কবে শুরু হবে, সে ব্যাপারে কিন্তু নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি পূর্তমন্ত্রী।  বরং তাঁর বক্তব্য, “বাইপাস অন্য বিষয়। আপাতত দ্রুত এই সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।” তাঁর অভিযোগ, রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য ৯০ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠানো হলেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ মোটে ২ কোটি টাকা অনুমোদন করেছেন। সুদর্শনবাবু বলেন, “যে কোনও কারণেই হোক, এই কাজের ব্যাপারে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অনীহা রয়েছে। বারবার বলা হয়েছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে। দফতরের সচিব দিল্লি গিয়েছেন। কিন্তু সাড়া মেলেনি।”
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, বাইপাস গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দরপত্রের ভিত্তিতে যে ঠিকাদারকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আর্থিক অপারগতার কারণে তারা পিছিয়ে গিয়েছে। নতুন করে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সংস্থার পূর্বাঞ্চলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার অজয় অহলুওয়ালিয়া বলেন, “এই অবস্থায় রাস্তা সংস্কার ও চওড়া করার জন্য বেশি অর্থ বরাদ্দ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”
এ দিন দুপুরে ও সন্ধ্যায় পানাগড় হয়ে যাতায়াত করলেও সুদর্শনবাবু কিন্তু এলাকা ঘুরে দেখা বা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেননি। যা দেখেছেন, গাড়ির ভিতর থেকেই। দুর্গাপুরে যাওয়ার সময়ে এক বার মিনিটখানেকের জন্য নেমে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে দুর্গাপুরে পৌঁছে তিনি বলেন, “রাস্তা চওড়া করার সুযোগ রয়েছে। দু’পাশে অনেকখানি করে ফাঁকা জায়গা আছে। সেই অংশ পাকা করলে রাস্তা অনেকটাই চওড়া হবে। সংস্কার হলে গাড়ির গতি বাড়বে।”
কিন্তু তার জন্য টাকা কোথা থেকে আসবে, তা অনিশ্চিত। বাইপাস গড়া শুরু হলেও সে কাজ শেষ হতে অন্তত বছরখানেক।
কবে শেষমেশ কাজ শুরু হতে পারে, তা নিয়েও কিন্তু ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.