সেতুর কাজ দেখে ক্ষোভ পূর্তমন্ত্রীর
মানুষের কাজ নিয়ে কোনওরকম চালাকি চলবে না। দু’দিনের মধ্যে রাস্তা করতে হবে। আগামী ১০ মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান সুন্দরবন এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে মানুষের উন্নয়ন। সে জন্য জরুরি পরিকাঠামো। ফলে কাজে গাফিলতি সহ্য করা হবে না।
মঙ্গলবার দুপুর উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে কাটাখালি নদীর উপরে সেতুর কাজ দেখতে এসে এ কতা বলেন রাজ্যের পূর্ত ও সড়ক মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। ২০০৬ সালে জানুয়ারি মাসে হাসনাবাদে এই সেতুর শিলান্যাস করেন রাজ্যের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ওইদিনই এক জনসভায় বুদ্ধবাবু প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রী গৌতম দেবকে পাশে নিয়ে বলেছিলেন, “আগামী দু’বছর অর্থাৎ ২০০৯ সালের মধ্যেই সেতুর কাজ শেষ করা হবে। কিন্তু ২০১২ সালে পৌঁছেও নদীর মধ্যে মাত্র দু’টি পিলার ও দু’ধ৩ারে সংযোগকারী রাস্তার সামান্য অংশ তৈরি হওয়া ছাড়া একচুলও কাজ এগোয়নি। সেতুর কাজে গড়িমসি নিয়ে ইতিমধ্যে বহু আন্দোলন হয়েছে। বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ হয়েছে।
ছবি: নির্মল বসু।
সম্প্রতি বারাসতে এসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে হাসনাবাদের এই সেতুর বর্তমান অবস্থার কথ জানতে পেরে পুর্ত ও সড়ক দফতরের আধিকারিকদের কনা ভাষায় দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন হাসনাবাদের সেতুর কাজের গতিপ্রকৃতি দেখতে এসেছেন বে জানান সুদর্শনবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ নির্মল কুমার সরকার, পূর্ত ও সড়ক দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ভুবনেশ্বর কোনার এবং সংশ্লিশ্ট ঠিকাদার সংস্থার প্রদান বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। পূর্ত ও সড়ক দফতরের মন্ত্রী সেতুর কাজের গতি দেখে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেতুর কাজে বিলম্বের কারণ নিয়ে ঠিকাদার সংস্থার প্রধানের কাছে জানতে চান। সেই সঙ্গে সেতুর কাজ কবে শেষ হবে তাও জানতে চান। ঠিকাদার সংস্থার প্রধান সেতুর কাজ শেষ হতে খেনও ১৪ মাস লেগে যাবে বলায়, সুদর্শনবাবু স্পষ্ট ভাষায় তাঁকে নির্দেশ দেন, “এখানকার মানুষের কাছে এই সেতুর খুবই প্রয়োজন, সে কথা মাথায় রেখেই আগামী ১০ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। মনে রাখবেন এই সেতু নিয়ে ম্যাডাম (পড়ুন মুখ্যমন্ত্রী) খুবই চিন্তিত।”
এ দিন পূর্তমন্ত্রী সেতু পরিদর্শনের জন্য কাটাখালি নদী পেরিয়ে পার হাসনাবাদে পৌঁছতেই এলাকার মানুষ সেতু নিয়ে তাঁর কাছে ক্ষোভ উগরে দেন। স্থানীয় বাসিন্দা ভগবান দাস, তপন পাল, প্রবীর দাসরা বলেন, “আমাদের কোনও কথাই শোনে না ঠিকাদাররের লোকজন। সংযোগকারী রাস্তা তৈরির জন্য দীর্ঘদিন আগেই দোকানপাট সরিয়ে দেওয়া হয়। অথচ সেই রাস্তা তৈরির কাজ আজও শেষ হয়নি। ফলে খানাখন্দে রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।” এ সব কথা শুনে মন্ত্রী ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদার সংস্থাকে তিনদিনের মধ্যে রাস্তার কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।
হিঙ্গলগঞ্জ এবং হাসনাবাদের ব্যবসায়ী সুশান্ত ঘোষ, আব্দুল কালেক মণ্ডল, হামিদ গাজিরা বলেন, “সেতু তৈরি নিয়ে চরম টালবাহানা চলছে। ফলে বিদ্যুৎ আনার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র আনা-নেওয়া করতেও প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে।”
সুদর্শনবাবু বলেন, “সেতু নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে আর কোনও কথা বলব না। গুরুত্ব দিয়ে কাজ করুন। ১৫ দিন পরে মহাকরণে বসে মনিটারিং করা হবে সেতুর কাজ কতটা এগোল। কাজ হচ্ছে না দেখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে এক মাস পরে আমি ফের এখানে আসব। মনে রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী সব খবর রাখেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.