পর্যটন শিল্প বিকাশের কথা মাথায় রেখে ময়নাগুড়ি-রামসাই সড়ক সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ত দফতর। খরচ হবে প্রায় ১১ কোটি টাকা। আরআইডিএফ থেকে ওই টাকা মিলেছে। পূর্ত দফতরের (নির্মাণ) জলপাইগুড়ির এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শেখর মজুমদার বলেন, “১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রাস্তা সম্প্রসারণের প্রস্তুতির কাজ চলছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ওয়ার্ক ওর্ডার বার হবে। বর্ষার মধ্যে মাটির কাজ শুরু হয়ে যাবে। পিচের কাজ বর্ষার পরে হবে।” পূর্ত দফতরের ওই উদ্যোগে স্বস্তি ফিরেছে গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। ময়নাগুড়ি থেকে আমগুড়ি, পানবাড়ি হয়ে রামসাই পর্যন্ত ওই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য কয়েক বছর থেকে তাঁরা দাবি করে আসছেন। কয়েকবার মাপজোঁক করা হলেও কাজ হয়নি। দেরিতে হলেও কাজ শুরু হচ্ছে শুনে বাসিন্দারা মনে করছেন রাস্তা সম্প্রসারিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। আগামী কয়েক বছরে রামসাই এলাকায় পর্যটনের ছবি পাল্টে যাবে। উপকৃত হবে ময়নাগুড়ির বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা পর্যটন কেন্দ্রগুলিও। রামসাই পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির সদস্য মানিক দে সরকার বলেন, “বেহাল রাস্তার জন্য পর্যটকরা ময়নাগুড়ি হয়ে যাতায়াত করতে রাজি হয় না। ফলে জঙ্গলের বাইরে যে সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে সেগুলি তাঁদের অধরা থেকে যায়। রাস্তা সম্প্রসারিত হলে ওই সমস্যা মিটবে।” ময়নাগুড়ি-রামসাই রাইনো ক্যাম্প পর্যন্ত ১৯ কিমি পাকা সড়ক কোথাও ৫ মিটার আবার কোথাও সাড়ে ৩ মিটার চওড়া। সরু রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক চলাচল করলেও পর্যটকরা তা ব্যবহার করেন না। কারণ রাস্তার বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ না হওয়ায় খানাখন্দে ভরে গিয়েছে সড়কের বিরাট অংশ। দুটি গাড়ি পাশাপাশি চলাচল করতে পারে না। অথচ রামসাই ঘুরে দেখার পরে জলঢাকা নদীর পাশ দিয়ে ওই রাস্তা ধরে অল্প সময়ে পৌছে যাওয়া সম্ভব জল্পেশ, জটিলেশ্বর, তিনবিঘা সহ বিভিন্ন এলাকায়। শুধু তাই নয়। পর্যটনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দাবি, রাস্তাটি চওড়া হলে যে সমস্ত পর্যটক শুধুমাত্র দিনের বেলায় জঙ্গল ঘুরে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবেন তাঁরাও বাড়তি সুবিধা পাবেন। বনদফতরের রাইনো ক্যাম্পের কর্মী সুনীল রায় বলেন, “রাস্তা খারাপ থাকায় অনেক বলেও পর্যটকদের রামসাই থেকে ময়নাগুড়ি হয়ে অন্য কোথাও পাঠানো সম্ভব হয় না।” পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন রাস্তা সাড়ে ৫ মিটার চওড়া করা হবে। থাকবে ফুটপাত। ময়নাগুড়ি নতুন বাজার থেকে রামসাই বাজার সংলগ্ন রাইনো ক্যাম্প পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ হবে। ইতিমধ্যে রাস্তায় একটি সেতুর কাজ শেষের পথে। বর্ষার মধ্যে শুরু হবে মাটি ফেলে যতটা সম্ভব রাস্তার বাঁক কমানো। পরে শীতের শুরু থেকে করা হবে পাথর ও পিচের কাজ। দফতরের (নির্মাণ) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জানান, যতটা দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করা হবে। এটা হলে পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাগান এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। |