বিএড পাঠ্যক্রমে ছাত্র ভর্তি নিয়ে হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন (‘রিভিউ পিটিশন’) জানাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস শুক্রবার এ কথা জানান।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড পাঠ্যক্রমে মোট আসনের ৯৫ শতাংশে তাদের অধীন কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং বাকি পাঁচ শতাংশ আসনে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভর্তি করা হয়। এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন এক ব্যক্তি। সুরঞ্জনবাবু এ দিন বলেন, “আদালত জানিয়েছিল যে, ওই পদ্ধতি ঠিক নয়। তাই ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে আমরা ডিভিশন বেঞ্চে রিট আবেদন করি। সেখানে জানানো হয়, ছাত্র ভর্তি করতে হবে এনসিটিই-র নিয়মে।” উপাচার্য জানান, এনসিটিই-র নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই বিএডে ছাত্র ভর্তি করার কথা। তাঁর বক্তব্য, দ্বিতীয় রায়টি ‘স্পষ্ট নয়’। তা ছাড়া বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়মে বিএড পাঠ্যক্রমে ছাত্র ভর্তির পদ্ধতি মেনে নিয়েছে আদালত। কল্যাণী, বর্ধমান-সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এই নিয়মে ছাত্র ভর্তি হয়। সুরঞ্জনবাবু বলেন, “যাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নিয়ম চালু হয়, আমরা আদালতের কাছে সেই অনুরোধই করব। আবেদন জানাব, কলকাতার ক্ষেত্রে যেন কোনও রকম বৈষম্য না-হয়।” এক জন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে এই ব্যাপারে তাঁদের আলোচনা হয়েছে বলে জানান উপাচার্য।
এনসিটিই-র নিয়ম অনুসারে ১ জুলাই বিএডের ক্লাস চালু হওয়ার কথা। কিন্তু মামলা চলায় ১ জুলাই ক্লাস শুরু করা যায়নি। এনসিটিই-কে সে-কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য বলেন, “কর্মরত যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকার বিএড করার কথা, তাঁদের জানানো হচ্ছে যে, মামলা চলায় ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছে।”
|
বেসরকারি সংখ্যালঘু স্কুলকেও আপাতত শিক্ষার অধিকার আইন মানতে হবে বলে জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শুক্রবার জানান, সরকারি সাহায্য পায় না, এমন বেসরকারি এবং সংখ্যালঘু স্কুলগুলিকেও শিক্ষার অধিকার আইন মানতে হবে কি না, সেই ব্যাপারে কেন্দ্র এখনও কোনও নির্দেশিকা পাঠায়নি। তা না-আসা পর্যন্ত ওই সব স্কুলকে শিক্ষার অধিকার আইন মেনেই ছাত্র ভর্তি করতে হবে।
ওই কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী বেসরকারি স্কুলে ২৫% আসন গরিব পরিবারের বাচ্চাদের জন্য সংরক্ষিত রাখার কথা। তাদের ফি ছাড়া পড়ার ব্যবস্থা করতে হবে স্কুলগুলিকে। কিন্তু বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুলই এই নিয়ম চালু করতে আগ্রহী নয়। তাদের বক্তব্য, ২৫% শিশুর ফি মকুব করা হলে বাকি ৭৫ শতাংশের ফি বাড়িয়েই তা আদায় করতে হবে। ফলে এই ছেলেমেয়েদের উপরে চাপ বাড়বে। এই দুই গোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীর আর্থ-সামাজিক অবস্থানেও ফারাক রয়েছে। বাকি ৭৫ শতাংশের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে ২৫% পড়ুয়া সমস্যায় পড়বে বলেও স্কুলগুলির আশঙ্কা।
কিন্তু ব্রাত্যবাবু এ দিন জানান, স্কুলগুলিকে ওই সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখতেই হবে। এই শিশুদের ফি বাবদ খরচ বহন করবে সরকার। তিনি বলেন, “সরকারি সাহায্য পায় না, এমন সব বেসরকারি এবং বেসরকারি সংখ্যালঘু স্কুলে শিক্ষার অধিকার আইন কার্যকর করা হবে কি না, সেই ব্যাপারে নির্দেশিকা পাঠানোর জন্য কেন্দ্রকে চিঠি লিখব আমরা।”
|
ভাড়া বৃদ্ধি-সহ ন’দফা দাবিতে আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ট্যাক্সি-মালিক ও চালকদের চারটি সংগঠন। তারা জানিয়েছে, রাজ্য সরকার তাদের দাবিদাওয়া না-মানায় একটানা দু’দিন ওই ধর্মঘটে সামিল হবেন মালিক ও চালকেরা। ওই দু’দিন কলকাতা এবং সংলগ্ন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলিতে ৩৫ হাজারেরও বেশি ট্যাক্সি রাস্তায় নামবে না। বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন, ওয়েস্টবেঙ্গল ড্রাইভার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, ওয়েস্টবেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়ন এবং ক্যালকাটা ট্যাক্সি অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছে। শুক্রবার ওই চারটি সংগঠন বৈঠকে বসে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সব সংগঠনের প্রতিনিধিদের দাবি, পরিবহণমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৩০ জুনের মধ্যে তাঁদের দাবি বিবেচনা করে সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। কিন্তু একটি দাবিও সরকার মেনে নেয়নি বলে অভিযোগ। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ট্যাক্সির ভাড়া না-বাড়াতে সরকার বদ্ধপরিকর। ধর্মঘট হলে তার মোকাবিলা করতে ব্যবস্থা নেবে সরকার। |