|
|
|
|
বিতর্কের মধ্যেও দায়িত্ব নিয়ে জল্পনা |
টেলিকম মন্ত্রিগোষ্ঠীর ভার সেই চিদম্বরমকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার সরে দাঁড়ানোর পর এ বার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে টেলিকম সংক্রান্ত ক্ষমতাসম্পন্ন মন্ত্রিগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ করলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
শুধু বিরোধী শিবিরেই নয়, প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ আজ কংগ্রেসের মধ্যেও আলোড়ন ফেলে দিল। কারণ, টুজি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে চিদম্বরমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাঁর ইস্তফার দাবিতে সরব বিজেপি। চিদম্বরমের পুত্র কার্তি চিদম্বরমের বিরুদ্ধেও সম্প্রতি টেলিকম কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের মধ্যে অনেকেরই ধারণা ছিল যে চিদম্বরম চাপে রয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক উত্তরণের পথে হয়তো স্পেকট্রামই কাঁটা হয়ে উঠবে। এমন পরিস্থিতিতে চিদম্বরমকে প্রধানমন্ত্রী আজ এমন একটি মন্ত্রিগোষ্ঠীর দায়িত্ব দিলেন যা টুজি স্পেকট্রাম নিলামের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করবে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিতর্ক সত্ত্বেও চিদম্বরমকে এই দায়িত্ব দিয়ে বিরোধী বিশেষত বিজেপিকে পাল্টা বার্তা দিলেন মনমোহন সিংহ।
স্বাভাবিক ভাবেই চিদম্বরমের এই নিয়োগ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের নেতাদের মন্তব্য, “তা হলে সেই চিদম্বরমকেই দারোগা করা হল?” কংগ্রেসের মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরীর মন্তব্য, “অভিযোগ তো যা ইচ্ছে করা যায়। কিছুই তো প্রমাণিত হয়নি।”
টেলিকম সংক্রান্ত ক্ষমতাসম্পন্ন মন্ত্রিগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন। তার পর টেলিকম সংক্রান্ত ক্ষমতাসম্পন্ন মন্ত্রিগোষ্ঠীর দায়িত্ব প্রথমে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ারকে দিয়েছিলেন মনমোহন। কিন্তু তিন দিনের মধ্যেই ইস্তফা দেন পওয়ার। টু জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধেও আঙুল উঠেছিল। পওয়ার বলেন, খামোখা বিতর্কে তিনি জড়াতে চান না বলেই অব্যাহতি চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে আজ বলা হয়েছে, চিদম্বরমের নেতৃত্বে ওই মন্ত্রিগোষ্ঠী স্পেকট্রাম মূল্য নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবে তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বিবেচনার জন্য পেশ করা হবে। তবে টেলিকম সংক্রান্ত অন্য সব বিষয়ে এই মন্ত্রিগোষ্ঠীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর আজকের পদক্ষেপ কংগ্রেস মহলে নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তা হল, চিদম্বরমই কি তা হলে লোকসভার নেতা হতে চলেছেন? কংগ্রেসের শীর্ষ সারির এক নেতার কথায়, চিদম্বরমকে এই দায়িত্ব দেওয়ার আগে মনমোহন নিশ্চয়ই সনিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে নিয়েছেন। এ-ও হতে পারে চিদম্বরমকে এই দায়িত্ব দিয়ে পরিস্থিতি বুঝতে চাইছেন মনমোহন-সনিয়া। বিরোধীরা কী প্রতিক্রিয়া জানায় দেখে তার পর তাঁরা বড় সিদ্ধান্ত নেবেন। কংগ্রেসের আর এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, প্রণববাবুর ইস্তফার পর লোকসভার নেতা হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্য কমলনাথ, জয়পাল রেড্ডি বা সুশীল কুমার শিন্ডের মতো যে সব মন্ত্রীর নাম নিয়ে জল্পনা চলছে, তাঁদের চেয়ে চিদম্বরম অভিজ্ঞ এবং পারদর্শী।
চিদম্বরমের সামনে বাধা বলতে রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। যদিও কোনও অভিযোগই এখনও প্রমাণিত হয়নি। এমনকী স্পেকট্রাম মামলায় নিম্ন আদালতও চিদম্বরমের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। তার পর প্রধানমন্ত্রী যখন তাঁকে আজ টেলিকম মন্ত্রক সংক্রান্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীর দায়িত্ব দিয়েছেন, তার থেকেও স্পষ্ট যে মনমোহন সব খোঁজখবর নিয়েই তা করেছেন। এর পর চিদম্বরমের লোকসভার নেতা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। |
|
|
|
|
|