|
|
|
|
কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতি |
দলীয় দ্বন্দ্বে ‘ছুটি’তে তৃণমূলের সভাপতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁথি |
পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাদের ‘নিরঙ্কুশ প্রাধান্যের জেলা’ হিসাবে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরে শাসক তৃণমূল-শিবিরে ফাটল আরও এক বার সামনে এল। দলের একাংশ অনাস্থা আনতে পারে, এমন সম্ভাবনার মধ্যেই কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি অর্ধেন্দু পণ্ডা আচমকা এক মাস ছুটি নিলেন। সোমবার বিডিও নিশান্ত মুখোপাধ্যায়ের কাছে সভাপতির ছুটি-সংক্রান্ত চিঠিটি জমা পড়ে। চিঠিতে অর্ধেন্দুবাবু ‘অসুস্থতা’র কারণ দর্শালেও তৃণমূলের দলীয় সূত্রেরই খবর, অনাস্থার বিড়ম্বনা এড়াতেই সভাপতির এই পদক্ষেপ। বিডিও জানান, পঞ্চায়েত-আইন অনুসারে সভাপতির অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি সঞ্চিতা পাত্রই দায়িত্ব সামলাবেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রবীণ অর্ধেন্দুবাবুর সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, বেশ কয়েকজন কর্মাধ্যক্ষ এবং দলের ব্লক নেতৃত্বের বনিবনা হচ্ছিল না। ব্লক তৃণমূল সভাপতি সমরেশ দাস, সঞ্চিতাদেবী ও জনা সাতেক কর্মাধ্যক্ষ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ থেকে অর্ধেন্দুবাবুকে সরাতে দলের জেলা নেতৃত্বের কাছেও দরবার শুরু করেছিলেন। অনাস্থা এনে অর্ধেন্দুবাবুকে সরানোর ক্ষেত্রে সাহায্যের জন্য বিক্ষুব্ধরা কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন বলে খবর। কাঁথি-৩ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি রাজদুলাল নন্দ অবশ্য বলেন, “আমরা জানিয়ে দিয়েছিলাম, তৃণমূল যাঁকে নেতা বাছবে আমরা তাঁকেই সমর্থন করব। কিন্তু অনাস্থা আনলে তাতে বিরত থাকব।”
এ দিকে, সভাপতির পদ থেকে অর্ধেন্দুবাবু নিজে পদত্যাগে রাজি না-হওয়ায় সোমবারই অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় শুরু করেন বিক্ষুব্ধরা। সেই মতো তাঁরা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকেও তাঁদের মনোভাব জানিয়ে দেন। তাতেই প্রমাদ গোনেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিশেষত, কাঁথির মতো ‘গড়ে’ এই সঙ্কট পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা জুড়েই বিপন্নতা বাড়াবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয় শিশির ও শুভেন্দু অধিকারীর মতো জেলা তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতাদের ঘনিষ্ঠদেরও মধ্যেও। তড়িঘড়ি করে তাঁরাই অর্ধেন্দুবাবুকে ছুটিতে যাওয়ার পরামর্শ দেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। ‘দ্বন্দ্ব’ ধামাচাপা দেওয়ার সব চেষ্টাই করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে তাঁর বা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের ‘বিরোধ নেই’ বলে দাবি করেছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি সমরেশ দাসও। তিনি বলেন, “সভাপতির সঙ্গে মনোমালিন্য বা অনাস্থা আনার চেষ্টার খবর ঠিক নয়। অর্ধেন্দুবাবু অসুস্থ। পঞ্চায়েত সমিতির কাজকর্ম দেখতে পারেন না। বেশ কিছু প্রকল্পের রূপায়ণ করতে পারছিলেন না। ওঁর চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই ছুটি নিয়েছেন।” অর্ধেন্দুবাবু নিজে কিন্তু অন্য সুরই গাইছেন। তাঁর কথায়, “অসুস্থ ঠিকই, তবে আমার বিরুদ্ধে দলেরই একটা অংশ চক্রান্তে সামিল হয়েছে। দলে এমন সব লোকের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, যাদের নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি বা দল চালানোই অসম্ভবপর হয়ে দাঁড়িয়েছে।” ‘সমস্যা’ যে আছে তা মেনে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “অর্ধেন্দুবাবু এক মাসের ছুটি নিয়েছেন। এর মধ্যে আমরা আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করে ফেলব।” |
|
|
|
|
|