হুগলি জ্যোতিষচন্দ্র বিদ্যাপীঠ |
প্রতিষ্ঠা ১৯৫২। ছাত্র সংখ্যা ১২০০।
মোট শিক্ষক-শিক্ষিকা ২৬ জন।
শিক্ষাকর্মী ৫ জন। গ্রন্থাগারিক ১ জন। |
|
|
নন্দদুলাল বিশ্বাস
(প্রধান শিক্ষক) |
|
পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের প্রতি বিশেষ মনোযোগী বিদ্যালয়
|
বিপ্লাবাচার্য অধ্যাপক জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষের প্রতিষ্ঠিত (১৯৫২ সালে) এই বিদ্যালয়ের নাম ছিল ‘মাধ্যমিক শিক্ষায়তন’। জ্যোতিষচন্দ্রের মৃত্যুর পরবর্তী কালে তাঁর স্মৃতিতে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘হুগলি জ্যোতিষচন্দ্র বিদ্যাপীঠ’। মূলত, হুগলি-চুঁচুড়ার পিছিয়ে পড়া দরিদ্র ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য এই বিদ্যালয় গঠিত হয়েছিল। চুঁচুড়া রায়েরবেড় নিবাসী স্বর্গীয় গৌর গুপ্তর কালু রায় তলার বাগানের একটি ছোট্ট দ্বিতল বাসগৃহে বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন শুরুর মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষায়তনের জয়যাত্রা শুরু। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রীধর ভট্টাচার্যের দীর্ঘ সময়কালীন আত্মত্যাগ ও পরামর্শে এই বিদ্যালয় নানা দিকে সাফল্য লাভ করেছে। ২০০০ সালে বিদ্যালয়টি উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে এবং ২০০৪ সাল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভাগ্যাকাশে জ্যোতিষ্ক স্বরূপ আবির্ভূত হয়েছেন সমাজসেবী ও অধ্যাপক ধীরেন্দ্রনাথ সরখেল এবং শ্রীমতী চামেলি সরখেল। প্রধানশিক্ষকের প্রতি তাঁদের পুত্রসম স্নেহ বিদ্যালয়কে ধন্য করেছে এবং নানা সম্ভাবনায় সমৃদ্ধ করেছে। একসময়ে যখন বিধায়ক ও সাংসদদের আশীর্বাদ থেকে এই বিদ্যালয় বঞ্চিত হয়েছে, বিদ্যালয় ভবনের কলেবর বৃদ্ধির জন্য প্রধানশিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষক ও শিক্ষিকারা পরিচালন সমিতিকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায়-রাস্তায়, দরজায়-দরজায়, হাটে-বাজারে এবং ট্রেনের কামরায়-কামরায় মানুষের কাছে ভিক্ষে করেছেন, তখনই সরখেল দম্পত্তি তাঁদের আশীর্বাদে প্রধানশিক্ষক তথা বিদ্যালয়কে সমৃদ্ধ করেছেন। সারা বছর ধরে নানা রকম প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করে পড়ুয়ারা।
আগামী দিনে ছাত্রদের পড়াশোনার সুবিধার্থে একটি রিডিং রুম, কমন রুম এবং বড় কম্পিউটার ল্যাবরেটরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি ক্লাসের প্রতিটি বিষয়ের সকল প্রশ্নোত্তর শ্রেণি কক্ষেই দেখানো হয়। পিছিয়ে পড়া ছাত্রদের নিয়ে মাঝেমধ্যেই বিশেষ সান্ধ্যকালীন ক্লাস হয়। যে সব অভিভাবক-অভিভাবকদের সাক্ষর জ্ঞান নেই, তাদের সাক্ষরতা অর্জনে সান্ধ্যকালীন পড়াশোনাও হয়। দুঃস্থ ছাত্রদের সাহায্যার্থে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীরা নিজেদের উপার্জিত অর্থ থেকে একটি তহবিল গড়ে নানা ভাবে তাদের সাহায্য করে চলেছেন।
|
আমার চোখে
বিদ্যুৎ অধিকারী
(ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট বয়) |
|
|
পঞ্চম শ্রেণিতে এখানে ভর্তি হয়েই কিছু ব্যাপার ভাল লেগে যায়। শৃঙ্খলারক্ষা ও পড়াশোনায় যথাযথ খেয়াল রাখা হয় এখানে।
নবম ও দশম শ্রেণিতে ভাল ভাবে পড়ানোর জন্য আলাদা ভাবে ১০টা থেকে ‘০’ পিরিয়ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের স্কুলে অনেক দরিদ্র্য ছাত্রও আছে। বিদ্যালয় থেকে তাদের খাতা, বইয়ের ব্যবস্থা করা হয়। আমাকেও এই বিদ্যালয় পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করেছে। পরীক্ষার আগে আলাদা ভাবে ‘নাইট ক্লাস’ করানো হয়।
পরীক্ষায় ভাল ফল করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় থেকে আমি অনেক সাহায্য পেয়েছি। আমার কোনও বইয়ের প্রয়োজন হলে তা স্কুলের লাইব্রেরি থেকে পেয়েছি। লেখাপড়ায় কোনও রকম অসুবিধা হলে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সর্বদাই সাহায্য করেছেন। কোনও পড়া বুঝতে অসুবিধা হলে বা কোনও অঙ্ক না পারলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যথাসাধ্য দেখিয়ে দেন। |