|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
সংস্কার কবে |
রুদ্ধ নিকাশি |
দেবাশিস দাস |
জল এখানে দাঁড়িয়ে থাকে বারো মাসই। নিকাশির পথ না থাকায় চড়া রোদেও এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে। আর ভারি বর্ষণ হলে তো কথাই নেই, জল বার করার জন্য কোদাল দিয়ে রাস্তা কাটতে হয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এমনই অবস্থা সোনারপুর গ্রামীণ এলাকার বনহুগলি দুই পঞ্চায়েত এবং সংলগ্ন এলাকার।
বনহুগলি দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত সোনারপুর গ্রামীণ এলাকার প্রান্তিক অঞ্চল। নেপালগঞ্জ থেকে টালিগঞ্জের কুঁদঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত কেওড়াপুকুর খালের উপরেই এই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নির্ভরশীল। বাসিন্দারা জানান, এই খালই সোনারপুর আর বিষ্ণুপুর গ্রামীণ এলাকাকে ভাগ করেছে। বনহুগলি এলাকার মধ্য দিয়ে ছুমড়োর ঘাট থেকে কুলবিল এবং কুলবিল থেকে ডাঙা পর্যন্ত বিস্তৃত দু’টি সংযোগকারী খাল এই কেওড়াপুকুর খালে মিশেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন এই সব খালের সংস্কার না হওয়ায় এলাকার জমা জল বেরনোর কোনও পথ নেই। ফলে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সারা বছরই জল জমে থাকে এবং দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া, জমা জলের সমস্যার জন্য এলাকায় মশা, মাছির উপদ্রব এবং জলবাহিত রোগের সমস্যা সারা বছর লেগে থাকে বলে অভিযোগ। |
|
বনহুগলি দুই, বুড়িয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ডাঙা, জয়কৃষ্ণপুর, বলরামপুর, নাড়ুপাড়া, পশ্চিমপাড়া, নোনা, বাকেশ্বর রোড সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, টালিগঞ্জের কুঁদঘাটের কাছে কেওড়াপুকুর খালের মুখ দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ হয়ে আছে। প্রধান খাল থেকে জল না বেরোতে পারায় প্রতি বর্ষায় জলবন্দি হয়ে থাকাটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই কৃষিজীবী। তাই উন্নতমানের কোনও নিকাশি ব্যবস্থা আজও তৈরি না হওয়ায় প্রতি মরসুমে চাষেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এলাকারই বাসিন্দা বাপি মণ্ডলের কথায়: “কলকাতার খুব কাছে হলেও আমাদের এলাকায় উন্নয়নের কাজ কম হয়েছে।”
বনহুগলি দু’নম্বর পঞ্চায়েত এবং সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেল অঞ্চলের সংযোগকারী খাল দু’টি একটি সরু নর্দমার আকার নিয়েছে। আর মূল নিকাশির পথ কেওড়াপুকুর খালের পথও আবর্জনা ও পানায় রুদ্ধ। দীর্ঘ দিন এই নিকাশি পথের কোনও সংস্কার হয়নি। পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের প্রভাসচন্দ্র খেলুয়া বলেন, “সংলগ্ন সমস্ত এলাকার জমা জল এই পঞ্চায়েত এলাকার উপর দিয়ে যায়। তাই এলাকার মূল নিকাশি পথগুলি সংস্কার না হলে এই সমস্যার সুরাহা হওয়া কঠিন।”
এলাকাবাসীরা জানান, বনহুগলি দু’নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে যে দু’টি সংযোগকারী খাল রয়েছে সেগুলি উত্তর সোনারপুর এলাকার মধ্যে পড়ছে। আর মূল নিকাশির পথ কেওড়াপুকুর খালটি বিষ্ণুপুর এলাকার আওতায়। তাই দুই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছেও এই নিকাশি পথগুলি সংস্কারের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। |
|
সোনারপুর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, “বনহুগলি এলাকার খাল সংস্কার নিয়ে সেচমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে সময় লাগবে।”
বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের দিলীপ মণ্ডল বলেন, “কুঁদঘাটে খাল থেকে আবর্জনা তোলার কাজ শুরু হয়েছে। আর্থিক সঙ্কটের জন্য কেওড়াপুকুর খালের কাজ খুব ধীর গতিতে চলছে।”
রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন এবং সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা করব।
সব জায়গায় খাল সংস্কার হচ্ছে, ওই এলাকাতেও হবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|