দেড় বছর ধরে ‘অনিয়মিত’ বেতন, বিক্ষোভ কারখানায়
হাতে নেই পরিচয় পত্র বা নিয়োগ পত্র। দেড় বছর ধরে বেতন মিলছে অনিয়মিতভাবে। অতিরিক্ত সময় কাজ করিয়ে নেওয়া হলেও তার মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে বেতন বাড়ছে না। এমনই কিছু অভিযোগে বুধবার দুর্গাপুরের সগড়ভাঙ্গার গোপীনাথপুর মৌজায় একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার ব্যাপক বিক্ষোভ দেখালেন প্রায় এক হাজার শ্রমিক। ঘন্টা দুয়েক পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কারখানায় শ্রমিকের সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি। তাঁদের মধ্যে এ দিন বিক্ষোভে যোগ দেন হাজার খানেক শ্রমিক। কারখানার উৎপাদন বন্ধ না করেই বিক্ষোভে সামিল হন তাঁরা। তবে কর্তৃপক্ষ তাঁদের দাবি পূরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। শ্রমিকদের পক্ষে ফারুক আহমেদের অভিযোগ, বছর আটেক আগে কারখানাটি চালু হয়।
—নিজস্ব চিত্র।
শুরু থেকেই শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় ন্যূনতম মাথাব্যাথা নেই কারখানা কর্তৃপক্ষের। তিনি বলেন, “দেড় বছর ধরে অনিয়মিত বেতন পাচ্ছেন শ্রমিকেরা। সব সময় দুই মাসের বেতন আটকে রাখছেন কর্তৃপক্ষ। অত্যন্ত আর্থিক কষ্টে দিন কাটছে এখানকার ১৫৬৪ জন শ্রমিকের।” তাঁর কথায়, “আগে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হত প্রতি মাসের ১০ তারিখে। ক্রমশ তা পিছিয়ে মাসের ২০ বা ২১ তারিখ করা হয়েছে। শেষ দেড় বছর ধরে তাও অনিয়মিত। কারখানায় উৎপাদন যাতে বন্ধ না হয়, তা মাথায় রেখে পেটে খিদে নিয়েও নিয়মিত কারখানায় এসে কাজ করছেন শ্রমিকেরা।”
কারখানার শ্রমিকদের দাবি, এপ্রিল মাসের বেতন এখনও পাননি তাঁরা। প্রথমে চলতি মাসের ২৩ তারিখ, শনিবার তা দেওয়ার কথা বলা হয়। শনিবার তাঁরা দেখেন, নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে, বেতন মিলবে ২৬ জুন। কিন্তু এখনও তা হয়নি। কবে বেতন মিলবে, তওা নির্দিষ্ট করে জানাচ্ছেন না কতৃর্পক্ষ। কারখানার শ্রমিক সঞ্জীব দত্ত, বারিদবরণ চৌধুরী, সুব্রত দে’রা জানান, শ্রমিকদের মধ্যে কেউ কেউ ২ হাজার টাকাও বেতন পান। সেটুকুও নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের আরও অভিযোগ, কারখানায় কিছু বিভাগে ৮ ঘন্টার জায়গায় ১০-১২ ঘন্টা কাজ করতে হয়। সেজন্য অতিরিক্ত কোনও পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। তাঁদের কথায়, “এপ্রিল মাসের মাইনে এখনও না মেলায় সংসার চলছে না। দোকানে ধার বাড়ছে। পাওনাদার বাড়িতে আসছে। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অথচ কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই।” এ ছাড়াও পিএফ ও ইএসআই নিয়েও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে তাঁদের। শ্রমিক নেতা ফারুক আহমেদ বলেন, “কর্তৃপক্ষকে এ দিন ফের সব জানানো হয়েছে। এর পরেও কাজ না হলে আমাদের অন্যভাবে বিষয়টি ভাবতে হবে।”
কারখানা কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, দেড় বছর নয়, শেষ সাত-আট মাস শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে। কারখানার এজিএম (পার্সোনেল) সৌরীন্দ্র মজুমদার বলেন, “সংস্থার কিছু আর্থিক সমস্যার কারণে শেষ সাত-আট মাস শ্রমিকরা নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পাচ্ছেন না। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে শ্রমিক বিক্ষোভের কথা জানানো হবে। তবে পিএফ বা ইএসআই নিয়ে শ্রমিকদের অভিযোগ ঠিক নয়।” সৌরীন্দ্রবাবুর আরও দাবি, কারখানায় ৮ ঘন্টার বেশি কোনও শ্রমিককে খাটানো হয় না। এ ব্যাপারে ফারুক আহমেদ বলেন, “কর্তৃপক্ষ দোষ মানতে চাইছেন না, সেটা দুর্ভাগ্যের।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.