স্কুল-ছুট বেড়েছে
প্রচারে প্রশাসন, শিবির উত্তর দিনাজপুরে
নানাবিধ প্রচার, সচেতনতা সত্ত্বেও উত্তর দিনাজপুরে স্কুল ছুটের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের তরফে করা এক বিষয়টি জানা গিয়েছে। তার পরেই রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় অতিরিক্ত জেলাশাসকের নেতৃত্বে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে জেলার বিভিন্ন ব্লকে স্কুলছুট পড়ুয়াদের ফের স্কুলে ভর্তি করতে উদ্যোগী হয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। ওই বৈঠকে জেলা শিক্ষা দফতর ও সর্বশিক্ষা দফতরের কর্তারা হাজির ছিলেন। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করবে। টানা একমাস ওই শিবির করার পর মোট কত স্কুলছুট পড়ুয়াকে স্কুলে ভর্তি করা সম্ভব হল সেই বিষয়ে আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ জেলা শিক্ষা দফতরের তরফে জেলাশাসকের কাছে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।” জেলাশাসক সোনম ওয়াংডি ভুটিয়া বলেন, “আর্থিক, সামাজিক ও সচেতনতার অভাবে প্রতিবছর জেলায় প্রাথমিক স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে! স্কুলছুটদের ফের স্কুলে ভর্তি করানোর লক্ষ্যেই জেলাজুড়ে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে! স্কুলছুট পড়ুয়া ও অভিভাবকদের আমরা এই বিষয়ে সচেতন করব।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মোট প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ১ হাজার ৪৯৫ টি। মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ২ লক্ষ ৬৪ হাজার। সম্প্রতি জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা সমীক্ষা চালিয়ে জানতে পারেন, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে জেলায় মোট প্রাথমিক স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ হাজার। প্রতি বছর মোট পড়ুয়ার প্রায় ১০ শতাংশ স্কুলছুট হয়ে পড়ছে। জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা সমীক্ষা চালিয়ে জানতে পেরেছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে না পাঠিয়ে জমিতে চাষবাসের কাজে নিয়োগ করেছেন। এ ছাড়াও অভাবের সংসারের হাল ধরতে বহু অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের দিনমজুরির কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেছেন। অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে বহু পড়ুয়া দিনভর খেলাধূলায় ব্যস্ত থাকায় স্কুলছুট হয়ে পড়েছে বলেও সমীক্ষায় উঠে এসেছে। শুধু তাই নয়, বাবা, মা দুজনেই দিনমজুরির কাজে ব্যস্ত থাকায় বাড়িতে ২ থেকে ৫ বছর বয়সী ভাই ও বোনকে দেখাশুনা করতে অনেক পড়ুয়া স্কুলছুট হয়ে পড়েছে। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শেখর রায় বলেন, “আমরা অভিভাবকদের তাঁদের স্কুলছুট ছেলেমেয়েদের ফের স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য সচেতন করব। বিপিএল তালিকা ভুক্ত যে সমস্ত পরিবারের পড়ুয়ারা স্কুল ছুট হয়ে পড়েছে, সে সব পরিবার যাতে সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা পায়, সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হওয়ারও অনুরোধ করা হবে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “সরকারি উদ্যোগে সমস্ত প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাবার দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের বিনে পয়সায় পাঠ্যবই ও পোষাকও দেওয়া হচ্ছে। অনেক অভিভাবক এসব সরকারি উদ্যোগের কথা জানতে পারছেন না। সে কারণেই তাঁরা ছেলে মেয়েদের স্কুলে না-পাঠিয়ে অন্য কোনও কাজে নিয়োগ করছেন। সচেতনতা শিবিরে আমরা অভিভাবকদের প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সচেতন করব।” তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষার অধিকার ও শিশু শ্রম আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের কম কোনও বালক বালিকাকে দিনমজুরির কাজে নিয়োগ করা আইনবিরোধী! এই আইনে অভিযুক্ত অভিভাবকদের দোষ প্রমাণিত হলে তাদের সশ্রম কারাদন্ড হতে পারে। সচেতনতা শিবিরে এই বিষয়েও অভিভাবকদের সতর্ক করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.