রাজ্যের সমস্ত স্কুল ও মাদ্রাসায় ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত ৪০:১ করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ প্রতি ৪০ জন পড়ুয়া পিছু এক জন করে শিক্ষক বা শিক্ষিকা থাকবেন। এই নির্দেশ রাজ্যের সমস্ত স্কুল ও মাদ্রাসাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার বর্ধমানের টাউন হলে মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সমিতির ত্রিবার্ষিক জেলা সম্মেলনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল এ কথা জানানোর পরেই তা নিয়ে সরব হলেন মাদ্রাসার শিক্ষকেরা। তাঁদের দাবি, এই অনুপাতে শিক্ষক পাওয়া তো দূর, সরকারি ঘোষণার কথাই তাঁরা জানতেন না।
বর্ধমান হাই মাদ্রাসার শিক্ষক তথা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী জেলা কমিটির সম্পাদক ফিরোজ আহমেদের অভিযোগ, “প্রতি ৪০ ছাত্র পিছু এক জন করে শিক্ষক রাখার কথা কাগজে পড়েছি। কিন্তু সেই সুফল আমাদের মাদ্রাসা পায়নি। শূন্যপদ পূরণ করাও হয়নি।” মোসলেমাবাদ হাই মাদ্রাসার শিক্ষক শেখ আসিফ ইকবালের দাবি, “ছাত্র সংখ্যার তুলনায় শিক্ষক অনেক কম। ৬০-৭০ জন ছাত্র পিছু এক জন করে শিক্ষক রয়েছেন।” কদমপুকুর সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক শেখ জামালউদ্দিনের কথায়, “আমাদের মাদ্রাসায় ৯৫০ জন ছাত্রকে পড়া মাত্র ১৭ জন শিক্ষক। এই অনুপাতের কথা শুনে আমি বিস্মিত।” তবে কুলগোড়িয়া গার্লস হাই মাদ্রাসার শিক্ষিকা লুৎফা বেগম দাবি করেন, তাঁদের মাদ্রাসায় ৭০০ জন ছাত্রী পিছু ২৮ জন শিক্ষিকা রয়েছেন। তবে এই অনুপাতের কথা তাঁরও জানা ছিল না।” |
সভায় অনুষ্ঠানের সভাপতি তথা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আব্দুল গনি স্বীকার করেন, অধিকাংশ মাদ্রাসায় ৪০ জন ছাত্র পিছু এক জন করে শিক্ষক নেই। পরিস্থিতির কথা মেনে নিয়েছেন চিত্তরঞ্জনবাবুও। তবে তাঁর দাবি, “শিক্ষকদের শূন্যপদ পূরণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে এক সঙ্গে ৮৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। তবে কোনও কোনও স্কুলে এই অনুপাতের চেয়ে বেশি সংখ্যায় শিক্ষক রয়েছেন। অথচ মাদ্রাসাগুলিতে তুলনায় কম শিক্ষক রয়েছেন। এই অসামঞ্জস্য কাটানোর চেষ্টা করা হবে।” তাঁর আশ্বাস, “সরকারি নির্দেশ এখনও কেন এই জেলায় পৌঁছায়নি তা মাদ্রাসা বোর্ডের সভাপতির কাছে জানতে চাইব।” সভায় উপস্থিত ছিলেন কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য শিক্ষা দফতরের উপ-অধিকর্তা দিব্যগোপাল ঘটক প্রমুখ। এ দিন রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “বর্ধমানে ছাত্রীদের জন্য একটি পলিটেনিক কলেজ খোলা হবে। তাতে বেশির ভাগ আসনই সংরক্ষিত হবে সংখ্যালঘুদের জন্য।” |