উৎসব
ইচ্ছে রথ
কোনও স্বপ্নাদেশ নয়। নিজের খেয়ালে গঙ্গায় ভেসে যাওয়া কিছু কাঠ থেকে নিজের হাতে রথ তৈরি করেন বেলুড়ের বাসিন্দা প্রয়াত পঞ্চানন দাস। তখন ১৩৬১ সাল। সে বছরই সে রথ নিয়ে শুরু হয় রথযাত্রা উৎসব। এ বার তা ৫৮ বছরে পা দিল।
বেলুড় রামলোচন সায়র স্ট্রিটের বাসিন্দা পঞ্চাননবাবুর বড় ছেলে গোপাল দাস জানান, তাঁর বাবা ঘুসুড়ির একটি লঞ্চ সারানোর কারখানার প্রধান মিস্ত্রি ছিলেন। এক দিন জোয়ারের সময় লঞ্চ মেরামত করতে গিয়ে তিনি দেখেন গঙ্গা দিয়ে কিছু সেগুন কাঠ এক সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় ভেসে যাচ্ছে। পঞ্চাননবাবু সেই কাঠগুলি জল থেকে তুলে তাঁদের আদি বাড়ি বেলুড় ঠাকুরণ পুকুর এলাকায় নিয়ে আসেন। এর পরে সেই কাঠ দিয়ে রথ তৈরি করবেন বলে স্থির করেন। রথ তৈরির পরে পুরী থেকে নিম কাঠের জগন্নাথ, সুভদ্রা এবং বলরাম কিনে আনেন।
বাড়িতেই তৈরি হয় জগন্নাথদেবের মন্দির। এখনও প্রতি দিন নিত্য পুজো হয়। রথ যাত্রার আগের দিন অধিবাস। সে দিন পরিবারের কর্তা নির্জলা উপবাস থেকে রাতে একটি করে বিগ্রহ নিয়ে রথে বসান। কিছুটা রথ টানার পরে বিগ্রহ ফের মন্দিরে ফিরে আসে। রথের দিন সকালে মঙ্গলারতি দিয়ে পুজো শুরু হয়। খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, আলুর দম, চাটনি, পায়েস ও অমৃতি ভোগে দেওয়া হয়। পরিবারের আর এক সদস্য নদেরচাঁদ দাস জানান, বিকেলে শোভাযাত্রা-সহ বেলুড় বাজার হয়ে ঘুসুড়ি ঘুরে ঠাকুরাণ পুকুরে তপন দাসের বাড়িতে (মাসির বাড়ি) গিয়ে ওঠেন জগন্নাথ। সেখানেও চলে সাত দিন ধরে পুজো। উল্টোরথের দিন ফের একই পথে ফিরে আসে। সে দিন দেওয়া হয় লুচি ভোগ।
ছবি: রণজিৎ নন্দী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.