সঙ্গীত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি বিষ্ণুপুরে
তিহ্যবাহী বিষ্ণুপুরের রামশরণ কলেজ অব মিউজিক-কে সঙ্গীত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুললেন ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে তাঁরা কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে এ ব্যাপারে স্মারকলিপি দেন। তাঁদের এই দাবি সমর্থন করেছেন কলেজের শিক্ষক থেকে কর্মীরাও।
১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রাচীন সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি আগেও উঠেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকার এই কলেজের দায়িত্ব নেয়নি। বিষ্ণুপুর পুরসভাই কলেজটির দায়িত্বে রয়েছে। কলেজের ছাত্রছাত্রীদের তরফে দেবাশিস ষন্নিগ্রহী, আলো ঘোষ, তন্ময় গঙ্গোপাধ্যায়, অপূর্ব শতপথীরা বলেন, “বিষ্ণুপুর সঙ্গীত ঘরানার খ্যাতি প্রায় বিশ্ব জুড়ে। এই শহরে জন্মেছেন যদুভট্ট, গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিন্ধ্যবাসিনী দেবীর মতো কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পীরা। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যদুভট্টের কাছে গান শিখেছিলেন। বিষ্ণুপুর ঘরানার কাছে নিজের ঋণের কথা স্বীকার করেছেন আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। আমরা সেই ঐতিহ্যবাহী কলেজের ছাত্রছাত্রী হিসাবে গর্ববোধ করি। আমরা চাই এই কলেজকে সঙ্গীত বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়া হোক।” অধ্যক্ষকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য তাঁরা আর্জি জানান।
ছবি: শুভ্র মিত্র।
তাঁরা পাশে পেয়েছেন কলেজের শিক্ষক সেবক চট্টোপাধ্যায়, রাসবিহারী শর্মা, শিক্ষাকর্মী অতনু দাস, টিঙ্কুপ্রসাদ করদের। তাঁদেরও দাবি, “দেশের ঐতিহ্যবাহী এই কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলেজের সাঙ্গীতিক অনুষ্ঠানে এসেছেন বিধানচন্দ্র রায়, হুমায়ূন কবীর, পদ্মজা নাইডু, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তুলসী লাহিড়ীর মতো বিশিষ্ট জনেরা। এই কলেজ বিষ্ণুপুর সঙ্গীত ঘরানার ধারাবাহিকতা বহন করে চলেছে এখনও। তাহলে এখানে সঙ্গীত বিশ্ব বিদ্যালয়ের দাবি অযৌক্তিক কী?”
সঙ্গীতমহলের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করেন, এটি দেশের প্রাচীনতম সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়। কলেজের ছাত্র-শিক্ষকদেরও সেটাই দাবি। ইতিহাসবিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, “বিভিন্ন তথ্য ও রেকর্ড থেকে আমরা জানি বিষ্ণুপুরের কলেজটিই ভারতের সঙ্গীতের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাচীন। এরপরেই তৈরি হয় লাহৌরের গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয় ১৯০১ সালে। পরে ১৯০৮ সালে সেটি স্থানান্তরিত হয় মুম্বইয়ে। তারপর লখনউয়ে গড়ে ওঠে মরিন্স কলেজ অব হিন্দুস্থান মিউজিক। আচার্য সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় ‘মর্ডান রিভিউ’ পত্রিকায় এই কলেজ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনে বিষ্ণুপুর রামশরণ কলেজ অব মিউজিককে ভারতের সর্বাধিক প্রাচীন কলেজের স্বীকৃতি দিয়েছেন।” চিত্তরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, রাজ্যের বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী শম্ভু ঘোষকে এই কলেজটিকে ঘিরে একটি সাঙ্গীতিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “এই দাবি আগেও উঠেছে। বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা আবারও সেই দাবি তুলেছেন। কলেজের দায়িত্বে থাকা বিষ্ণুপুর পুরকর্তৃপক্ষকে তাঁদের দাবির কথা জানিয়েছি।” বিষ্ণুপুরের উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গ সংস্কৃতির কদর বোঝেন। তাঁকে ছাত্রছাত্রীদের দাবির কথা জানানো হয়েছে। আশা করছি সঙ্গীত বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা এই কলেজ পাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.