দেহ মিলল জঙ্গলে
মেলেনি বুধরামের দাঁত
বৃষ্টির কারণে কয়েক ঘণ্টা বন কর্মীদের চোখের আড়ালে ছিল সে। তার পরেই অসুস্থ ‘বুধরামে’র দেহ মিলল জঙ্গলে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বুধরামের দেহ মেলে। দেখা যায়, তার দাঁতের অনেকটা অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনার পিছনে চোরাশিকারিদের হাত রয়েছে বলে সন্দেহ বন দফতরের। জলপাইগুড়ির ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “বৃষ্টির জন্য রাত একটা থেকে দাঁতালটি কয়েক ঘণ্টার জন্য চোখের আড়ালে ছিল। সকালে মেলে দেহটি। তার দাঁত কুড়ুল জাতীয় কিছু দিয়ে কাটা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। খাবারে বিষ মিশিয়ে তাকে মারা হয়ে থাকতে পারে। দেহরস ও দেহাংশ ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে।” বন দফতর সূত্রে খবর, মার্চে খুট্টিমারির জঙ্গলে হাতিটিকে দেখা যায়। বাঁ পা খুঁড়িয়ে চলতে থাকা হাতির চিকিৎসা করাতে উদ্যোগী হন তৎককালীন ডিএফও কল্যাণ দাস। তিনি নজরদারির বন্দোবস্ত করান। বাসিন্দারা হাতিকে বুধরাম বলে ডাকতেন।
ছবি: রাজকুমার মোদক।
দাঁতের লোভে অসুস্থ হাতিটিকে বিষ মিশিয়ে মারা হতে পারে চিন্তায় কল্যাণবাবুর বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করান। শুধু তাই নয়, দাঁতের লোভে চোরাশিকারির আনাগোনা বাড়তে পারে ভেবে অসম থেকে আসা বিশেজ্ঞরা হাতিটিকে অজ্ঞান করে চিকিৎসার সময়ে দাঁতের কিছুটা অংশ কেটেও দেন। সম্প্রতি কল্যাণবাবু বদলি হয়ে চলে যান। তার জায়গায় দায়িত্ব পান বিদ্যুৎবাবু। গত সোমবার জঙ্গলের গণ্ডি ছেড়ে বুধরাম নদী পেরিয়ে এক কিলোমিটার গ্রামে ঢুকে ধান,ভুট্টা খেয়ে আসার ঘটনার পর সে সুস্থ হয়ে উঠছে বলে আশা প্রকাশ করেন চিকিসৎকেরা। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে গুয়াহাটি পশু চিকিৎসা কলেজের সার্জন কুশল শর্মা বলেন, “বিষ খাইয়ে হাতিটিকে মেরে দাঁত কেটে নেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ হচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেছিলাম। তবু ওকে বাঁচানো গেল না।” বনকর্মীরা জানান, বুধবার বুধরামকে বনে ঘুরে খাওয়া দাওয়া করতে দেখে যথেষ্ট সন্তুষ্ট ছিলেন ডি এফ ও বিদ্যুৎবাবু। রাত দেড়টা পর্যন্ত গোসাঁইহাট বিটের কয়েকজন বনকর্মী হাতিটিকে নজরে রাখেন। বৃষ্টি নামতে বনকর্মীরা ঘরে ফিরে যান। হাতি বিশেষজ্ঞ ধৃতিকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী বলেন, “দাঁতালটি শিকারিদের টার্গেটে ছিল বলে মনে হচ্ছে। এর আগে কুড়ুল দিয়ে একটি দাঁতালের দাঁত কাটার ঘটনা ঘটে দক্ষিণবঙ্গে। তার পরে সে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। তবে বুধরামের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তদন্ত হলে সত্য উঘাটন হবে।” ন্যাফ-এর মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “পায়ের যন্ত্রণা নিয়ে হাতিটি সামান্য জায়গায় ঘোরাফেরা করছিল। সেটি সুস্থ হয়ে উঠবে ভেবেছিলাম। কী ভাবে মারা হল, শিকারিদের কাজ কি না তদন্ত দরকার। দাঁত কোথায় গেল তা বার করা জরুরি।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, বনকর্মীদের একাংশের গাফিলতিতেই হাতিটিকে প্রাণ হারাতে হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.