কোচবিহারে সংগঠন ঢেলে সাজার পাশাপাশি পৃথক রাজ্যের দাবিদার বিভিন্ন গোষ্ঠীকে উৎসাহ দিতে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও) প্রধান জীবন সিংহ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বলে সন্দেহ করছে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর। সম্প্রতি রাজ্য গোয়েন্দা দফতর থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। তার পরেই কেএলও’র গতিবিধি নিয়ে বাড়তি খোঁজখবর শুরু করেছেন পুলিশ কর্তারা
পুলিশ সূত্রের খবর, কেএলও প্রধান পার্শ্ববর্তী রাজ্য অসমে আত্মগোপন করে থাকার ব্যাপারে অসম সিআইডি-র কর্তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এর পরেই অসম লাগোয়া কোচবিহারে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “বিভিন্ন মহল থেকে আমাদের কাছে সতর্কবার্তা আসে। সেই মত খোঁজখবর নিয়ে কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হয়। তা ছাড়া কেএলও’র অস্তিত্ব তো শেষ হয়ে যায়নি। এতে সতর্কতা রয়েছেই।”
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাজ্য গোয়েন্দা দফতর থেকে সম্প্রতি পাঠানো সতর্কবার্তায় কেএলও-র সাম্প্রতিক কাজকর্ম সম্পর্কে কিছু তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ কোচবিহারে পৃথক রাজ্যের দাবিদার বিভিন্ন গোষ্ঠীকে উৎসাহ দিতে চাইচেন বলেও সন্দেহ করা হয়েছে। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতেই ওই কৌশল নিতে চাইছেন কেএলও প্রধান। নতুন যুবকদের সংগঠনে সামিল করে সংগঠন চাঙ্গা করা ছাড়াও কেএলও প্রধান বাইরে থেকে ওই চাপ তৈরি করতে চান। অন্যদিকে কোচবিহারে পৃথক রাজ্যের দাবিদার বিভিন্ন গোষ্ঠীর গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার করা গেলে চাপে পড়বে সরকার।
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, নেপাল ও নিম্ন অসম থেকে সংগঠনের জন্য নতুন যুবকদের এনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে কেএলও চেষ্টা শুরু করেছে। ওই গোয়েন্দা রিপোর্টে পৃথক রাজ্যের দাবিদারদের উৎসাহ যোগাতে কেএলও প্রধান তার এক প্রাক্তন সহকর্মীকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ঘনিষ্ঠ মহলে কেএলও প্রধান তার অনুগামিদের সরকারের কোনও ‘ফাঁদে’ পা না দেওয়ার জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কেএলও প্রধান জীবন সিংহ আত্মসমর্পণ করার ব্যাপারে আলোচনায় আগ্রহী বলে আগে তাঁর সহকর্মীদের অনেকেই দাবি করেছিলেন। কিন্তু রিপোর্টের জেরে আলোচনার আগ্রহ কতটা ‘আন্তরিক’ তা নিয়েও গোয়েন্দা মহলে পযার্লোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে অসমের কৃষি বিভাগের সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার গদামণি পাঠকের খুন এবং সহকারি ইঞ্জিনিয়ার ফইজুর রহমানের অপহরণের ঘটনার তদন্তে উঠে আসা তথ্য অসমের সিআইডি কর্তাদের ভাবনা বাড়িয়েছে। সিআইডি কর্তারা জেনেছেন, প্রতিটি ঘটনার পিছনে কেএলও ছাড়াও কেএলও প্রধান অসমেই আত্মগোপন করে আছেন। অসম লাগোয়া কোচবিহারে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অসমে যাতায়াতকারী সমস্ত যানবাহনে নজরদারি চলছে। |