ঝাড়খণ্ডে রাজ্যসভা নির্বাচনের সাম্প্রতিক সাফল্য ধরে রাখতে পারল না কংগ্রেস। নিজেদেরই জেতা আসনের উপনির্বাচনে কংগ্রেস ‘চতুর্থ’ স্থানে থেকে দৌড় শেষ করল। তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। লড়াই হল বাবুলাল মরাণ্ডির ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার প্রার্থীর সঙ্গে রাজ্যের জোট সরকারের
অন্যতম শরিক, অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (আজসু) প্রার্থীর। জিতলেন আজসু প্রার্থী নবীন জয়সোয়াল। নবীন ১১ হাজার ৫৫৮ ভোটে হারালেন জেভিএমের অজয়নাথ সহদেওকে।
এ বার হাটিয়া উপনির্বাচনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, রাজ্যের শাসকগোষ্ঠীর প্রধান, বিজেপি এবং প্রধান বিরোধী দল, কংগ্রেস, দু’দলের দিক থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন নির্বাচক মণ্ডলীর সিংহভাগ। বহুমুখী লড়াইয়ে কংগ্রেস এবং বিজেপিকে বেশ কয়েক কদম পিছে ফেলে ২৯ হাজার ৭৭৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার প্রার্থী অজয়নাথ সহদেও। উপনির্বাচনে ২৬ হাজার ১৮৬টি ভোট পেয়ে তৃতীয় বিজেপি প্রার্থী রামজীলাল সারদা। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই সারদা-ই কংগ্রেসের গোপাল সারণের কাছে মাত্র ২৫ ভোটে হেরেছিলেন। কংগ্রেস প্রার্থী সুনীল সহায় (কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুবোধকান্ত সহায়ের ভাই) ২১ হাজার ৪৭৬ ভোট পেয়ে নেমে গিয়েছেন চতুর্থ স্থানে। এ ছাড়াও ভোটের লড়াইয়ে ছিলেন আরও ২৫ জন প্রার্থী। |
গত রাজ্যসভা নির্বাচনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে আজসুকে সঙ্গী করে ভোট বৈতরণী পার হয়েছিল শিবু সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। তারই প্রতিদানে জেএমএমের মদতে আজসু হাটিয়ায় লড়তে নামে। এবং সেখানে সরকারের জোটের মধ্যে জোট গড়ে আজসু-জেএমএম পর্যুদস্ত করল বিজেপি-কে।
অন্য দিকে, ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে নির্বাচনী আঁতাত ছিল কংগ্রেসের। গত রাজ্যসভার নির্বাচনকে ঘিরে দুই দলের মধ্যে অনৈক্য তৈরি হয়। জেভিএমের সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাত ভেঙে যাওয়াই এ বার কংগ্রেসের ভরাডুবির প্রধান কারণ বলে মনে করছে দলের একাংশ। রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র শৈলেশ সিংহ কোনও রকম রাখ ঢাক না-করেই বলেন, “বিগত দিনের ভোট-সঙ্গীকে ত্যাগ করে কংগ্রেসের নির্বাচনী লড়াই হাটিয়ার জনগণ মেনে নেয়নি। এ থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে পা ফেলতে হবে।” রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বও মনে করছেন, শরিকি অনৈক্যই দলের ভরাডুবির প্রধান কারণ।
উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী, জেভিএম-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ যাদব বলেন, “জনতা আমাদের সঙ্গ দিয়েছেন। কিন্তু শেষ বিচারে টাকার কাছে আমাদের পরাজয় ঘটল।” জেভিএমের ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আজসু-র প্রধান তথা রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাত বলেন, ‘‘হেরে গেলে অনেকেই ওই রকম কথা বলেন। ও সব কথার কোনও অর্থ হয় না। শুধু মুখের কথায় নয়, আসলে জনগণ আমাদের সমর্থন করেছেন উন্নয়নমূলক কাজ দেখে। এই জয় জোট সরকারেরই।” |