হবু কনে গুলশন আরা দিনভর নিখোঁজ বলে জানিয়েছে পুলিশ। সন্ধ্যায় নাদিয়াল থানা এলাকায় ১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে মেয়ের বাড়িতে গেলে পরিবারের কারও দেখা মেলেনি।
পুলিশ জানায়, মৃতদেহের গলার দু’ধারে ৮ ইঞ্চি গভীর ক্ষত। ধারালো অস্ত্রের কোপে দেহ থেকে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাওড়া, গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা বলেন, “খুনের তদন্ত চলছে। এই খুনের পিছনে ওই যুবকের বিয়ে-সংক্রান্ত কোনও সমস্যা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দু’টি পরিবারের লোক জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।” পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ন্যানো গাড়ি থেকে গুলামের দেহ ফেলার সময়ে তাতে একজন তরুণীও ছিলেন বলে সূত্র মিলেছে। ওই গাড়িটি এক মহিলার নামে বলেও পুলিশ জেনেছে।
গুলামদের বাড়ি শিবপুরের পিএম বস্তি ফোর্থ লেনে। পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ। তাঁর বাবা আবুল হাসান ঊর্দু কবি। কবি সম্মেলনে যোগ দিতে নিয়মিত পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও যেতে হয় তাঁকে। |
বাড়ির মেজ ছেলে গুলামের বিয়ে ঠিক হয়েছিল মেটিয়াবুরুজের বৈজুয়ারা এলাকায় রাজাবাগানের এক ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ের সঙ্গে। মেয়ের বাবার মাংসের দোকান। কার্ড ছাপিয়ে অতিথিদের নিমন্ত্রণের কাজও শেষ করে ফেলেছিল কুরেশি পরিবার। এর মধ্যেই খুনের ঘটনা।
এ দিন সকালে শিবপুরের বাড়িতে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। এই ঘটনার যথাযথ পুলিশি তদন্তের আশ্বাস দেন তিনি। ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ছেলের বিয়ের কার্ড হাতেই থম মেরে বসে গুলামের বাবা আবুল হাসান। তিনি বলেন, “কারও সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নেই। এই বিয়েতে বাধা দেওয়ার জন্যই কেউ আমার ছেলেকে সরিয়ে দিল বলে সন্দেহ হচ্ছে।” গুলামের দিদি সামসুল নিসা বলেন, “ভাই রোজ রাতে পাড়ার একটা মিষ্টির দোকান থেকে দুধ আনত। শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ একটা ফোন পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে যায়। ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে ফোন করে দেখি, মোবাইল বন্ধ। রাত ১২.৩০ নাগাদ পুলিশের কাছ থেকে খবরটা আসে।”
কী ভাবে মৃতদেহের হদিস পেল পুলিশ? পুলিশি সূত্রে খবর, আড়গোড়ের ডাক্তারপাড়ায় হঠাৎ গাড়ির শব্দ পেয়েছিলেন এক স্থানীয় বাসিন্দা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি দেখেন, রাস্তার পাশে ঝোপে কিছু একটা ফেলে ন্যানো গাড়িটি বেরিয়ে যাচ্ছে। গাড়িতে এক মহিলাকেও আবছা দেখতে পান ওই ব্যক্তি। মুম্বই রোডের দিকে গাড়ি চলে যাওয়ার পরে ঝোপের কাছে গিয়ে তিনিই মৃতদেহটা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। জিটি রোডের কাছেও গুলামের পরিচিত কয়েক জন তাঁকে ন্যানো গাড়িতে উঠতে দেখেন। তিনি যেখানে দুধ আনতে যেতেন, তার দোকানদারও ওই গাড়ি ও তার নম্বর খেয়াল করেছিলেন বলে পুলিশ জানায়। ওই সূত্র ধরেই গাড়িটি উদ্ধার হয়। |