সুর বদল বিজেপিরও
মমতার আপত্তিতেই ঝুলে রইল প্রণব নিয়ে সিদ্ধান্ত
মতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র আপত্তির জেরে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড আজ জানিয়ে দিতে বাধ্য হল যে, রাষ্ট্রপতি পদে এখনও কোনও প্রার্থীর নাম তারা চূড়ান্ত করেনি। বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই শরিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
শুক্রবার কংগ্রেস কোর কমিটির বৈঠকের পরে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসেবে প্রণববাবুর নামই এগিয়ে ছিল। বৈঠকে সনিয়া জানিয়ে দেন, অন্য কারও আপত্তি না থাকলে প্রণবের নামে তাঁর আপত্তি নেই। এ নিয়ে পরে সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলের সঙ্গে প্রণববাবুর কথা হয়। ডিএমকে-প্রধান করুণানিধিকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়, ১৬ জুন প্রণববাবুর হয়ে মনোনয়ন দাখিলের জন্য। আহমেদ পটেল মমতাকে ফোন করে দিল্লি আসার অনুরোধ করলেও তাঁর সঙ্গে প্রণবের নাম নিয়ে কথা হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
কিন্তু ঘটনাটি জানতে পারেন মমতা এবং তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস যে ভাবে নাম ঠিক করে তাঁর সমর্থন চাইছে, তা অনুচিত। নাম কী হবে, সেটা নিয়েই শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত এবং সেটাই সঠিক জোট রাজনীতি। মমতার অভিযোগ, তিস্তা থেকে পেনশন সব ক্ষেত্রেই কংগ্রেস যে ভাবে আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে শরিকদের সঙ্গে কথা বলে, তা কোনও ভাবেই জোট রাজনীতি নয়।
তৃণমূল নেত্রীর ক্ষোভের বিষয়টি জানতে পেরে আজ উল্টো সুর ধরেছে বিজেপি-ও। গত কালই প্রণব সম্পর্কে নিজেদের নরম অবস্থানের কথা জানিয়ে সনিয়ার কাছে বার্তা পাঠিয়েছিল তারা। আজ ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে বিজেপি। পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে মমতাকে ফের পাশে পেতে মরিয়া দল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও রাখছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মমতা চাইছেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের মতো কারও নাম উঠে আসুক আলোচনায়।
সব মিলিয়ে সমস্যায় কংগ্রেস। তবে তাদের বিশ্বাস, মমতা কোনও ভাবেই এনডিএ-প্রার্থীকে সমর্থন করবেন না। কারণ অনেক কষ্টে তিনি পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটারদের সমর্থন পেয়েছেন। তার মধ্যেই আজ প্রণববাবু কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেন, “কেউই নিজের ইচ্ছেয় রাষ্ট্রপতি হতে পারেন না। দলই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”
বিজেপি-র অবশ্য একটা আশঙ্কা আছে। যদি মমতার প্রণব-বিরোধী অবস্থান দেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগেই কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে দেয়, তা হলে তৃণমূল মত বদলাতে পারে বলে মনে করছে তারা। তবে মমতা বুঝতে পারছেন যে, আসল ও সুদ মেটানো তিন বছরের জন্য স্থগিত রাখার যে দাবি তিনি তুলেছেন, তা পুরোপুরি মেনে নেবে না কেন্দ্র। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে শুধু আশ্বাস পেয়ে সন্তুষ্ট হতেও তিনি নারাজ।
মমতা ইউপিএ-র প্রার্থীকে সমর্থন না করলে কংগ্রেস বামেদের দ্বারস্থ হতেও পারে। তৃণমূলের তুলনায় বামেদের মোট ভোটের পরিমাণও বেশি। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ইউপিএ-তে ফাটল ধরতে পারে। সনিয়া সেই ঝুঁকি নেবেন কি না, সে প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে। আজ থেকে শুরু হওয়া সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও বামেরা এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তবে সীতারাম ইয়েচুরি আজ উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি সম্পর্কে বামেদের দুর্বলতা প্রকাশ করে বলেছেন, “সাধারণত একই দলের সরকার থাকলে, উপরাষ্ট্রপতি পদের ব্যক্তিই বরাবর রাষ্ট্রপতি পদে উন্নীত হয়েছেন। এ বার কংগ্রেস সেই ঐতিহ্য ভাঙে না বজায় রাখে, সেটাও দেখার।” উপরাষ্ট্রপতি পদে আনসারি বামেদেরই প্রার্থী ছিলেন। তবে এ কথা বলে ইয়েচুরি প্রণবেরই উপকার করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ আনসারিকে বামেরা সমর্থন করছে দেখলে মমতা উল্টো অবস্থান নিতে পারেন। কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার দূরত্ব তৈরির সুযোগ নিতে চান বামেরা। কিন্তু সিপিএমের অনেকে মনে করছেন, মমতা ইউপিএ-র প্রার্থীকে সমর্থন করতেইবাধ্য হবেন। তাঁর আপাত বিরোধিতা সবটাই আসলে দর কষাকষির জন্য। কংগ্রেসের একটি সূত্র আবার বলছে, গত বার নানা নাম নিয়ে জল্পনার মধ্যে প্রতিভা পাটিলের নাম প্রস্তাব করে চমকে দিয়েছিলেন সনিয়া। এ বারও তেমনই কোনও চমকপ্রদ নাম থাকতে পারে তাঁর ঝুলিতে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.