অপরাধের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হয়েছিল নিউটাউন ধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্ত মুমতাজ খান। কিন্তু পুলিশ মনে করছে, তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তাই শনিবার আদালতের কাছে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল পুলিশ। সেই আর্জি মেনে ধৃতকে ২১ জুন পর্যন্ত পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
শনিবার বেলা বারোটা নাগাদ পুলিশের ভ্যানে চাপিয়ে মুখ ঢাকা অবস্থায় মুমতাজকে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাকে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে হাজির করানো হয়। এ দিন দুপুরেই এসইউসিআই-এর মহিলা সংগঠন ধৃতের কঠোর শাস্তির দাবিতে শিয়ালদহ আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখায়। এর পরে কলেজ স্ট্রিটেও একটি মিছিল করেন ওই সংগঠনের সদস্যরা।
ডিসি (ইএসডি) সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুমতাজ গ্রেফতার হলেও তদন্তের কাজ বাকি। তাই অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল।” |
গত বৃহস্পতিবার রাত সওয়া এগারোটা নাগাদ এক্সাইড মোড় থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে যাওয়ার জন্য মুমতাজের গাড়িতে উঠেছিলেন। পুলিশের কাছে তিনি বলেছেন, ‘শাট্ল গাড়ি’ মনে করেই এই গাড়িতে উঠেছিলেন। কিন্তু চালক শিয়ালদহের দিকে না গিয়ে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, সেখান থেকে অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে হাবিব রহমান নামে এক পরিচিতকে মুমতাজ গাড়িতে তোলে। এর পর থেকে হাবিব গাড়ি চালাতে শুরু করলে মুমতাজ তাঁকে গাড়ি রাজারহাট-নিউটাউনের দিকে নিয়ে যেতে বলে।
তরুণীর অভিযোগ, নিউটাউনের একটি ফাঁকা জায়গায় গাড়ি থামিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে মুমতাজ। হাবিব বাধা দিতে গেলে তাকে মুমতাজ মারধর করে বলেও অভিযোগ। ধর্ষণের পাশাপাশি ওই তরুণী নগদ তিন হাজার টাকা-সহ হার এবং বালা ছিনতাইয়ের অভিযোগও করেছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ বেলেঘাটা ব্রিজের কাছে ওই তরুণীকে নামিয়ে দিয়ে যায় মুমতাজ এবং হাবিব। পরে টহলদার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে এন্টালি থানায় নিয়ে যায়। শুক্রবার ভোরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সামনে হাবিবকে শনাক্ত করেন অভিযোগকারিণী। হাবিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেকবাগান থেকে মুমতাজকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে সে গাড়ির মধ্যে ঘুমোচ্ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, হাবিব সম্পর্কে মহিলার কোনও অভিযোগ নেই। বরং, তিনি ওই তরুণীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাই তাঁকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধরা পড়ার পর থেকে মুমতাজকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জেরার মুখে সে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে বলেও এক পুলিশ অফিসার জানান। মহিলার ছিনতাই হওয়া টাকা-সহ হার এবং বালা এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়েছে। তার রিপোর্ট অবশ্য মেলেনি। এ ছাড়া, পরবর্তী কালে টিআই প্যারেডও হবে। |