কুপার্সের কেল্লায় এখনও শেষ কথা শঙ্কর সিংহই
‘নকল’ নয়, কুপার্স আদতে কংগ্রেসের ‘আসল’ বুঁদির কেল্লা!
এবং টানা চতুর্থ বার তা ‘রক্ষা’ করে, একা কুম্ভ, নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ, তা ফের স্পষ্ট করে দিলেন। যা একই সঙ্গে রাজ্যের পাঁচটি পুরসভায় কার্যত ‘মুছে যেতে বসা’ কংগ্রেসকে কিঞিৎ হলেও স্বস্তি জোগাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
মঙ্গলবার সকালে গণনা শুরুর মিনিট পঁচিশের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, নদিয়ার এই ‘উদ্বাস্তু-ভূমি’ এ বারও কংগ্রেসের ‘হাত’ ছাড়ছে না। রাজ্যের অন্য পাঁচ পুরসভায় কংগ্রেস সাকুল্যে চারটি আসন পেলেও কুপার্সে এ বারও ১২টি ওয়ার্ডের ১১টি-ই গিয়েছে কংগ্রেসের দখলে। যা দেখে নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতির ‘বিনয়’, “আমার একার পরিচিতি নয়, দলীয় প্রার্থী এবং তাদের কাজের পরিচয় পেয়েই মানুষ আমাদের হাত ছেড়ে যাননি।” তবে পুরপ্রধান নৃপেন্দ্রনাথ হাওলাদার হেরে গিয়েছেন। তাঁর পরাজয়ে দলীয় ব্যাখ্যা, পুরপ্রধান হওয়ায় নৃপেনবাবু নিজের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিশেষ সময় দিতে পারেননি। ঘটনাচক্রে তাঁকে পরাজিত করেছেন যিনি, সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়া সেই কাউন্সিলর দিলীপ দাসকে দলবদলের ‘পুরস্কার’ হিসেবে পুরপ্রধানের মুখ হিসেবে তুলে ধরেছিল তৃণমূল।
একা কুম্ভ। জয়ের খবরে তৃপ্ত শঙ্কর সিংহ। নিজস্ব চিত্র
শঙ্করের ‘খাসতালুক’ কুপার্সে কংগ্রেস তার ‘চেনা’ ভোট-ব্যাঙ্কও অটুট রেখেছে (৫০.২ শতাংশ)। ২০০৭-এ প্রায় ৫২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। ‘চেনা’ জমিতে প্রত্যাশিত এই জয়ে তাই বিশেষ উল্লাসের কারণ দেখছেন না কুপার্সের ‘সেনাপতি’। সারা দিনে এক বারের জন্যও পা বাড়াননি কুপার্সের দিকে। শঙ্কর বলছেন, “চেনা জায়গায়, পরিচিত মানুষ কাজ দেখে আমাদের ফিরিয়ে এনেছেন। এটাই তো প্রত্যাশিত। এতে হইচইয়ের কিছু নেই তো!” আহত সিংহের মতোই শোনায় তাঁর অভিমান!
আসলে, ‘চেনা’ মানুষকে ক্রমান্বয়ে অচেনা হয়ে পড়তেও কম দেখেননি এই রাজপুত। ‘পরিবর্তনের’ প্রাক্কালে ঘনিষ্ঠদের অনেকেই ছেড়ে গিয়েছিলেন তাঁকে। হাতছাড়া হয়েছিল হাতের তালুর মতো ‘চেনা’ রানাঘাট। বাস্তুহারা মানুষের শেষ ভিটে কুপার্স ক্যাম্পকেই তাই অন্তিম ভরসা হিসেবে আঁকড়ে ধরে ছিলেন শঙ্কর। মাসখানেক ধরে দিন-রাত এক করে পড়ে থেকেছেন কুপার্সে। নিয়ম করে প্রার্থীদের নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে মিছিল করে তিনি বলে এসেছেন, “আমি কুপার্সকে চিনি, কুপার্সও আমায় চেনে। দেখবেন, এখানকার মানুষ আমায় ঠকাবেন না।” এ দিন সকাল থেকেই তার ‘ফল’ মিলতে শুরু করলেও নিজেকে স্বেচ্ছাবন্দি করে রেখেছিলেন চাকদহের বাড়িতেই। সন্ধ্যায় ঘনিষ্ঠদের নিয়ে বৈঠক সেরে তিনি বলেন, “অনেকেই তো অনেক কিছু বলেছিলেন, কুৎসা, ব্যক্তিগত আক্রমণ কিছুই বাদ দেননি। আমি কিন্তু পাল্টা তোপ দাগিনি। ফাঁকা প্রতিশ্রুতিও দিইনি।”
রানাঘাট গণনাকেন্দ্রের বাইরে কংগ্রেস সমর্থকদের ভিড়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
সন্ধ্যা থেকে কুপাসের্র ১ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে খুচরো গণ্ডগোলের খবরে বার বার বাজতে থাকে তাঁর মোবাইল। এক সময়ে সটান উঠে দাঁড়ান শঙ্কর। ফোনের ওপারে দলীয় নেতাকে সজোরে ধমক দেন, “আমরা ফাঁকা প্রতিশ্রতি দিই না, প্ররোচনাও নয়। গণ্ডগোল বা হাতাহাতিতে নয়, কথা বলেই ঝামেলা মেটাতে হবে। মনে রাখবেন, আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে।”
বাস্তবিক, কুপার্স যে তাঁরই কেল্লা!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.