|
|
|
|
হলদিয়া -পাঁশকুড়ায় গণনা আজ |
পুরভোটে নিরঙ্কুশ জয়ের দাবি তৃণমূলের, আশায় বামেরাও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক ও হলদিয়া |
অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। পূর্ব মেদিনীপুরে ‘পরিবর্তনের বৃত্ত’ সম্পূর্ণ হবে কি না জানা যাবে আজ, মঙ্গলবার।
রবিবার ভোটের পর আজ মঙ্গলবার হলদিয়া ও পাঁশকুড়া পুরসভার ভোটগণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। হলদিয়া পুরসভার ২৬টি ওয়ার্ডের ভোটগণনা হবে মহকুমাশাসকের অফিস সংলগ্ন বাসুদেবপুর গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুলে। পাঁশকুড়া পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের ভোটগণনা হবে তমলুক জেলা প্রশাসনিক ভবনে। সেখানেই স্ট্রং রুম। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, “নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গণনা শুরুর দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল জানা যাবে।’’
এই দুই পুরসভায় শুরু থেকেই প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ও প্রত্যাহার নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুমকি, মারধর এমনকী অপহরণের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে নির্বিঘ্নে ভোট করানো ছিল পুলিশ -প্রশাসনের কাছে মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। রবিবার বড় কোনও অশান্তি ছাড়াই নির্বিঘ্নে ভোট সম্পন্ন হওয়ায় তাই প্রশাসনের পাশাপাশিই স্বস্তিতে শাসকদল তৃণমূল।
দুই পুরসভার ভোটে মূল কাণ্ডারির ভুমিকায় থাকা তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী নির্বাচনী প্রচারে বিরোধী -শূন্য পুরবোর্ড গঠনের দাবি করলেও ভোট গণনার প্রাক্ -মুহূর্তে এই নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি নন। মঙ্গলবার শুভেন্দু বলেন, “বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করে শান্তিপূর্ণ ভাবে হলদিয়া ও পাঁশকুড়ার মানুষ তাঁদের রায় দিয়েছেন। গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের তুলনায় আমাদের প্রতি মানুষের সমর্থন বৃদ্ধি পাবে। যে ভাবে মানুষ প্রচারে অংশ নিয়েছেন ও সাড়া দিয়েছেন তাতে আমাদের ভোট বাড়বে। দুই পুরসভাতেই নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাব।”
অন্য দিকে বিরোধী দল সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহি ভোটের ফলাফল নিয়ে আশাবাদী হলেও পুরবোর্ড গঠনের বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে চাননি। নিরঞ্জনবাবু বলেন, “গত বছর বিধানসভা ভোটে পাঁশকুড়া পুরসভার ৬টি ওয়ার্ডে আমাদের ভোট বেশি ছিল তৃণমূলের চেয়ে। ওই ছ’টি ওয়ার্ড ছাড়াও আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে আমাদের প্রার্থীরা জিততে পারেন। সামগ্রিক ভাবে গত বছর বিধানসভার চেয়ে আমাদের ভোট বৃদ্ধি পাবে। হলদিয়া পুরসভায়ও ভাল ফল হবে আশা করছি।”
এ বার পুরভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোট না হওয়ায় কংগ্রেস আলাদা ভাবে প্রার্থী দিয়ে লড়াই করেছিল। বিরাট সাফল্য দাবি না করলেও কয়েকটি আসনে জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি অসিত পাল বলেন, “পাঁশকুড়া পুরসভায় ২টি আসনে আমাদের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আর হলদিয়া পুরসভায় কয়েকটি আসনে আমরা ভাল সমর্থন পাব বলে আশা করছি।”
রবিবার ভোটযন্ত্র আসার পর থেকেই ‘স্ট্রং রুম’গুলিতে কড়া প্রহরা চলছিল। সোমবার হলদিয়ার বাসুদেবপুর গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুলে গিয়ে দেখা গেল, ভোট গণনায় কোনও রকমের ঝুঁকি নিয়ে নারাজ প্রশাসন। গণনা কেন্দ্রে প্রবেশের রাস্তার দু’দিকেই বাঁশ দিয়ে গড়া হয়েছে ‘চেকিং পয়েন্ট’। গণনাকেন্দ্র থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মী -সমর্থকেরা জমায়েত করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। তবে প্রার্থী নিজে ও তাঁর দু’জন ‘এজেন্ট’ গণনাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। সাংবাদিকদের জন্য খোলা হয়েছে ‘মিডিয়া সেল’। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অমিতাভ মাইতি জানান, “পুলিশ প্রস্তুত থাকবে। নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থাই করা হয়েছে।” স্কুলের ২টি হলে চলবে গণনা। প্রতিটি হলে দু’জন সহ মোট ৮ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার দায়িত্বে থাকছেন। এ ছাড়াও প্রতিটি টেবিলে এক জন সুপারভাইজার ও এক জন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়ে ৫২ জন গণনাকার্যে যুক্ত থাকবেন। সব মিলিয়ে ২৭৫ জন কর্মী ও ৩০০ পুলিশ গণনাকেন্দ্রে থাকবে বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক শিল্পা গৌরিসারিয়া। |
|
|
|
|
|