|
|
|
|
জয়েন্টের বিশেষ প্রশিক্ষণে ছাত্র নেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের নিখরচায় জয়েন্ট এন্ট্রান্সের প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করেছে সরকার। কিন্তু তাতে আগ্রহ নেই তফসিলি ছাত্রছাত্রীদের। বিগত বছরগুলিতে ৮-১০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়েই বিশেষ প্রশিক্ষণ চলেছিল। খাতায়কলমে ছাত্র সংখ্যা বেশি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও ওঠে। এ বারও ছাত্র জোটেনি। ৫০ শতাংশ আসনই শূন্য। হতবাক প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ আধিকারিক শান্তনু দে বলেন, “ছাত্রছাত্রী ভর্তির সংখ্যা দেখে অবাক লাগছে। তফসিলি জাতি ও উপজাতির গরিব ছাত্রছাত্রীরা যাতে জয়েন্টের জন্য তৈরি হতে পারেন, সে জন্যই সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। তা সত্ত্বেও তেমন সাড়া মেলেনি।”
কেন এই হাল? আদিবাসী সংগঠনগুলির দাবি, প্রচারের অভাবেই এই অবস্থা। তাই, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা তার সদ্ব্যবহার করতে পারছে না। লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির জেলা সম্পাদক বলাই নায়েক বলেন, “কবে থেকে ভর্তি নেওয়া হবে, সে জন্য কোথায় যোগাযোগ করতে হবে, তা জানানোই হয়নি। তা হলে ছাত্রছাত্রীরা জানবে কী করে? তাই ভর্তি হতেও পারেনি।” মাঝি-মাডওয়া জুয়ান গাঁওতার সম্পাদক প্রবীর মুর্মুরও বক্তব্য, “সব কিছুর জন্যই ঢাকঢোল পিচিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কোনও প্রচার চোখে পড়েনি।” জোরদার প্রচার চালিয়ে যাতে বাকি আসনগুলিও পূরণ করা যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ আধিকারিক।
দরিদ্র তফসিলি জাতি ও উপজাতি পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের অনেকের কাছেই গৃহশিক্ষকের সাহায্য নেওয়া বিলাসিতা। তার উপরে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের জন্য নিজের খরচে প্রশিক্ষণভাবতেই পারে না তারা। তাই তফসিলি ছাত্রছাত্রীদের জয়েন্টের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। ২০০৯ সাল থেকে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এক বছর ব্যাপী এই প্রশিক্ষণের সুযোগ নিতে তফসিলি ছাত্র বা ছাত্রীকে মাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর ও উপজাতি ছাত্রছাত্রীকে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। জেলার দু’টি জায়গায় এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। চলতি বছরে মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলায় শ্রীশ্রী মোহনানন্দ বিদ্যামন্দির ও ঝাড়গ্রামের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে। দু’টি জায়গায় ৪০ জন করে ৮০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা। কিন্তু, মেদিনীপুরে ২৮ জন ও ঝাড়গ্রামে মাত্র ২৬ জন আবেদন করেছেন। তাদের নিয়েই ১৯ মে থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে। শনি-রবি দু’দিন এই বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জয়েন্টের প্রতিটি বিষয়ই খুঁটিয়ে পড়ানো হয়। পরীক্ষা নেওয়া হয়। দেওয়া হয় স্টাডি মেটিরিয়াল। যারা পড়তে আসে, তাদের খরচ তো লাগেই না উল্টে টানা এক বছর মাসে ১০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। দু’টি কেন্দ্রের জন্য বছরে সরকারের খরচ হয় ৮ লক্ষ করে ১৬ লক্ষ টাকা। একটি সংস্থাকে পড়ানোর দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে দেখভাল করে অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতরই। ওই দফতর বা দু’টি কেন্দ্রের যে কোনও একটিতে গেলেই আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। |
|
|
|
|
|