আজ ভোটগ্রহণ পশ্চিমবঙ্গের ৬টি পুরসভায় |
হলদিয়া, দুর্গাপুর, ধূপগুড়ি, নলহাটি, পাঁশকুড়া, কুপার্স ক্যাম্প — আজ পশ্চিমবঙ্গের এই ৬টি পুরসভায় ভোট গ্রহণ হচ্ছে। মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৬ লক্ষ। গরম এড়াতে সকাল থেকেই ভোটারদের লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। সময়ের সঙ্গে তা দীর্ঘ হয়েছে। ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া মোটের উপর শান্তিপূর্ণ হলেও কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু গণ্ডগোলের খবর পাওয়া গিয়েছে।
•
দুর্গাপুর পুরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিআইএম-এর পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী তাদের মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ১৪ নং ওয়ার্ডের ৬টি বুথে ভোট বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে সিপিএম-এর পক্ষ থেকে। তবে নির্বাচন পর্যবেক্ষককে এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত লিখিত কোনও অভিযোগ আসেনি তাঁর কাছে। অভিযোগ আসলে তিনি তা খতিয়ে দেখবেন। এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলেছেন বর্ধমানের জেলাশাসক ওমকার সিংহ মিনা। ৮ ও ২৭ নং ওয়ার্ডে সিপিএম-এর ক্যাম্প ভাঙচুর করার অভিয়োগও রয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এক তৃণমূল নেতাকে আটক করা হয়েছে। ১৩ নং ওয়ার্ডে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেস, তৃণমূল এবং সিপিআইএম পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছেছে। ভোট শেষ হওয়ার পর থেকে ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। দু’ পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী রয়েছে।
• হলদিয়ায় ১৮ নং ওয়ার্ডে তৃণমূল এবং সিপিআই সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বহিরাগতদের এনে গণ্ডগোল করার অভিযোগ উঠেছে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে সিপিআই-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইচ্ছাকৃত ভাবে হাতাহাতি করেছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে পুলিশকে লাঠিচার্জ করে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়।
• ধূপগুড়িতে বেশ কিছু বুথে ভোটারদের হুমকি দেওয়া এবং প্রভাবিত করার অভিযোগে একজন সিপিআইএম নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
• পাঁশকুড়ায় ২ নং ওয়ার্ডের একটি বুথে ইভিএম খারাপ হয়ে যাওয়ায়
প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বন্ধ থাকে ভোট গ্রহণ। সিপিএম, তৃণমূল-সহ বাকি রাজনৈতিক দলগুলি আরও বেশি সময় ধরে ভোট প্রক্রিয়া চালানোর দাবি জানিয়েছে।
• কুপার্স ক্যাম্পে ৮ নং ওয়ার্ডে ভোট দিয়ে ফেরার পথে একজন প্রতিবন্ধী যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
আহত যুবককে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনাটি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।
• সবক’টি বুথ উত্তেজনাপ্রবণ ঘোষিত হলেও নলহাটি পুরসভায় ভোট নির্বিঘ্নেই হয়েছ।
|
• বিকেল ৪টে নাগাদ বর্ধমানে সিপিআইএম-এর জেলা সম্পাদক অমল হালদার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তিনি জানিয়েছেন, দুর্গাপুরে বেশ কিছু জায়গায় রিগিং করেছে তৃণমূল, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কোনও লাভ হয়নি। তিনি মোট ৮টি ওয়ার্ডে পুনর্নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছেন।
• অন্য দিকে কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সাংগ্রিক ভাবে প্রায় সব জায়গায় কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের ভয় দেখানো, মারধর করা হয়েছে। অভিযোগের তির শাসক দল তৃণমূলের দিকে। তিনি আরও জানান এই ৬টি পুরসভায় নির্বাচন নিষ্কলঙ্ক হয়নি প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার জন্য।
• এই প্রসঙ্গে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র সাংবাদিকদের বলেছেন ভোট যথেষ্ট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। মানুষ নির্বিঘ্নেই ভোট দিতে পেরেছেন। কোথাও কোনও অভিযোগ নেই। বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছেন তিনি।
• প্রায় একই সুর শোনা গেল তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। তিনি বলেছেন এবারের পুরভোট
খুবই শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোনও সংঘর্ষের খবর নেই। কেউ আহতও হয়নি। বিরোধীদের কুত্সা করার এই রাজনীতিকে তিনি কটাক্ষ করেছেন।
|
ভোট পড়ার হার |
সময় |
পুরসভা |
ভোট পড়েছে |
সকাল ১০টা পর্যন্ত |
হলদিয়া |
৩২ শতাংশ |
দুর্গাপুর |
৩০ শতাংশ |
ধূপগুড়ি |
৩০ শতাংশ |
নলহাটি |
৪০ শতাংশ |
পাঁশকুড়া |
৩৫ শতাংশ |
কুপার্স ক্যাম্প |
২৫ শতাংশ |
সকাল ১১টা পর্যন্ত |
|
হলদিয়া |
৪৮ শতাংশ |
দুর্গাপুর |
৩৭ শতাংশ |
ধূপগুড়ি |
৪৪ শতাংশ |
নলহাটি |
৫১ শতাংশ |
পাঁশকুড়া |
৪৫ শতাংশ |
কুপার্স ক্যাম্প |
৫০ শতাংশ |
দুপুর ১টা পর্যন্ত |
|
হলদিয়া |
৬৮ শতাংশ |
দুর্গাপুর |
৫৮ শতাংশ |
ধূপগুড়ি |
৬৬ শতাংশ |
নলহাটি |
৬১ শতাংশ |
পাঁশকুড়া |
৭০ শতাংশ |
কুপার্স ক্যাম্প |
৮১ শতাংশ |
ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত* |
|
হলদিয়া |
৮৭ শতাংশ |
দুর্গাপুর |
৭৫ শতাংশ |
ধূপগুড়ি |
৮৮ শতাংশ |
নলহাটি |
৭৫ শতাংশ |
পাঁশকুড়া |
৮৩ শতাংশ |
কুপার্স ক্যাম্প |
৯৩ শতাংশ |
*রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী |
|