|
|
|
|
|
শর্টকাটে মেদ ঝরালে অন্তে খেদ |
স্লিম ট্রিম থাকতে চান? ঝটিতি ছিপছিপে হওয়ার কিছু ‘শর্টকাট’ আছে।
কিন্তু সে পথ ধরলে যে ঘোর বিপদ! উপায় জিম আর ডায়েট। |
তেড়েফুঁড়ে শরীরচর্চা করবেন না
উপোস করে থাকা তো বোকামি। আবার রাতদিন জিমে গিয়ে লাগাতার ব্যায়াম করলেও মুশকিলে পড়বেন। ওজন কমবে পরে, আগে আসবে শরীর ভাঙা ক্লান্তি। এনার্জি তখন তলানিতে, খালি ঘুম পাবে। ওজন তুলতে গিয়ে আচমকা লেগেও যেতে পারে, ঘেমেনেয়ে শরীরের নুন ফুরিয়ে অসুখ হয়ে যেতে পারে। আর, এত কিছুতে কিন্তু মনের ওপর বেশ খারাপ প্রভাব পড়ে। আসলে, ডায়েট আর এক্সারসাইজ, দু’টোর সমতা রেখে ওজন ঝরানোই বিধি। দ্য আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব স্পোর্টস মেডিসিন অ্যান্ড আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বিধান দিয়েছেন, এই ব্যায়ামের রোজনামচাটাও একটু বুঝেশুনে ঠিক করতে হবে। সপ্তাহে ক’দিন স্ট্রেংথ ট্রেনিঙের মতো শক্ত ব্যায়াম করবেন আর ক’দিন একটু হালকা গা ঘামালেই চলবে, সেটা ছকে নিতে হবে। তার সঙ্গে নিয়ম মেনে খাওয়াটাও চালাতে হবে। তবেই তো চেহারাখানা টিকবে।
ওষুধে কি খিদে মেটে?
যদি একটা ওষুধ খেয়েই সবাই চটপট স্লিম-ট্রিম হয়ে যেতে পারতেন, তবে চার পাশে কি এত মোটাসোটা মানুষ দেখা যেত? পেশা সূত্রে তন্বী থাকতে হলে, অনেকেই কঠোর ডায়েট মেনে চলেন। তাঁরা তখন ‘সাপ্লিমেন্ট ফুডস’, বা বিভিন্ন ‘ডায়েট পিলস’ খান। ম্যাগাজিন ইত্যাদিতে প্রিয় তারকাদের সাক্ষাৎকার পড়ে অনেকেই ভাবেন, তা হলে আমিও এঁর মতো ওষুধ খেয়ে রোগা হব। তাতে কিন্তু বিপদ কম নয়। এ সব ওষুধ খেলে শরীরে জল ও খনিজ লবণের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। তার জন্যই এক দম খিদে পায় না, একটু খেলেই পেট ভরে যায়। এতে শরীর কম এনার্জি, কম পুষ্টি, কম ক্যালোরিতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। ক্যালোরি পুড়বে না বেশি, তাই যতই কম খান, ওজনও আর আগের মতো ঝরবে না। এ সব ওষুধ সকলের সহ্য হয় না। নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তখন সামলাও সেই সব উটকো ঝামেলা।
তামাক নিপাত যাক
পাগলামি বলুন, অবিশ্বাসে মাথা ঝাঁকান, এমনটাই হচ্ছে। অনেকেই রোগা থাকার লোভেই ধূমপান করেন। আসলে ধোঁয়া পেটে গেলেই খিদে মেরে দেয়। তাই, যাঁরা ডায়েট নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন, পেট একটু চুঁইচুঁই করলেই একটা সিগারেট ধরান। ব্যস, আর কিছু খেতে হল না।
সেই থেকেই পড়েন নেশার খপ্পরে। তার পর তামাকজনিত যাবতীয় রোগব্যাধি উৎপাত শুরু করে। স্লিম মডেল সুলভ চেহারার বদলে গাল তুবড়ে, শরীরের লাবণ্য শুকিয়ে কাঠোখোট্টা বুড়োটে দেখায়। তার পর কাশি, হার্টের অসুখ বা ক্যান্সার ইত্যাদির ভয়ে যখন জবরদস্তি করে সিগারেটটা ছাড়েন, তখনই বেঢপ মোটা হতে শুরু করেন।
এ ভাবে, বাইরেটাকে জোর করে ভেঙেচুরে ‘স্লিম’ হওয়া যায় না। তাতে কাঠির মতো, রুখাশুখা একটা রুগি ধরনের চেহারা পাওয়া যায়। তার থেকে ভেতরটা ভাল রাখার চেষ্টা করুন। পুষ্টিকর খাবার আর নিয়মিত শরীরচর্চা, এ দু’টো মেনে চললে আপনাআপনিই দোহারা চেহারাটা ধরে রাখতে পারবেন। আর তার সঙ্গে জেল্লাটাও রয়ে যাবে।
অন্যের ডায়েট চার্ট মানবেন না
আমার নেট সব জানে কথাটা আংশিক সত্যি। জিজ্ঞাসা করলে ইন্টারনেট নিমেষে একটা ডায়েট চার্ট ধরিয়ে দেবে। কিন্তু সেটা তো সবার জন্য একটা গড় করে নিয়ে হিসেব করা তালিকা। অথচ সবার চাহিদা তো মোটেও এক হতে পারে না। তাই, তাতে ব্যক্তিগত ভাবে আপনার খুব একটা লাভ হবে না। আরে বাবা, ইন্টারনেট তো আর সাক্ষাৎ আপনাকে দেখে, ওজন-উচ্চতা-কাজ মেপে ঠিকঠিক ডায়েটচার্টটা বানাতে পারে না। সেটা পারেন এক জন মানুষ, পেশায় যিনি পুষ্টিবিদ। ইন্টারনেট না হোক, বন্ধু বা সহকর্মীর ডায়েট শুনেও কী খাবেন সেই সিদ্ধান্ত নেবেন না। পুষ্টিবিদের কথা মতো ডায়েটচার্ট মেনে চলুন। গড়নটা ছিমছামই থাকবে।
উপোসে পুণ্য কই?
একেবারে না খেয়ে থাকলে প্রথম দিকটা কিছুটা মেদ কমবে। কিন্তু দেহটা প্রয়োজনীয় পুষ্টিই পাবে না। তখন ক্ষতি পূরণ করার জন্য দেহের হাড়মজ্জা পেশি থেকে পুষ্টিগুণ টেনে নেবে। তাতে মাংসপেশিগুলো খুব দুর্বল হয়ে যাবে, শরীরের জলের অংশও আশঙ্কাজনক ভাবে কমে যাবে। শরীরযন্ত্রটা আস্তে আস্তে বিকল হতে থাকবে। জিরো ফিগার বানাতে গিয়ে, খাব না খাব না করে, দুনিয়া থেকে একেবারে উবে যাওয়ার ঘটনাও তো শোনা গিয়েছে। তবে, মারা না গেলেও, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে, না খেলে আপনার উদ্দেশ্য বিশেষ সফল হবে না। তার কারণ, পেটে কিল মেরে, উপোস করে পড়ে থাকলে দেহের বিপাক হারও কমে যায়। তখন অল্প ক্যালোরিতেই দেহ কাজ চালিয়ে নিতে শিখে যায়। না খেয়ে থেকে থেকে এই কারণেই খিদে মরে যায়। শরীর ক্যালোরি পুড়িয়ে ঝরঝরে থাকার অভ্যাসটাই ভুলে যায়। গ্যারান্টি রইল, অল্প খাবার খেলেও আপনি তখন মোটা হতে থাকবেন। ব্যস, দু কূলই ডুবল। |
|
|
|
|
|