উত্তরের চিঠি

হারানোর পথে প্রাচীন দরগা
গাছের আড়ালে রায়গঞ্জ উকিলপাড়ার পির-দরগা।
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জে উকিলপাড়ার পূর্ব দিকে রয়েছে একটি দরগা। দরগার ঘরটি দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট ও প্রস্থে ১৫ ফুট। ঘরটির চাল টিনের ও দেওয়াল পাতলা ইটের। এখানে লাল কাপড়ে ঢাকা দুটি মাজার আছে। এটি পিরের দরগা। এখানকার পিরের নাম ছিল বরফি বাবা। এই সুফি সাধকরা সরল জীবনযাপন করতেন। এঁদের ফকির বলা হত। সমাজে এঁদের যথেষ্ট প্রভাবও ছিল। শোনা যায়, বরফি বাবার সাধনভজন দিনাজপুরের মহারাজদের মুগ্ধ করে। তাঁরা এই পিরকে দরগা সংলগ্ন ৮০ বিঘা জমি দান করেন। দরগা, পুকুর এবং কবরস্থান এরই মধ্যে রয়েছে। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে এই দরগাতে তিন দিনের মেলা বসত। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে পুজো দিত। মেলা আজও বসে। তবে আজ আর সে জৌলুস নেই। পিরের বংশধরগণ থাকলেও তাঁদের খোঁজ মেলে না। কবরস্থানটি নিশ্চিহ্ন। এই পবিত্র স্থান এখন সুযোগসন্ধানীদের গ্রাসে চলে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করার কেউ নেই। প্রশাসন নির্লিপ্ত।


এ ভাবেই বাঁচে ওরা
ডাউন ট্রেন এনজেপি থেকে বালুরঘাট যাবে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শেষ করে আমরা কয়েক জন ওই ট্রেনে চাপলাম। আমাদের সঙ্গে এক মা ও মেয়ে উঠল। ওরা পরস্পরের সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলছে। মেয়েটির বয়স বড়জোর পাঁচ বছর। ওরা যে হতদরিদ্র, তা দেখলেই বোঝা যায়। পরনে ছেঁড়া পোশাক। সঙ্গে নোংরা কাপড়ের পুঁটলি। স্বাস্থ্য সম্পর্কে ন্যূনতম সচেতনতাও নেই। ওরা কামরার মেঝেতেই শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর মা ঘুম থেকে উঠে মেয়ের চুল আঁচড়াতে শুরু করল। আর মাথা থেকে কী যেন খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে লাগল। উকুনই হবে। কিছু পরে দেখলাম, মা ঘুমিয়ে পড়েছে। মেয়ে তার গলা জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। এর পর ঘুম থেকে উঠে ট্রেনের কামরার এ দিক ও দিক ঘুরতে লাগল। আমরা কেক খাচ্ছিলাম। তার থেকে এক টুকরো দেওয়াতে খুব খুশি হল। এ রকম খাবার যে ওদের কাছে রাজভোগ, তা বোঝা গেল। কিছু পরে গন্তব্য এলে ওরা নেমে গেল। এ ভাবেই ওরা বেঁচে থাকে। কিন্তু কত দিন বাঁচবে? সভ্যতার আলো আজ ঘরে ঘরে। ইন্টারনেটের দৌলতে বিশ্ব হাতের মুঠোয়। ওরা সেই অন্ধকারেই। এ রকম কত ‘ওরা’ আমাদের আনাচে কানাচে রয়েছে তার হিসেব কে রাখে? শুধু এক মুঠো খাবারের জন্য ওদের লড়াই, রোজকার সংগ্রাম। এ লড়াই স্থায়ী হবে তো? হারিয়ে গেলে তার দায় কার, আমাদের না রাষ্ট্রের?


নেশার ওষুধ
শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু দোকানে ওষুধের নামে নেশার দ্রব্যের রমরমা বাজার বেশ কিছু দিন জাঁকিয়ে বসেছে। খোলা বাজারেই চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই মিলছে এ ধরনের ওষুধ। এইগুলি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কিছু কাফ সিরাপ। যা বিনা কারণে অত্যধিক মাত্রায় ব্যবহার করলে নেশা হয়। ড্রাগের মতোই মারাত্মক সে নেশা। যাঁরা এই নেশা করেন, তাঁরা এক দিন এই ওষুধ না পেলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এঁদের আচরণ তখন এক জন মাদকাসক্তের মতোই হয়ে যায়। আর এই সব ওষুধ বিক্রি হচ্ছে বোতলের গায়ে উল্লিখিত দামের থেকে বেশি দামে।
এ রকম ওষুধ বাজারে সহজলভ্য হওয়ায় অল্প বয়েসি যুবক-যুবতীরা সাধারণত এর দিকে বেশি ঝোঁকে। এ সব ঘটনা প্রশাসনের অগোচরে নেই। তবুও প্রশাসন নির্বিকার।


মিড-ডে মিল
ঠাকুরপুরা, বড়কইল, চকশিদল এই ৩টি গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে ১৫০ জনের ওপরে ছাত্র। মিড-ডে মিল’-এর অবস্থা বলার নয়। মিড-ডে মিল’-এ যা দেওয়া হয় তা খাওয়া যায় না। বাচ্চারা তা বাড়ি নিয়ে আসে। শেষমেশ গরুতে খায়। সপ্তাহে ৩ দিন রান্না হয়। কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই। নতুন সরকার আসার পর মনে হয়েছিল, অবস্থার পরিবর্তন হবে। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও সুরাহা হয়নি। এ বিষয়ে জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। কর্তৃপক্ষ নজর দিলে স্কুলটির ছোট বাচ্চাদের উপকার হবে।


এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.