স্কুলের ছাত্রাবাসের জন্য বরাদ্দ অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠল কাশীপুর থানার কালীদহ অঞ্চল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কাশীপুর থানায় প্রধান শিক্ষক শিবশঙ্কর মণ্ডলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক বিধান রায়। বিধানবাবু বলেন, “জেলাশাসকের নির্দেশেই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, “তদন্তে দেখা গিয়েছে ছাত্রাবাসের জন্য বরাদ্দ ৬৪ হাজার টাকার মধ্যে ৪৫ হাজার টাকার হিসেব দেখাতে পারেননি। তা ছাড়া এক তহবিলের অর্থ অন্য তহবিলে খরচ করেছেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ছাত্রাবাসের নথিপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে স্কুল পরিচালন সমিতির তছরুপের বিষয়টি নজরে আসে। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক হরেন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, “এলাকার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিছুদিন আগে একটি আবেদন পাই। তাতে তিনি জানান, ছাত্রাবাসে খাদ্যসামগ্রীর কাঁচামাল ও অন্যান্য জিনিষপত্র বাবদ তাঁর ১,৮৯,৬১৮ টাকা বকেয়া রয়েছে।” হরেন্দ্রনাথবাবুর দাবি, “এর পরে প্রধান শিক্ষকের কাছে সেই সময়কার হিসেব সংক্রান্ত নথিপত্র কোথায় রয়েছে জানতে চাই। কিন্তু তিনি তা দেখাতে পারেননি। এরপর পরিচালন সমিতিই শিক্ষক প্রতিনিধি-সহ গোটা বিষয়টি দেখভালের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির সামনেও প্রধান শিক্ষক ছাত্রাবাসের হিসেব সংক্রান্ত পুরো নথিপত্র দেখাতে পারেননি।”
তাঁর অভিযোগ, “দেখা যায় পাশবই থেকে ১,২৫,৭৩৫ টাকা তোলা হয়েছে। যা থেকে প্রধান শিক্ষক পাওনাদারকে দিয়েছেন ৬,৮০,৮৮৬ টাকা। আর ছাত্রাবাসের কর্মীদের বেতন বাবদ দিয়েছেন ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪০০ টাকা। বাকি টাকার কোনও হিসেব নেই। এই পরিমাণ টাকা কোথায় রয়েছে তা জানতে চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক আমাদের জানান, পুরনো হিসেব দেখার নতুন পরিচালন সমিতির কোনও এক্তিয়ার নেই।” হরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “তখন বর্তমান পরিচালন সমিতি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেয়। এর পরেই আমি জেলাশাসকের কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের প্রতিলিপি অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ও স্থানীয় বিডিওকে দেওয়া হয়। প্রশাসনও পৃথক ভাবে তদন্ত করে। সেই তদন্তেও তছরুপের অভিযোগ ধরা পড়ে।”
জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ বলেন, “আমি এক বার বিডিওকে দিয়ে, আর এক বার অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরকে দিয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করিয়েছি। তদন্তে তছরুপের বিষয়টি উঠে এসেছে। তার পরেই ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি অর্থ তছরুপের একটি মামলা ও তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক শিবশঙ্করবাবুর সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে, জানানো হয় উনি বাইরে রয়েছেন। |