স্কোরবোর্ড দেখিয়ে যাবে নতুন আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হল কলকাতা নাইট রাইডার্স। দু’বারের চ্যাম্পিয়নদের পাঁচ উইকেটে হারিয়ে।
স্কোরবোর্ডকে এ জন্যই হয়তো প্রসিদ্ধ ক্রিকেটলিখিয়ে সেই কবে ‘গাধা’ আখ্যা দিয়েছিলেন। অভিজাত মাদ্রাজ ক্রিকেট ক্লাবের পাশে টাঙানো স্কোরবোর্ডটায় লেখা ছিল না বাকি স্কোরগুলোর কথা। পরপর এগুলো লিখে দিলাম।
মিথকে হারিয়ে দিল প্রখর বাস্তব।
বাস্তু আর ফেং শু্যই জাতীয় সংস্কারকে হারিয়ে দিল ক্রিকেটীয় দক্ষতা।
ক্যাপ্টেন ‘কুল’কে হারিয়ে দিলেন ক্যাপ্টেন ‘সংকল্পমান’।
ডোয়েন ব্র্যাভোর শেষ ওভারে এতগুলো রান দিয়ে হেরে গেলেন সে দিন তাঁর শেষ বলে ছক্কায় যন্ত্রণাদগ্ধ ইডেন সমর্থকদের কাছে।
দু’বারের আইপিএল জয়ী শাঁসালো ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের যাবতীয় ফন্দিফিকির হেরে গেল কেকেআর-শাসকের স্বতঃস্ফূর্ত প্যাশনের কাছে।
কলকাতা জিতল পাঁচ উইকেট এবং এতগুলো বিভাগেও। আর কে জানত, সেই জয়ের রেসিপি এমন একটি উপাদান, যার কথা কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি।
গুগল সার্চে তাঁর নামের পাশে হিটের সংখ্যা মাত্র ৪২,৬০০। তেমন কিছু জানাও যায় না। শুধু এটুকু জানতে পারবেন, হরিয়ানার মনবিন্দর সুলতান সিংহ বিসলা জন্মেছেন ডিসেম্বর মাসে। এখন বয়স সাড়ে সাতাশ। বহু বছর আগে যেমন সংসারে কন্যাসন্তান এলে অনগ্রসর সমাজে সেটা অমঙ্গল হিসেবে বিবেচিত হত, ঠিক তেমন ভাবেই বিসলা আবির্ভূত হন নাইটদের ফাইনালের সংসারে। বালাজি চোট পেয়ে যাওয়ায় নিরুপায় হয়ে ম্যাকালামকে বসিয়ে ব্রেট লি-কে নিতে হয়। কিপিং করার লোক দরকার, সামান্য ব্যাট করে দেবে, তাই বিসলা। নইলে এ মরসুমে মাত্র ২০ গড়, সর্বোচ্চ ৪৬। এ যে ফাইনালের দিন এক হোটেলে আছে এবং টিম বাসে মাঠে যাচ্ছে, এটাই তো যথেষ্ট!
কে জানত এ হেন বিসলা ধোনির বিখ্যাত ফাইনাল-ভাগ্য এ ভাবে কেড়ে নেবেন? কে জানত বালাজির যে চোটটা অভিশাপ হিসেবে গণ্য হয়েছিল, সেটা এ ভাবে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেবে? ভেঙে পড়া নাইট সমর্থকদের সফল স্বপ্ন দেখাবেন নতুন চ্যাম্পিয়ন আর নতুন নায়কের। তাঁর ৪৮ বলে করা ৮৯-তে আটটা বাউন্ডারি, পাঁচটা ওভার বাউন্ডারি। জাক কালিস আর তিনি দ্বিতীয় উইকেটে যে ভাবে ব্যাট করছিলেন, মাদুরাইয়ের কাছে যজ্ঞ থামিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। বিসলারা মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কেউ কেউ প্রশ্ন তুললেন, ওই পুরোহিতরা পুরো টাকা পাবেন তো? জাক কালিস আউট হয়ে গেলেন ৬৯ করে। নাইটদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চিচিং ফাঁক খুলে দেন এই দু’জন। প্রায় ডুবিয়ে দিচ্ছিলেন ইউসুফ পাঠান। লক্ষ্মীরতন শুক্ল সেমিফাইনালের ইনিংসের ধারেকাছেও যেতে পারলেন না। শেষ বেলায় মনোজ তিওয়ারির আগে তাঁর কাছেই সহ-নায়ক হওয়ার দুর্ধর্ষ সুযোগ এসেছিল। |
শেষ ওভার যখন হচ্ছে, হাতে পাঁচ উইকেট নিয়ে কলকাতার জেতার জন্য চাই ৬ বলে ৯ রান। অদৃষ্টের পরিহাস, ইডেনে যিনি শেষ বলে মিয়াঁদাদোচিত ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন, সেই ডোয়েন ব্র্যাভোর হাতে বল। ক্যাপ্টেন ‘কুল’ এই সময় টিমের আরও তিন-চার জনকে জড়ো করে সম্মেলন শুরু করলেন। যা তিনি কদাপি করে থাকেন। এত বার শলাপরামর্শ করলেন, যা বিশ্বকাপেও কখনও করেননি! গ্যালারিতে আবেগপ্রবণ শাহরুখ তখন মনোবল হারিয়ে ফেলা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কেকেআর জার্সি প্রার্থনায় নিথর। গম্ভীর আউট হওয়ার পরে সেই যে প্যাড পরে বসেছিলেন, এখনও তাই। ও দিকে গ্যালারিময় হলুদ জার্সি চিৎকার করছে ‘সিএসকে, সিএসকে।’ আপাদমস্তক নার্ভের লড়াই। বোলারকে বুদ্ধি করে ফুলটস আর স্লোয়ার দিতে হবে। ব্যাটসম্যানকে মাথা ঠান্ডা রেখে ইম্প্রোভাইজ করতে হবে। প্রথম দুটো বলে এক রান করে তৃতীয় বলে ধোনির উপেক্ষিত মনোজ তিওয়ারি ফাইন লেগ দিয়ে চার মারলেন। পরের বলটা আবার চার। মনোজ দৌড়তে শুরু করলেন নিজেদের ডাগ আউটের দিকে। ব্র্যাভো জীবদ্দশাতেই ফিরে পেলেন শোকাহত করার সুর। আর তিওয়ারি, তিনি যে ভেঙে দিলেন ধোনির এত কালের মিথ। ফাইনালে নাকি তিনি হারেন না! চিত্রনাট্য যেন শাহরুখের সফল ছবির মতোই, যেখানে কলকাতার ছেলে কলকাতার হয়েই উইনিং স্ট্রোক মারলেন। গোটা আইপিএলে ফুটে না উঠেও ফাইনালকে রঙিন করে দিয়ে গেলেন মনোজ তিওয়ারি। যত দিন কলকাতা ক্রিকেট থাকবে, বাঙালির মনে তিনি থাকবেন। আর ওই ছবিটাও থেকে যাবে পরের বছর আইপিএল ফাইনাল হওয়ার আগে পর্যন্ত। ব্যাট তুলে দৌড়তে দৌড়তে মনোজ ছুটছেন কেকেআর ডাগআউটের দিকে। তার আগে ১৯তম ওভার বল করছেন হিলফেনহস। ওই ওভারের শেষ বলে ফুলটস মারতে গিয়ে সাকিব ক্যাচ আউট হয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কোমর উচ্চতার ওপরে ফুলটস পড়ায় আম্পায়ার ওটা ‘নো বল’ দিলেন, সাকিব নিলেন দুই। তার পরের ফুলটসে ফাইন লেগ দিয়ে একটা চার মারলেন। দু’বলে উঠল সাত। সাকিবের ওই ক্যামিও ইনিংস যেন কোথাও পদ্মা আর গঙ্গাকে অন্তত একটা সপ্তাহের জন্য মিলিয়ে দিয়ে গেল।
আইপিএল ফাইনালে বিপক্ষ অবিসংবাদী ফেভারিট হলেও কেকেআরের ‘তিন পাত্তি’ ছিল। গম্ভীরের ব্যাট। নারিন-রহস্য। টস জেতার শতকরা ৫০ ভাগ সুযোগ।
আর কোনও সুযোগ বা আর কোনও নামকে এক্স-ফ্যাক্টর হিসেবে ভাবাই যায়নি। কেউ ভাবেইনি, দুশোর কাছাকাছি রান তাড়া করতে নেমে শাহরুখের কেকেআর এমন জমজমাট লড়াই দিতে পারবে।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় গত দু’দিন ধরে স্টার আনন্দে অবিরত বলে যাচ্ছিলেন, তাঁর মতে টস জেতাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ দিন টস হারের পর গৌতম গম্ভীরের শরীরী ভাষা দেখে মনে হল, ঠিক তাই। তৃতীয় পাত্তিটাই ছিল আসল। স্পেড-এর টেক্কা। কেকেআরের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বাসরঘরে যেন টসে হারাটাই প্রথম ঢুকে পড়ল।
গম্ভীর ফাইনালে এমন টার্গেটের সামনে পড়লেন, যা গত পাঁচ বছরের আইপিএলে তাড়া করে আজ পর্যন্ত কেউ জেতেনি। প্রথম ওভারেই তিনি বোল্ড। তখন দীর্ঘশ্বাস শোনা যাচ্ছিল ম্যাকালামের জন্য। বাধ্য হয়ে আজ যাঁকে বাদ দিতে হয়েছে। মনবিন্দর বিসলা নামক কাউকে জাগতিক হিসেবের মধ্যেই ধরা হয়নি। ফাইনালে যে ধোনির দর্পচূর্ণ তাঁর মাধ্যমে হবে, তিনি কোনও ফ্যাক্টর হতে পারেন, তাঁকে নিয়ে যে আলাদা একটা প্যারা হতে পারে, কেউ ভাবেইনি। চিপক মাঠেই এক উইকেটকিপার গ্যারি সোবার্সের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে লাঞ্চের আগে ৯৬ করেছিলেন। বিনা হেলমেটে হল-গ্রিফিথের বিরুদ্ধে। তার পাশে আজকের বিসলা শিশু চলচ্চিত্র উৎসব! কিন্তু সে দিনের ফারুক ইঞ্জিনিয়র অন্তত মাঠে বসে দেখলেন, আজও কিপাররা সত্যি বলতে কী, আইপিএল ফাইনাল শুরুর আগে বাস্তু আর ফেং শু্যই, এই শব্দ দুটো চেন্নাইয়ে বসে এত শুনলাম যে, ডট বল বা ধোনির হেলিকপ্টার শটকে অন্য কোনও খেলায় ব্যবহৃত অভিব্যক্তি মনে হচ্ছিল। এ-ও শুনলাম, ২০১০-এর আইপিএলে যখন চেন্নাইয়ের অবস্থা ভাল যাচ্ছে না, তখন নতুন করে বাস্তু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে দু’টো টিমের ডাগআউট বদলে দেওয়া হয়। ভরা আইপিএল মরসুমের মধ্যে ঘরের আর বিপক্ষ টিমের ডাগআউট বদলে দেওয়া আর কখনও ঘটেছে বলে কেউ শোনেনি। তার আগের মরসুমে তো চিদম্বরম স্টেডিয়ামে ঘাস ছাঁটার ধরন বদলে দেওয়া হয় বাস্তু মেনে!
সন্ধেবেলা প্রেসবক্সে ঢোকামাত্র শুনলাম, আজকের বৃহত্তম বাস্তু হল টস। যে করে হোক, চেন্নাইকে টসে জিততেই হবে। মাদুরাইয়ের কাছে টিমের কল্যাণ কল্পে যে বিশাল যজ্ঞ চলছে, তার অন্যতম মিশন নাকি চেন্নাইকে টসে জেতানো। কারণ টস জিতে এখানে ব্যাট করতে পারলে মোটামুটি বোনাস ৩০ রান নিয়ে মাঠে নামা যায়।
আরও একটা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছিল। যা শুরু করেছিলেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের লোকজন। এঁরা বলতে থাকেন, আমাদের ম্যাচের দিন একেবারেই নিচু বংশের উইকেট করা হয়েছিল। যাতে আমাদের পেসাররা কোনও সুযোগ না পায়। স্পিনাররা পেতে পারে, কিন্তু আমাদের তো তেমন স্পিনার নেই। ম্যাচ শেষ হওয়া মাত্র গ্রাউন্ডসম্যান জল দিতে আর রোল করতে শুরু করেছে। কেকেআরের সঙ্গে কিছুতেই ওরা নিচু বাউন্সের উইকেট করবে না। ওখানে খেলবে আপাদমস্তক ব্যাটিং উইকেটে। রবিবার মাঠে ঢুকে দেখা যায়, গুজবটা একদম ঠিক ছিল। উইকেট থেকে সম্পূর্ণ ঘাস ছেঁটে এমন একটা ভূখণ্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, যার উপর দিব্যি এই শহরের বাসিন্দা রমেশ কৃষ্ণন টেনিস প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন!
সবচেয়ে আশ্চর্যের, নিয়ম অনুযায়ী প্লে-অফ থেকে মাঠ তৈরির দায়িত্ব চলে যায় আইপিএল কমিটির কাছে। সিএসকে-র অধিকারের মধ্যেই এটা পড়ে না। অথচ টানা দু’বারই এবং গত বছরও এমন পিচ করা হল, যা পুরোপুরি হলুদ জার্সির জন্য ডিজাইনার! দু’বারের চ্যাম্পিয়ন হয়েও কোটি টাকার যজ্ঞ করানো, বোর্ডের কমিটিকে প্রভাবিত করা, মরিয়া ঘাঁতঘোঁত খোঁজার মধ্যে সিএসকে-র অনেক ক্রিকেটীয় দক্ষতা চাপা পড়ে যায়। তাদের অনেক স্বতঃস্ফূর্ত দক্ষতা দেখা হয় সন্দিগ্ধ ভাবে। খেলা শেষে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পরিচালকদের একজন এসএমএস পাঠালেন, গম্ভীর যেন এক বার মন্দিরে ঘুরে যান। কেকেআর কোটি টাকার যজ্ঞ করেনি। কিন্তু মা ভবতারিণীর প্রসাদ খেয়েছিল। মন দিয়ে পুজো করলে কোটি টাকার যজ্ঞের প্রয়োজন হয় না।
ধোনিরা যখন তাদের ইনিংস শেষে বিজয়ী মোটামুটি ঠিক করে ফেলেছেন, তখনও তাঁরা ভাবেননি একদল বাচ্চাকে নিয়ে ম্যাচ শেষে ভিকট্রি ল্যাপ কারা দেবে। বিপক্ষের ক্ষতি করতে গিয়ে এত ভাল উইকেট করা হয়েছে যে, হলুদ শস্যক্ষেত্রের দিকে তা বুমেরাং হিসেবে ধেয়ে আসবে! পোকা হয়ে আক্রমণ করবে শস্যক্ষেতের অন্তঃকরণকেই! দ্বিতীয় ইনিংসও একই রকম জমাটি থেকে যাবে।
বীরেন্দ্র সহবাগের টস জিতে এ মাঠে ফিল্ড করার সিদ্ধান্ত উন্মাদোচিত মনে করেছিল ভারতীয় ক্রিকেটমহল। এ দিন শুনলাম, ভারত অধিনায়কের দৌড়ে এই একটা সিদ্ধান্ত তাঁকে অনেক পিছিয়ে দিল। রবিবার মাঝরাতে সহবাগের নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে, কেকেআর তো দেখাল পরে ব্যাট করে ২০০ চেজ করে জেতা যায়। শোলে-র বীরু জয়ের হয়ে গব্বরের ডেরায় প্রতিশোধ নিয়েছিল। এখানে ধোনির বিরুদ্ধে বীরুর হয়ে প্রতিশোধ নিল জয়। অর্থাৎ গম্ভীর। খেলার পর উল্লসিত শাহরুখ মাঠে ডিগবাজি খেলেন। বাচ্চাদের নিয়ে অনায়াসে ঢুকলেন। ইন্টারভিউ দিলেন। ওয়াংখেড়েতে ঢুকেছিলেন পুরস্কার বিতরণের পর। এখানে ঢুকলেন তার আগেই। মুখে ‘সরি’ বললেন ওয়াংখেড়েতে নিজের আচরণের জন্য। অথচ সদর্পে দেখালেন, যে ভদ্রলোকের কমিটি আমায় ব্যান করেছে, তাঁর ছেলে রীতেশকে নিয়ে এসেছি! আর দ্যাখ, মাঠের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছি। লেখার শুরুতে যে স্কোরগুলোর কথা বলেছি, তার সঙ্গে এটাও যোগ করে নিন। আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে শাহরুখ যেন জবাব দিলেন ওয়াংখেড়ের সেই লোকগুলোকেও। সে দিন ক্রিকেট খেলতে পারেননি। এ দিন ‘ছম্মক ছল্লো’ অবধি নাচলেন লাইভ ক্যামেরার সামনে! দেখালেন, ফিল্মের মতোই ডনকে হারানো শুধু মুশকিল নয়, অসম্ভবও!
|
আইপিএল ফাইভের সেরা |
স্ট্র্যাটেজি
ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে বসিয়ে ফাইনালের মতো ম্যাচে মনবিন্দর সিংহ বিসলাকে খেলানো। বালাজি চোট পাওয়ার পর অনেক বিশেষজ্ঞই বলেছিলেন ম্যাকালামকে খেলিয়ে সাকিবকে বসানো হোক। কিন্তু গম্ভীর তা করেননি। বিসলাকে খেলানোটাই গোটা টুর্নামেন্টের সেরা চাল।
|
শট
বেঙ্গালুরু-পুণে ম্যাচে এবি ডেভিলিয়ার্সের রিভার্স সুইপে আশিস নেহরাকে ছয় মারা। শেষ ওভারে ২৩ দরকার, ওই অবস্থায়, মারাত্মক চাপের মুখে নেহরার অফ স্টাম্পের উপর পড়া ফুল লেংথ ডেলিভারিকে থার্ডম্যানে ছয় মেরেছিলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান। আরসিবি-ও হারিয়ে দেয় সৌরভের দলকে।
|
ডেলিভারি
সুনীল নারিনের যে বলে সচিন তেন্ডুলকর বোল্ড হন ওয়াংখেড়েতে। অফস্টাম্পের হাত খানেক বাইরে পড়ে দ্রুত অফ ব্রেক করে সচিনের স্টাম্প নড়িয়ে দেয়। ব্যাকফুটে চলে আসা সচিন বুঝতেই পারেননি নারিনের বলটা যে অফ ব্রেক করবে। বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানকে দু’ভাবে বোকা বানিয়েছিলেন নারিন। এক, গ্রিপ দেখে বুঝতে দেননি বলটা কোন দিকে যাবে। দুই, টার্নের পরিমাণ যে অতটা হবে, সেটা সচিন বুঝতে পারেননি।
|
মুহূর্ত
প্লে অফে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে বড় রান তাড়া করতে নেমে সচিন যখন নিজের উইকেট ছুড়ে দিলেন ডোয়েন স্মিথকে রান আউট হওয়া থেকে বাঁচাতে। সচিনের উইকেটের থেকেও আর কারও উইকেট বেশি মূল্যবান হতে পারে, এ দৃশ্য সম্ভবত আইপিএল ছাড়া বিশ্ব ক্রিকেটে আর কোথাও দেখা যাবে না। ওই সময় স্মিথ অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন সচিনের থেকে। টিমের জন্য নিজের উইকেট ছুড়ে দিতে একটুও ভাবেননি বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানও।
|
টার্নিং পয়েন্ট
রাউন্ড রবিনের শেষের দিকে ডেকান চার্জার্সের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুর হার। ওই একটা ম্যাচের ফলে চেন্নাই সুপার কিংসের সামনে ফাইনালে ওঠার রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যায়। এক রকম বিদায় ঘণ্টা বেজে যাওয়ার পরেও!
|
|
|