প্রচণ্ড গরমেও বিদ্যুৎ নেই, হাতপাখা ও হ্যারিকেনকে সঙ্গী করে দিন কাটাচ্ছেন চিলাপাতা রেঞ্জের বনকর্মী আবাসনের বাসিন্দারা। গত প্রায় চার মাস ধরে ওই পরিস্থিতিতে রয়েছেন বাসিন্দারা। বন্যপ্রাণী তিন নম্বর বিভাগের ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর জানান, চিলপাতা রেঞ্জে বিদ্যুতের মাত্র তিনটে মিটার ছিল। একটি মিটার থেকে রেঞ্জ অফিস, একটি মিটার থেকে বন বাংলো এবং একটি মিটার থেকে প্রায় ৪০-৪৫টি বনকর্মী আবাসনে বিদ্যুৎ পৌঁছত। বাড়ি বাড়ি মিটার না থাকায় কে কত বিদ্যুৎ খরচ করছেন তা বোঝার উপায় ছিল না। রেঞ্জ অফিসার থেকে শুরু করে বিট অফিসার ও বন কর্মীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে পদ মযর্দার ভিত্তিতে বিদ্যুতের টাকা নেওয়া হত। জাখর বলেন, “বিদ্যুতের বিলের তুলনায় টাকা কম উঠত। প্রায় ২-৩ বছর ধরে এভাবে বিদ্যুতের বকেয়া জমতে জমতে তা ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় পৌঁছয়। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে বকেয়া বিল না মেটানোয় বিদ্যুৎ দফতর থেকে বনকর্মী আবাসনগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়। আমরা ধাপে ধাপে ওই বিল মেটানোর চেষ্টা করছি। পাশাপাশি প্রতিটি আবাসনে আলাদা করে মিটার লাগিয়ে যাতে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় সে চেষ্টা হচ্ছে।” |
রেঞ্জ অফিসার গোপাল সরকার জানান, চিলাপাতায় বন দফতরের ৪০টি ও বন উন্নয়ন নিগমের ৫টি আবাসন রয়েছে। দুই শতাধিক বাসিন্দা থাকেন। আবাসনে বাসিন্দা রুমা বসু, বাসন্তী বর্মন, পুরোবালা রায়, রিনা মাঝি জানান, স্কুল পরীক্ষার সময় ফ্রেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। তাঁরা বলেন, “ওই সময়ের পর থেকে আমরা অন্ধকারে রয়েছি। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছেন না। রাতে ঘুমোতে পারছি না। টিভি রয়েছে। ফ্যান রয়েছে। অথচ বিদ্যুৎ থাকায় সেগুলির দিকে তাকিয়ে আমাদের দিন কাটাতে হচ্ছে। এখন একমাত্র ভরসা হাত পাখা আর হ্যারিকেন।” রেঞ্জ অফিসার বলেন, “চার মাস ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। সারাদিন জঙ্গল টহল দেওয়ার পর এই গরমে ঘরেও স্বস্তি পাচ্ছেন না বনকর্মীরা। তাঁদের অবস্থা আমরা বুঝতে পারছি। তাঁরা বার বার আমার কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করছেন। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।” পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি লিমিটেডের আলিপুরদুয়ারের সহকারি বাস্তুকার প্রণব দাস বলেন, “বিদ্যুতের বিল বকেয়া থাকার জন্য লাইন কাটা হয়েছিল। তা মেটানো হলে ফের সংযোগ দেওয়া হবে।” |