রিং বাঁধ তৈরির জন্য কতটা জমির প্রয়োজন তা আগেই জানানো হয়েছিল জমির মালিকদের। সেই মতো জমিও দিয়েছিলেন তাঁরা। কাজও শুরু হয়। কিন্তু বাঁধের কাজ কিছুটা হওয়ার পরেই বেঁকে বসেন জমির মালিকেরা। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রিং বাঁধ তৈরির কাজ। এই অবস্থায় সামনে বর্ষার আগেই রিং বাঁধের কাজ শেষ করতে না পারলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর-২ ব্লকের অধীন কুমড়োপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বামুনের ঘেরি গ্রামের কাছে মনি নদীর বাঁধ প্রায় আধ কিলোমিটার ধরে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সামনেই বর্ষা। ফলে বাঁধ মেরামত না করে রিং বাংধ দিয়ে নদীর জল আটকানোর সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্চায়েত ও সেচ দফতর। সেই মতো ২০১১ সালের শেষ দিকে রিং বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন কাজ চলার পরে জমির মালিকদের বাধায় বাঁধ তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় পাঁচ মাস ধরে কাজ বন্ধ। বামুনের ঘেরি গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রতি বছর বাঁধ ভাঙছে। বাঁধ পাকাপাকি মেরামত না করে আমাদের জমি নিয়ে রিং বাঁধ দিয়ে জল আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। |
তাঁদের আরও অভিযোগ, বাঁধের জন্য প্রশাসন বিঘার পর বিঘা জমি নিলেও তাঁরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি। এখন রাজ্য সরকার জমির বদলে ক্ষতিপূরণের কথা বললেও এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত, সেচ দফতর থেকে কিছু বলা হয়নি। গ্রামবাসী সচ্চিদানন্দ মণ্ডল, গোবিন্দ মণ্ডলরা বলেন, “কোনও কিছু না জানিয়েই ওরা তড়িঘড়ি রিং বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করে দেয়। আমাদের দাবি, নদীবাঁধ থেকে কতটা দূরে রিং বাঁধ তৈরি হবে তা জানাতে হবে। জমির ক্ষতিপূরণ কী ভাবে পাওয়া যাবে তা ওরা জানায়নি। এমনকী গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব, সেচ দফতর ইচ্ছামত রিং বাঁধের সীমানা করে দেওয়ায় আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।”
এ ব্যাপারে কুমড়ো গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক সন্দীপ শী বলেন, “রিং বাঁধ তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে গত ২৩ এপ্রিল গ্রামবাসীদের ডাকা হয়েছিল। সেখানে তাঁদের দাবিগুলি বিস্তারিত বিডিও এবং সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে।” পঞ্চায়েতের সচিব সুনীল পুরকাইতের বক্তব্য, “আমরা কারও জমি জোর করে নিতে চাই না। রাজ্য সরকারের ঘোষণামত চাষিদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরেই রিং বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হবে।”
মথুরাপুর-২ এর বিডিও দেবর্ষি রায় বলেন, “বিষয়টি দ্রুত খোঁজ নিয়ে গ্রামবাসী ও পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে রিং বাঁধ তৈরির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।” রায়দিঘি সাবডিভিশনের সেচ দফতরের সহকারি বাস্তুকার অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মাত্র দু’প্তাহ হল আমি কাজে যোগ দিয়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে যাতে ফের কাজ শুরু করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |