কালীঘাট মন্দির
সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ, ভক্তেরা ঢুকবেন গর্ভগৃহে
লকাতা হাইকোর্টের একটি নির্দেশের জেরে প্রায় এক মাস ধরে কালীঘাট মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারছিলেন না দর্শনার্থীরা। সোমবার হাইকোর্টের সেই নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। যার ফলে, আগের মতোই ফের মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের সুযোগ মিলবে।
গর্ভগৃহে প্রবেশ নিয়ে হাইকোর্টের ওই নিষেধাজ্ঞার পরে সুপ্রিম কোর্টে একটি আপিল-মামলা করেছিলেন মন্দিরের সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক গোপাল মুখোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল: গর্ভগৃহে ঢুকে বিগ্রহের চরণ স্পর্শ করা এবং পুজো দেওয়ার রীতি মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই চলে আসছে। শুধু কালীঘাট নয়, এ দেশের বহু মন্দিরেই এই রেওয়াজ রয়েছে। তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে এ দিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি দীপক বর্মা এবং এস জে মুখোপাধ্যায়ের অবকাশকালীন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। ফের জুলাইয়ে এই মামলার শুনানি হবে।
সম্প্রতি সুরভি বসু এবং সমীর বসু নামে এক দম্পতি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় তাঁরা বলেছিলেন, প্রতি বছর সারা দেশ থেকে লক্ষাধিক ভক্ত কালীঘাট মন্দিরে আসেন। তাঁদের অনেকেই পাণ্ডাদের জুলুমবাজির শিকার হন এবং গর্ভগৃহে পুজো দেওয়ার সময়েও নানা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। এই ব্যবস্থা বন্ধ করার জন্য তাঁরা আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন।
কালীঘাট মন্দিরের গর্ভগৃহ। ফাইল চিত্র
সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২০ এপ্রিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল এবং সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল: ভিআইপি এবং সাধারণ দর্শক কেউই গর্ভগৃহে ঢুকে দর্শন বা পুজো করতে পারবেন না। শুধু বিগ্রহের পোশাক পরিবর্তন এবং গর্ভগৃহ পরিষ্কারের জন্য এক জন পূজারি ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন। এর সঙ্গেই মন্দিরের পরিবেশ উন্নয়ন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সৌন্দর্যায়ন নিয়েও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
হাইকোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছিল, কলকাতা পুলিশের এক জন ডেপুটি কমিশনার মন্দিরের শান্তিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। এসি পদমর্যাদার এক জন পুলিশকর্মীকে গর্ভগৃহের বাইরে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে থাকতে হবে। নিরাপত্তা এবং সব কিছু সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য মন্দির, গর্ভগৃহ ও মন্দির সংলগ্ন যে কোনও জায়গায় প্রয়োজনে সিসিটিভি বসানো যাবে। দিনের কোনও কোনও সময়ে কিছুক্ষণের জন্য গর্ভগৃহের সিসিটিভি বন্ধ রাখা যাবে। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনারকে প্রতিদিন মন্দির পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বিশেষ ভাবে তৈরি বন্ধ বাক্সে ভক্তেরা দান বা প্রণামী দিতে পারবেন। ভিআইপি গেট দিয়ে সাধারণ দর্শনার্থীরা যাতে প্রবেশ না করেন, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।
কালীঘাট মন্দির এলাকায় রাস্তাঘাট সারাই, আলো লাগানো, সৌন্দর্যায়ন ও টালি নালার সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করতেও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ওই নির্দেশের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকরণে বৈঠক করে তড়িঘড়ি মন্দির এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তার সৌন্দর্যায়নের কাজ শেষ করতে বলেন। এ দিনের রায়ে অবশ্য সেগুলির উপরে স্থগিতাদেশ জারি হয়নি। সেগুলি আগের নির্দেশ অনুযায়ী চলবে।
গর্ভগৃহে ঢুকে ভক্তেরা যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিগ্রহ দর্শন করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা গেলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কোনও প্রয়োজন হবে না বলে দাবি করেছেন সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক গোপালবাবু। তিনি বলেন, “মন্দির কমিটি এবং সেবায়েত কাউন্সিল যদি ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই কাজ করতে পারে, তা হলে কালীঘাট মন্দির তার সুনাম ফিরে পাবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.