কালাজ্বরের প্রকোপ বাড়ছে বিহারে
সারা দেশ থেকে যখন কালাজ্বর নির্মূল করতে কেন্দ্রীয় সরকার উঠে-পড়ে লেগেছে, তখন বিহারে এই রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। সেই সঙ্গে আছে সরকারি হাসপাতালগুলির উদাসীনতাও। সেখানে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা তো নেই, নেই প্রয়োজনীয় ওষুধের সংস্থানও। আক্রান্তদের বেশিরভাগই গরিব মানুষ। তাঁদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে চিকিৎসা করার সামর্থ নেই। ফলে ক্রমেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এই অবস্থায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ওষুধ দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্য থেকে বারবার জানানো সত্ত্বেও ওষুধ পাওয়া যায়নি। বিকল্প হিসেবে রাজ্য সরকার কয়েকটি আর্ন্তজাতিক সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে। স্বাস্থ্য দফতরের সচিব সঞ্জয় কুমার বলেন, “কেন্দ্রের কাছ থেকে কালাজ্বরের ওষুধ না পেয়ে আমরা আর্ন্তজাতিক কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে ওষুধ পৌঁছে যাবে।”
স্বাস্থ্য দফতরের এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, গত বছর রাজ্যে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। যা আগের তিনটি বছরের তুলনায় বেশি। প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্র যখন ২০১৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে কালাজ্বর নির্মূল করতে চাইছে, সেখানে বিহারে এই রোগের প্রকোপ কেন ক্রমশ বাড়ছে। ২০১০ সালে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩ হাজারের মতো। এই সংখ্যাটি ছিল ২০০৯ সালে ২১ হাজার। ইতিমধ্যে পটনার গ্রামীণ এলাকা ঝাকনপুরে কিছু রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের মতে, ১৫ বছর পরে পটনায় এই রোগ ফের ফিরে এল। স্বাস্থ্য দফতর বলছে, এই ব্যাপারে তারা অবহিত। কিন্তু এই রোগের ওষুধ জার্মানির একট সংস্থা তৈরি করে এবং তা রাজ্যগুলির কাছে পাঠানোর কথা কেন্দ্রের। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের তরফে কিছু করার নেই বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। তবুও সরকার থেকে কিছু অর্থের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, সরকারি হাসপাতালে যে রোগীরা কালাজ্বরের চিকিৎসার জন্য ভর্তি আছেন তাঁদের প্রতিদিন চিকিৎসার খরচ বাবদ ১৫১ টাকা করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে রোগীর কাছে যাঁরা চিকিৎসার জন্য থাকবেন, তাঁদেরও একই পরিমাণ টাকা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য সচিব বলেন, “আমরা ওই সব রোগীদের এই টাকা দেওয়া শুরু করেছি। তাতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে তাঁদের কিছুটা হলেও সুবিধা হবে।”
সরকারের এই ব্যবস্থা নিয়ে মোটেই খুশি নন রাজ্যের জোট সরকারের শরিক বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সি পি ঠাকুর। সি পি ঠাকুর নিজে কালাজ্বর বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসক। তিনি শনিবার বলেন, “রাজ্যের রাজধানীতে কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে রাজ্য সরকারকে অনেক বেশি তৎপর হতে হবে। শুধু রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর নয়, সামগ্রিক ভাবে সরকারের কাছে এটা উদ্বেগের বিষয় বলে আমি মনে করি।” তাঁর অভিযোগ, “সরকারি হাসপাতালগুলিতে এই রোগের কোনও ওষুধ নেই। আক্রান্তদের দিশেহারা অবস্থা।” রাজ্যসভার সাংসদ সি পি ঠাকুর বলেন, “এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রী গুলাম নবি আজাদের উপস্থিতিতে আমি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি এই ব্যাপারে অবহিত। কেন্দ্র এই বিষয়টি নিয়ে আলাদা ভাবে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।” তাঁর মতে, “রাজ্য সরকারের উচিত এর জন্য আলাদা করে একটি তহবিল গড়া। সেখান থেকে এই রোগের আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত। কেন্দ্রের কাছে এই নিয়ে প্রস্তাব দিয়ে বলা হোক, সেই টাকা যেন তারা খরচের পরে রাজ্যকে মিটিয়ে দেয়।” তাঁর মতে, “এই রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভাবে পঞ্চায়েতগুলিকে ব্যবহার করা উচিত। রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গ্রামগুলিতে বিশেষ সামাজিক-স্বাস্থ্য কর্মসূচি নীতীশ সরকারকে হাতে নিতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.