গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল
আড়াই কোটির যন্ত্র পড়ে থেকেই নষ্ট, বন্ধ পরিষেবা
স্রেফ পড়ে থেকে থেকে খারাপ হয়ে গেল আড়াই কোটি টাকা দামের একটা যন্ত্র।
কল্যাণীর গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল রাজ্যের একমাত্র ‘কার্ডিও-থোরাসিক রেফারেল’ হাসপাতাল। অথচ, হাসপাতালের ‘সিনেঅ্যাঞ্জিওগ্রাফি’ যন্ত্রটি ২০১০ সালের মাঝামাঝি থেকে বিকল। যন্ত্রটির সংস্কার বা তার বদলে অপেক্ষাকৃত কম দামের অন্য যন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্য দফতরে বারবার আবেদন করা হলেও সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ফলে, পরিষেবা পাচ্ছেন না হৃদরোগীরা। স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “আমার কাছে এ বিষয়ে কোনও তথ্যই নেই। খোঁজ নিয়ে জানব ঠিক কী পরিস্থিতি।”
শুধু এ রাজ্যই নয়, পূর্ব ভারতের অন্যান্য অংশ থেকেও হৃদ্রোগীরা কম খরচে সরকারি চিকিৎসার সুবিধা নিতে আসেন ওই হাসপাতালে। ১৯৮৮ সালে জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন হাসপাতালে ‘সিনেঅ্যাঞ্জিওগ্রাফি’ যন্ত্রটি বসানো হয়। এই যন্ত্রই পেসমেকার প্রতিস্থাপন থেকে হার্ট ব্লকেজ-সহ হৃদ্রোগের যাবতীয় শল্য চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। কলকাতার কোনও সরকারি হাসপাতালে এই যন্ত্রটি না থাকায় গাঁধী হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে একটা সময় কলকাতার হৃদ্রোগীরাও যেতেন।
বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে সিনেঅ্যাঞ্জিওগ্রাফি যন্ত্রটি। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, যন্ত্রটি যিনি চালাতেন, সেই টেকনিশিয়ান বছর দশেক আগে অবসর নেন। তারপর থেকে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাই টেকনিশিয়ানের কাজে ঠেকা দিচ্ছিলেন। ২০০৭ সালে একবার যন্ত্রটি খারাপ হয়। সেই সময় তিন মাস পেসমেকার বসানো, বাইপাস সার্জারি এবং অ্যাঞ্জিওগ্রাফি বন্ধ ছিল। তার পরে ২০১০ সালের মাঝামাঝি ফের বিকল হয় যন্ত্রটি। সারানো না হওয়ায় তার পর থেকে এটি হাসপাতালের তিন তলার ঘরে তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। টেকনিশিয়ানের অভাবের পাশাপাশি যন্ত্রটিরও সংস্কার প্রয়োজন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরে ১১ বার চিঠি পাঠিয়েও কোনও জবাব মেলেনি। প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দামের এই বিদেশি যন্ত্রটির বদলে অপেক্ষাকৃত কম দামের ‘সি আর্ম মেশিন’-এর জন্যও বারবার আবেদন করা হয়েছে। হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস অফিসার অধীর সরকার বলেন, ‘‘সি আর্ম মেশিন সিনেঅ্যাঞ্জিওগ্রাফি মেশিনের মতো সব কাজ না করলেও, পেসমেকার বসানোর কাজে লাগে। সিনেঅ্যাঞ্জিওগ্রাফি যন্ত্র কেনাটা ব্যয়বহুল বলেই সি আর্ম মেশিন চেয়ে আবেদন করেছি। চিঠির পরে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু উত্তর আসেনি।”
হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক সুবল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা আসেন চিকিৎসার আশায়। শুধু একটা যন্ত্রের অভাবে আমরা তাঁদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হই। হাসপাতালে অনেক কিছুর অভাব আছে। কিন্তু সিনেঅ্যাঞ্জিওগ্রাফি বা তার বিকল্প যন্ত্র অবশ্যই জরুরি। সরকারকে বহু বার জানিয়েছি। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আমি নিজে মেল করেছি। কিছুই হয়নি।’’ দেড় মাস ধরে বাইপাস সার্জারির জন্য বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে ওই হাসপাতালে ঘুরছেন মুর্শিদাবাদের তাজকিনা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘কাছাকাছি এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসে উঠেছি। হাসপাতাল থেকে বলছে, যন্ত্র আসতে সময় লাগবে। অপেক্ষা করতে হবে।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.