ঋণগ্রস্ত ৩ রাজ্যকেই আর্থিক সাহায্যের কথা ভাবছেন প্রণব
শ্চিমবঙ্গকে আর্থিক প্যাকেজ দিতে গেলে অন্য দুই ঋণগ্রস্ত রাজ্য, কেরল ও পঞ্জাব আপত্তি তুলতে পারে। তাই তিন রাজ্যের জন্যই আর্থিক প্যাকেজ তৈরির পথে হাঁটতে চাইছে কেন্দ্র। যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে।
প্রায় দু’লক্ষ কোটি ঋণ বোঝা কাঁধে চেপে থাকায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে দফায় দফায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। মমতার সাম্প্রতিক দাবি, তিন বছরের জন্য সুদ ও আসল নেওয়া স্থগিত রাখতে হবে কেন্দ্রকে। এ জন্য রীতিমতো সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তিনি।
মমতার মতো আর্থিক প্যাকেজের দাবিতে সরব হয়েছে অকালি-বিজেপি শাসিত পঞ্জাবও। কংগ্রেস শাসিত হওয়ার কারণে কেরল অবশ্য প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে কিছু বলেনি। কিন্তু শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্য আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় প্রশ্ন উঠবে বুঝেই আজ রাজ্যসভায় অর্থ বিল নিয়ে জবাবি ভাষণে কোনও নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতির পথে হাঁটেননি প্রণববাবু। জানিয়েছেন, তাঁর মন্ত্রক তিনটি রাজ্যের দাবি-দাওয়া খতিয়ে দেখে গ্রহণযোগ্য সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা করছে।
রাজ্যসভায়। বুধবার। ছবি: পিটিআই
অর্থমন্ত্রীর কথায় “আমাকে মনে রাখতে হবে যে, আমি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের প্রতি আমার কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু দেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে ২৮টি রাজ্যের প্রতিই আমার সমান দায়িত্ব। আমি এমন কিছু করতে পারি না যা পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।”
মনমোহন-সরকার অবশ্য বুঝতে পারছে, সরকারের অন্যতম প্রধান শরিক তৃণমূলকে হাতে রাখা
প্রয়োজন। বাজেট অধিবেশেনে বিভিন্ন বিল পাশ করা ছাড়াও আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মমতার সমর্থন ছাড়া কংগ্রেসের প্রার্থীকে জেতানো কঠিন। তাই তাঁর দাবি মেনে পশ্চিমবঙ্গকে কিছু আর্থিক সুরাহা দিতেই হবে বলে মনে করছে কংগ্রেসের একাংশ। কিন্তু সেখানে অন্য রাজ্য যাতে আপত্তি তুলতে না পারে, তাই অন্য দু’টি ঋণগ্রস্ত রাজ্যের জন্যও কিছু প্যাকেজের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে তা ঠিক কী, তা আজ খোলসা করতে চাননি অর্থমন্ত্রী।
তবে পশ্চিমবঙ্গ যে সত্যিই ঋণের পাঁকে ডুবে রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রণববাবু। তিনি বলেন, রাজ্যের ঋণের পরিমাণ এখন ২ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু এর জন্য পরোক্ষ ভাবে বামফ্রন্ট সরকারের নীতিতেই দায়ী করেছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গ যদি ২০০৫ সালেই আর্থিক দায়বদ্ধতা ও বাজেট ব্যবস্থাপনা (এফআরবিএম) আইন পাশ করত, তা হলে দ্বাদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে আর্থিক সুরাহা পেতে পারত। অনেক রাজ্যই সেই সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এফআরবিএম আইন পাশ করতে অনেক দেরি করে। ২০১১ সালে তা করা হয়। তাই মাত্র এক বছরের জন্য অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সুবিধা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এর পরে ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন পরামর্শ দিয়েছে, কিছু রাজ্যের রাজস্ব আয় একই শ্রেণির অন্য রাজ্যের তুলনায় কম। সে বিষয়ে কিছু করা প্রয়োজন। এ জন্য অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পরেই এ বিষয়ে কিছু ঘোষণা হতে পারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.