জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তি
অশান্তির আগুন জ্বলতে পারে, আশঙ্কা বিমানের
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (জিটিএ) তরাই-ডুয়ার্সের কোনও এলাকা অন্তর্ভুক্ত হলে এলাকায় ‘আগুন জ্বলবে’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু।
শনিবার ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় সিপিএম প্রভাবিত আদিবাসী অধিকার রাষ্ট্রীয় মঞ্চের জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত ঘরোয়া সভায় বিমানবাবু বলেন, “আমরা বরাবরই বলছি, জিটিএ-কে পাহাড়ের তিন মহকুমার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। কিন্তু, রাজ্য সরকার তরাই-ডুয়ার্সের কিছু এলাকা জিটিএ-ভুক্ত করার দাবি খতিয়ে দেখতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গড়ায় অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তার উপরে তরাই-ডুয়ার্সের কোনও এলাকার জিটিএ-তে সংযুক্তির পক্ষে রিপোর্ট জমা পড়লে এলাকায় আগুন জ্বলবে বলে আশঙ্কা করছি। আশা করব, পাহাড়ের তিন মহকুমার মধ্যেই জিটিএ গঠন নিশ্চিত করা হবে।”
এ দিন জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির চেষ্টার বিরোধিতার জন্য নাগরাকাটার ইউরোপিয়ান ক্লাব ময়দানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। কিন্তু, অশান্তির আশঙ্কায় কিছু দিন আগেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গকে জনসভার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে সময়ে জানিয়ে দেন, আপাতত ডুয়ার্সে কোনও রাজনৈতিক দলকেই সভা করতে দেওয়া হবে না।
ডিওয়াইএফের ঘরোয়া সভায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
একই ভাবে, অশান্তির আশঙ্কা জানিয়ে ডিওয়াই-কেও সভা করার অনুমতি দেয়নি জলপাইগুড়ি পুলিশ-প্রশাসন। তার পরেই ঠিক হয়, আদিবাসী অধিকার রাষ্ট্রীয় মঞ্চের ঘরোয়া সভায় বিমানবাবু বক্তৃতা দেবেন।
তবে বিকেলে আচমকা ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। লোডশেডিং হয়ে যায়। খালি গলায় মিনিট পাঁচেক বক্তৃতা করেন বিমানবাবু। তিনি বলেন, “মোর্চাকে সভা করার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন, সেটা জানি। সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন মনে করেছে, জনসভা হলে ডুয়ার্সের শান্তিশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটবে। কিন্তু, ডিওয়াইএফআই কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়। সুস্থ রুচির যুব সংগঠন। তাদের জনসভা হলে কী ভাবে শান্তি বিঘ্নিত হবে, জানি না।”
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতৃত্বে ২২টি সংগঠন একযোগে কমিটি গড়ে তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির চেষ্টার বিরোধিতায় আন্দোলন করছে। তাতে সিপিএম সামিল হবে কি না সে প্রশ্নে বিমানবাবু বলেন, “ডুয়ার্সের পরিস্থিতি সম্পর্কে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করব। তার আগে এ নিয়ে মন্তব্য করব না।” তবে কেউ সিপিএমের সদস্য-সমর্থক না-হলেও তাঁদের সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রীয় মঞ্চের ব্যানারে আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে আন্দোলন করতে যে তাঁদের ছুঁৎমার্গ নেই, তা-ও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। বিমানবাবু বলেন, “কেউ সিপিএম সদস্য-সমর্থক না হলেও আদিবাসী অধিকার রক্ষা মঞ্চে যুক্ত হতে পারেন। কারণ, এই মঞ্চ দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসীদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে।” আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বীরসা তিরকি অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, বাম আমলে তরাই-ডুয়ার্সের চা বলয়ের আদিবাসীদের জন্য রাজ্য সরকার কী করেছে তা নিয়েই। তাঁর অভিযোগ, “বিমানবাবুর দল তরাই-ডুয়ার্সের প্রতি বৈষম্যমূলক মনোভাব দেখানোয় সমস্যা বেড়েছে। ওঁরা তরাই-ডুয়ার্সকে জিটিএ-র বাইরে রাখার দাবি করলেও বিধানসভায় সিপিএমের বিধায়করা তা নিয়ে সরব হচ্ছেন না কেন? আন্দোলনই বা করছেন না কেন, তা-ও স্পষ্ট নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.