প্রাকৃতিক দুর্যোগে বোরো চাষ নষ্ট হওয়ায় দেনার দায়ে ফের এক চাষির আত্মহত্যার অভিযোগ উঠল ‘শস্যগোলা’ বর্ধমানে। আগের সব ঘটনার মতোই প্রশাসন অবশ্য দাবি করছে, পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা।
যে চাষি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ, তাঁর নাম সন্তোষ ঘোষ (৩৫)। বাড়ি আউশগ্রামের চক রাধামোহনপুরে। তাঁর নিজের ৯ বিঘা জমি আছে। তার সঙ্গে পারিবারিক কিছু জমি মিলিয়ে মোট ১৫ বিঘায় তিনি বোরো ধান চাষ করেছিলেন। পরিবারের দাবি, আগে ধান বিক্রি করে দাম না পাওয়া এবং চাষের জন্য তাঁর লাখখানেক টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল। সেই অবসাদেই বৃহস্পতিবার তিনি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। শুক্রবার বিকেলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবার মৃতদেহের ময়না-তদন্ত করানো হয়।
মৃতের এক আত্মীয় মাবলু ঘোষ জানান, সন্তোষবাবুর বাড়িতে তাঁর স্ত্রী-ছেলে ছাড়াও বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেলেও আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় নিয়মিত তাঁদের অর্থসাহায্য করতেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা উপেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মাসখানেক আগে কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টির জেরে গ্রামের সকলেরই বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। সন্তোষের ১৫ বিঘা জমির সব ধানই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার জেরে অশান্তিতে ভুগছিলেন উনি।”
গ্রামের বাসিন্দা, সম্পন্ন চাষি গণেশ ঘোষের দাবি, “মহাজনদের কাছ থেকে এবং কিষাণ ক্রেডিট কার্ডে প্রায় ১ লক্ষ টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল সন্তোষের। আমি নিজেও ওকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। স্থানীয় একটি চালকল ও সমবায়ে চাল বিক্রি করেও টাকা পায়নি ও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সব ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এসবের জেরে বাধ্য হয়েই ও আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।” বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা অবশ্য বলেন, “পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই চাষি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে শুনেছি।” বর্ধমান (উত্তর) মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্যকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। |