শিক্ষাবর্ষ শুরুর চার মাস পরেও কোচবিহারের ৩০টির বেশি হাই স্কুলে চাহিদা মতো সরকারি বই পৌছয়নি। বিপাকে পড়ুয়ারা। ক্ষুব্ধ শিক্ষক ও অভিভাবকেরাও। অভিযোগ, জানুয়ারি মাসে শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও বই না পৌছনোয় স্কুলগুলিতে প্রথম ইউনিট টেস্ট সময় মতো নেওয়া সম্ভব হয়নি। মে মাসে দ্বিতীয় ইউনিট টেস্ট হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হবে কিনা সংশয় রয়েছে। কিন্তু কবে নাগাদ সমস্ত পড়ুয়াদের বই দেওয়া যাবে সেই বিষয়ে সর্বশিক্ষা মিশনের কর্তারা স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। মিশনের কোচবিহার জেলা আধিকারিক আমিনুল আহসান বলেন, “শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগে এআই’রা স্কুলগুলির যে চাহিদার কথা জানান সেই মতো বই সরবরাহ করা হয়। পরে কিছু স্কুল বর্ধিত চাহিদার কথা জানায়। তার ভিত্তিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বাড়তি বই চাওয়া হয়েছে। এলে দেওয়া হবে।” রাজ্য শিক্ষা দফতর এ বছর সর্বশিক্ষা মিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলে সরকারি বই সরবরাহ শুরু করেছে। শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য নির্দিষ্ট কত বই দরকার সেই তালিকা স্কুলগুলি থেকে নেওয়া হয়। কিন্তু বহু স্কুলে নতুন ভর্তি প্রক্রিয়ার পরে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে সমস্যা হয়। পুরানো চাহিদা মতো বই সব স্কুলে পৌছয়নি বলেও অভিযোগ। জেলার ২০টি স্কুল সমস্যার কথা জানিয়ে বাড়তি বই চেয়ে আর্জি জানায়। বিভিন্ন সার্কেল অফিসেও স্কুলের আবেদনপত্র জমা পড়ে। জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের বিজ্ঞান-শিক্ষা কো-অর্ডিনেটর মনোরঞ্জন রায় বলেন, “সবমিলিয়ে ১৫ হাজার পড়ুয়ার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের সরকারি বই চেয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বই পাওয়া গেলে ঘাটতি মিটবে।” বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকেরা ভরসা রাখতে পারছেন না। দেওয়ানহাট হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির কোচবিহার জেলা সম্পাদক শিশির সরকার বলেন, “জেলার অনেক স্কুলেই সমস্যা রয়েছে।” তুফানগঞ্জের এনএনএম হাই স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক গোপাল বিদ্যানন্দ বলেন, “ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের প্রতি ক্লাসে বইয়ের ঘাটতি আছে। চাহিদা মতো বই পাইনি।’’ একই বক্তব্য কোচবিহারের ঢাংঢিংগুড়ি হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক সৌমেন নন্দীর। ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবিটিএ’র কোচবিহার জেলা সহকারি সম্পাদক সুজিত দাস বলেন, “সরকারি বই বাজারে পাওয়া যায় না। অন্তত ৩০টি স্কুলের পড়ুয়ারা বিপাকে। দ্রুত সমস্যা মেটানো না হলে আন্দোলনে নামবো।’’ তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি নিরঞ্জন দত্ত বলেন, “পর্যাপ্ত বই ছাপা হয়েছে। কিন্তু কিছু আমলার গাফিলতিতে সরবরাহে সমস্যা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।” |