ভাঙন রোধের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই ভেঙে পড়ল ভাগীরথী তিরের বৈকুন্ঠপুরের অসম্পূর্ণ স্পার।
ভাঙন প্রতিরোধ দফতরের কর্তাদের সাফাই, গ্রামবাসীরা স্পার তৈরির বিধি নিষেধে একেবারেই কান দেননি। নির্মীয়মাণ ওই স্পারের উপরে চলেছে গাড়ি, গররু, সমান তালে। ভার নিতে না পেরে তাই সে পড়েছে স্পার।
রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকের এই গ্রামে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভাগীরথীর ভাঙনে প্রায় ৭০ মিটারের পিচের সড়ক ধসে পড়ে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রঘুনাথগঞ্জ-আজিমগঞ্জ যোগাযোগ। ভাঙন রুখতে মার্চের শুরুতেই ভাঙন প্রতিরোধ দফতরের রঘুনাথগঞ্জ ডিভিশনের তরফে ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে জরুরি ভিত্তিতে বালিবোঝাই বস্তা ফেলে কাজ শুরু হয়েছিল। কাজ শেষ হওয়ার আগেই রবিবার ফের ভাগীরথীতে তলিয়ে গিয়েছে সেই রাস্তা।
জঙ্গিপুরের এসডিও এনাউর রহমান বলেন, “স্পারটি ধসে পড়ার কারণ খতিয়ে দেখতে দফতরের কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। আপাতত ওই এলাকায় যেতে গ্রামবাসীদের বারণ করা হয়েছে।” |
রাস্তা উধাও। বৈকুন্ঠপুরে ছবিটি তুলেছেন অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়। |
ভাঙন প্রতিরোধ দফতরের সহকারী বাস্তুকার তমালকান্তি ঘোষ বলেন, “ধসে পড়া অংশে ভাঙন ঠেকাতে বিভাগীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো অস্থায়ী ভাবে কাজ শুরু হয়। আমরা বার বার বোঝানো সত্ত্বেও গ্রামবাসীরা ওই রাস্তায় যাতায়াত করছিলেন। ওঁদের দাবি ছিল, যান চলাচলের জন্য বালির বস্তা যেন ফেলা না হয়।” তবে ওই বিভাগের কর্তাদের একাংশ মেনে নিয়েছেন সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এই কাজ করার জন্যই ফের বৈকুন্ঠপুরের ওই স্পার ধসে পড়েছে।
অতিরিক্ত যান চলাচল ও হাঁটা চলা করার জন্য ওই স্পারটি ধসে পড়েছে বলে মনে করচেন গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশও। এ ব্যাপারে নির্দেশও টাঙানো হয়েছিল। তবুও গ্রামবাসীদের বোঝানো সম্ভব হয়নি। এ বার তারই খেসারত দিতে হচ্ছে।
তবে এটাও সত্যি যে বছর দুয়েক আগে প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ করে বৈকুন্ঠপুর গ্রামে ভাগীরথীর ভাঙন ঠেকাতে পাথর দিয়ে এক কিলোমিটার স্পার তৈরি করা হয়েছিল। দু’বছরের মাথায় ৭০ মিটারের ওই রাস্তাটি ধসে পড়ে। পুনরায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়। দু বছরের মধ্যেই কেন স্পার ভেঙে পড়েছিল? তার উত্তর অবশ্য মেলেনি।
রানিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নীলিমা খাতুনের বাড়ি ভাগীরথীর তীর ঘেঁষা ওই গ্রামে। তিনি বলেন, “ধসের ফলে পিচ সড়কটি বন্ধ। ফলে প্রায় ১৫টি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। কোনও রকমে হাঁটা পথে চলাফেরার জায়গা রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, দু বছর আগে যখন স্পার দেওয়া হচ্ছিল তখনও তাঁরা কাজের মান নিয়ে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু সে কথায় কর্ণপাতই করা হয়নি। |