নগরায়ণের ফলে ছোট-বড় আবাসন ছাড়াও গড়ে উঠছে শপিং মল, বিপিও-সহ নানা ধরনের সংস্থার হাজারো দফতর। আর তাদের সুরক্ষায় চাহিদা বাড়ছে তালিমপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীর। এর ফলে এ রাজ্যের বেকার তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের একটি বাড়তি দরজা খুলে যাচ্ছে বলে মনে করে কারিগরি শিক্ষা দফতর। তাই তালিম পাওয়া নিরাপত্তাকর্মী জোগান দিতে জেলায় জেলায় প্রশিক্ষণ শিবির চালানো হচ্ছে রাজ্যের উদ্যোগেই। প্রান্তিক জেলা পুরুলিয়ার ঝালদায় এক মাসের তালিমের পরে ৩০০ জন যুবক ইতিমধ্যেই নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি পেয়ে গিয়েছেন বলে জানান কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়।
সরকারি উদ্যোগে কী ভাবে দেওয়া হচ্ছে এই প্রশিক্ষণ? সেন্ট্রাল অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রাইভেট সিকিওরিটি ইন্ডাস্ট্রি বা সিএপিএসআই-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কারিগরি শিক্ষা দফতরের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ বিভাগ। দেশের সব বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়েই গড়া হয়েছে সিএপিএসআই। তাদের তরফে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের সাহায্য নিয়ে তালিম দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। তালিমের পরে সকলকে রাজ্যের ন্যূনতম মজুরির চেয়ে বেশি মাইনের চাকরি দিতে হবে বলে সিএপিএসআই-এর সঙ্গে চুক্তিও করেছে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ বিভাগ।
রবিবরঞ্জনবাবু জানান, ঝালদায় এক মাসের প্রশিক্ষণ শিবিরের পরে মার্চেই ৩০০ শিক্ষার্থীর হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই বাঁকুড়ার ছাতনা, বর্ধমানের ওরগ্রাম, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট এবং যাদবপুরে একই ধরনের প্রশিক্ষণ শিবির বসবে, আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “বছরে অন্তত পাঁচটি প্রশিক্ষণ শিবির করা হলে ১৫ থেকে ২০ হাজার নিরাপত্তাকর্মী পাওয়া সম্ভব।” তিনি জানান, প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, রাজ্যে কম করে পাঁচ লক্ষ নিরাপত্তাকর্মী প্রয়োজন। নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের ফলে এই চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
ওই সব শিবিরে কী ধরনের তালিম পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা?
সিএপিএসআই-এর তরফে মাজ্জি রাজশেখর বলেন, “কম করে ২০ দিন ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে শারীরিক সক্ষমতার তালিম।” তিনি জানান, গ্রামের শিক্ষার্থীরা যাতে শহরের বিভিন্ন সংস্থার ব্যাপারে ধারণা পেতে পারেন, তারও ব্যবস্থা আছে শিবিরে। নিরাপত্তার নানা দিক তো আছেই। তার সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে আগুন নেভানোর মতো আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার পাঠও দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। নিরাপত্তার কাজে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবহারও শেখানো হচ্ছে হাতেকলমে। ধাপে ধাপে গোটা রাজ্যেই এই ধরনের শিবিরের ব্যবস্থা হবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
|