নদিয়ার কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়ার ১২টি আসনের মধ্যে ১১টিতে মনোনয়ন জমা দিল কংগ্রেস। শুক্রবার দুপুর বারোটা নাগাদ রীতিমতো মিছিল করে রানাঘাট মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন প্রার্থীরা। ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। দলীয় নেতাদের সঙ্গে এ দিন হাজির ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ। জোট না হওয়ার জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “ওঁরা (তৃণমূল) জোটের বড় শরিক। অথচ জোটের বিষয়ে তাঁরা কোনও ভূমিকা নেয়নি। বরং কংগ্রেস পরিচালিত বোর্ডের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে। উন্নয়নের টাকা আটকে দিয়েছেন। ফলে উন্নয়ন বন্ধ হয়েছে। অস্থায়ী কর্মীরা হতাশায় ভুগছেন।”
আগামী ৩ জুন কুপার্স-সহ রাজ্যের ছ’টি পুরসভার নির্বাচন। বর্তমানে কুপার্সে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। নোটিফায়েড এরিয়ার ১২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ১০টি আসন। তৃণমূল ও সিপিএম একটি করে আসনে জিতেছে। কুপার্সের বর্তমান চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্রনাথ হাওলাদার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এবং ভাইস চেয়ারম্যান শিবু বাইন ১০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছেড়ে ৫ নম্বরে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কুপার্স শহর কংগ্রেসের সভাপতি বিমান দত্ত (সন্তু)। বিমানবাবুর ছেলে পিন্টু দত্ত মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডটি গতবার সিপিএম জিতেছিল। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন পরিতোষ মাঝি। গতবার ওই ওয়ার্ডে জিতেছিলেন তাঁর স্ত্রী চম্পা মাঝি। পিন্টুবাবু ও পরিতোষবাবু এ বার প্রথম নির্বাচনে লড়বেন।
১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশিস মণ্ডলের স্ত্রী রত্না মণ্ডল দলীয় প্রার্থী হয়েছেন। এর আগেও রত্নাদেবী কাউন্সিলর হয়েছেন। এ ছাড়া এ বারেও ১ নম্বর ওয়ার্ডে সুপ্রিয়া দে, ২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রশান্ত সরকার, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে শুভ্রারানি হালদার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্বপন মণ্ডল এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সঞ্জয়কুমার সাহা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তবে জোট না হওয়ায় হতাশা ছিল শঙ্করবাবুর গলায়। তিনি বলেন, “বোর্ড পরিচালনা করতে গিয়ে ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। কাজ করার জন্য ফান্ড ডাইভারশান করতে হয়। সবাই তা করে থাকে। তা তদন্ত করার জন্য দফতর রয়েছে, প্রশাসন রয়েছে। সেই পথে না গিয়ে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করা হল। সবমিলিয়ে জোটের পরিবেশ তৈরি করা হয়নি।”
তবে তৃণমূলের বিধায়ক আবির বিশ্বাস বলেন, “জোট নিয়ে আমার বিশেষ কিছু বলার নেই। ওটা উচ্চ নেতৃত্বের বিষয়। তবে যে সমস্ত বিষয়কে জোট না হওয়ার জন্য দায়ি করছেন তা আমাদের বিষয় নয়। বিধায়ক হওয়ার পরে এলাকার মানুষ আমাকে কয়েকটি অভিযোগ করেছিলেন। সেগুলো আমি যথাস্থানে জানিয়েছি। উন্নয়নের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হোক, গরিব মানুষের টাকা আত্মসাৎ হোক সেটা আমরা চাই না। ওখানে এ ধরনের কাজ হয়েছে। সেটা আমরা মেনে নেইনি। দুর্নীতির সঙ্গে আপস করা সম্ভব নয়। এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ করব।” |