|
|
|
|
|
|
|
প্রচ্ছদ ও অলংকরণশিল্পী সত্যজিৎ |
কতটুকু জানি |
তাহার চোখ দুটি গোল গোল, কান দুটা অনাবশ্যক রকমের বড়, মাথায় এক বস্তা ঝাঁকড়া চুল।’ বাংলা সাহিত্যে পাগলা দাশুর আবির্ভাব। এবং অলংকরণের ইতিহাসে আবির্ভাব সত্যজিৎ রায়ের। সিগনেট সংস্করণ ক্ষীরের পুতুল-এর জন্য অলংকরণ দিয়েই সত্যজিতের গ্রন্থচিত্রণের শুরু। সেই সংস্করণে সত্যজিতের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল শ্রীমান সত্যজিৎ রায় বলে এবং এও বলা হয়েছিল যে তাঁর শিল্পপ্রতিভা দেখে প্রকাশক মনে করছেন যে কালে অলংকরণে তিনি বিশেষ সুনাম অর্জন করতে পারবেন। সিগনেট প্রকাশনের কর্ণধার ডি কে, কিংবদন্তি দিলীপকুমার গুপ্তের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল। শিল্পী সত্যজিৎ রায় আজও এক আশ্চর্য দৃশ্য ইতিহাস। কিন্তু বিপুলা সে ইতিহাসের কতটুকু জানি? স্মৃতিচারণে সত্যজিৎ বলছেন, ‘ডি কে-র আসল আগ্রহ যে পুস্তক-প্রকাশনায়, কিছুদিনের মধ্যেই সেটা বুঝতে পারি। এর অল্পকাল বাদে কিমারের অন্যতম কর্তাব্যক্তির দায়িত্বভার হাতে থাকা অবস্থাতেই, তিনি সিগনেট প্রেস নাম দিয়ে এক প্রকাশনা-প্রতিষ্ঠানের পত্তন করলেন। |
|
আমাকে দিলেন বইয়ের প্রচ্ছদ-ডিজাইনের ভার, আর ছাপা বাঁধাই ইত্যাদি তত্ত্বাবধানের ভার নিলেন নিজেই। প্রথমেই যে কয়েকখানা বই তিনি প্রকাশ করলেন প্রকাশনা-জগতে তাতে একেবারে হইচই পড়ে যায়। আমার অবদানও নগণ্য ছিল না। বিশুদ্ধ বঙ্গীয় মোটিফের অলংকৃত প্রচ্ছদ, হাতের লেখার ছাঁদে গ্রন্থনাম, সেই সঙ্গে কখনও-কখনও তুলি কিংবা কলমে আঁকা ছবি,---বইয়ে এ-কাজ আমিই প্রথম করি।’ সত্যজিতের প্রচ্ছদ-অলংকরণের সেই সিগনেট-পর্ব আরও একবার পুনর্জীবিত হতে চলেছে আনন্দ-সিগনেটের সৌজন্যে। আম আঁটির ভেঁপু, চাঁদের পাহাড়-এর মতো পরিচিতগুলি আগেই প্রকাশিত হয়েছিল, এ বার প্রকাশিত হল সত্যজিতের স্বল্প-পরিচিত প্রচ্ছদ ও অলংকরণে সাজানো তিনটি সমারসেট মম্-এর গল্প, পিরানদেল্লোর গল্প আর লরেন্সের গল্প। তিনটিতেই প্রচ্ছদ এবং লেখকের প্রতিকৃতি সত্যজিৎ রায়ের। পাশাপাশি সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে সত্যজিতের অলংকরণ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একমাত্র ইংরেজি নাটক কিং অ্যান্ড রেবেল, মূল ও জগদিন্দ্র ভৌমিকের অনুবাদে। ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় নাটকটির অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন সত্যজিৎ, নিজের করা অলংকরণ-সহ। সুদৃশ্য বাক্সে মূল, অনুবাদ এবং সেই স্বল্প-দেখা অলংকরণ আবার সুলভ হল, বইপাড়ায় আনন্দের কথা বইকী! সঙ্গে ডান দিকের প্রচ্ছদের নীচে সেই অলংকরণের একটি।
|
এখন সত্যজিৎ |
একদা ‘অপুর সংসার’কে কেন্দ্র করে সিনেমা জগৎ পত্রিকার প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন সত্যজিৎ রায় (সঙ্গের ছবি)। দেখে সত্যজিতের হাতে তৈরি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সদ্য-পাওয়া ‘দাদাসাহেব ফালকে’ সম্মানের কথা মনে পড়তেই পারে। দুর্লভ এই প্রচ্ছদটি এ বারের এখন সত্যজিৎ (সম্পা: সোমনাথ রায়) পত্রিকার দশ বছর পূর্তির সংখ্যায়। তাতে দুর্লভ সাক্ষাৎকারও আছে সত্যজিতের, শেক্সপিয়র-কে নিয়ে। এ বারে সত্যজিতের ৯২তম জন্মদিন (২ মে) উপলক্ষে ওই পত্রিকাটি ও নন্দন-এর যৌথ উদ্যোগে ৬ মে নন্দন-এ বিকেল ৪টে থেকে নানাবিধ আয়োজন সত্যজিৎকে ঘিরে। রে-কুইজ তো আছেই, সত্যজিতের ছবির মেয়েদের নিয়ে সেমিনারে বলবেন মাধবী মুখোপাধ্যায় বিভাস চক্রবর্তী সোমা চট্টোপাধ্যায় ও বরুণ চন্দ। সংবর্ধনাও দেওয়া হবে মাধবী-কে। সত্যজিতের কয়েকটি ছবির স্থিরচিত্র ও সংলাপ নিয়ে তৈরি রঙিন পোস্টকার্ড প্রকাশ করবেন সন্দীপ রায়। আর এর আগে ২-৪ মে নন্দন-এ ‘রে’জ পিক’ সত্যজিতের পছন্দের একগুচ্ছ বিদেশি ছবি, তাঁর জন্মদিনে নন্দন-এর শ্রদ্ধার্ঘ্য।
|
|
স্কাউটমাস্টার |
গ্রীষ্মের গনগনে রোদে, তুমুল বর্ষায়, পাতাঝরা শীতে, সোনালি বসন্তে এক অক্লান্ত মানুষকে প্রতি শনি-রবি বিকেলে দেখা যেত ছেলেপুলেদের নিয়ে স্কাউটিং করতে হিন্দু স্কুলে, কখনও আবার হেয়ার-প্রেসিডেন্সির মাঠে। সেই দ্বাদশ দ্বিতীয় হিন্দু স্কুল ভারত স্কাউট গ্রুপের স্কাউটমাস্টার হিসেবেই সম্প্রতি প্রয়াত হলেন সাগরচন্দ্র সেন। জন্ম ১৯৩৩-এর ৮ ডিসেম্বর। এয়ার ইন্ডিয়া-য় চাকরি পেলেও স্কাউটে সময় দিতে পারছেন না বলে যোগ দেন অন্য চাকরিতে। স্কাউটমাস্টার-এর অবৈতনিক পদ, তবু তাকেই প্রাধান্য দিলেন, হয়তো পরিবার বা জীবিকার চেয়েও। আজীবন কাজ করে গিয়েছেন স্কাউটিং আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা হিসেবে। ‘ভারত স্কাউটস্ অ্যান্ড গাইডস্’-এর সেকেন্ড ক্যালকাটা ডিসট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের দায়িত্বপূর্ণ পদেও আসীন ছিলেন সাগরচন্দ্র। ভারতীয় স্কাউটিং-এ পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় যুক্ত থাকার জন্যে গত বছর ‘সিলভার স্টার’ পেলেন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের হাত থেকে। পেয়েছেন আরও বহু পুরস্কার। ৬ মে, রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় হিন্দু স্কুল প্রাঙ্গণে তাঁর স্মরণসভা।
|
বিতর্ক |
দলবাজি পড়াশুনোর বারোটা বাজাচ্ছে। রাজনীতিই শেখাচ্ছে শিক্ষকদের হেনস্থা করতে। তাত্ত্বিক আলোচনা ভাল, বাস্তব প্রয়োগেই সমস্যা? আঠারো বছরের ভোটদাতা কি আদৌ নিজের মতামত প্রকাশ করে? এখন গুছিয়ে নেওয়ার নীতি, শুধুই সুযোগসন্ধানীদের ভিড়। রাজনীতির মতো ভাল এবং মন্দ বিজ্ঞানেরও আছে। তবে বিজ্ঞান পড়ানোও বন্ধ হবে? সতেরোটি স্কুলের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের বিতর্কে এমনই সব প্রশ্ন উঠে এল। ‘ডা শ্রীকুমার রায় স্মারক আন্তঃবিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা’র এই আসর বসেছিল শ্যামবাজার এ ভি স্কুলে, উদ্যোগ সুতানুটি বইমেলা কমিটির। বিষয় ‘সভার মতে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির প্রবেশ বাঞ্ছনীয় নয়’। পক্ষে-বিপক্ষে মতামতে আসর জমজমাট। যুক্তি হিসেবে ওরা আশ্রয় নিয়েছিল পুরাণ, ইতিহাস এবং বাস্তব জীবনের। বিচারকরাও শিক্ষাবিদ। তিন বিজয়ী বিপক্ষে মত দিয়েছে। প্রথম টাকি বয়েজ স্কুলের অনির্মিত পালের বক্তব্য আদর্শ নাগরিক হতে হলে রাজনীতি নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়।
|
কলের গান |
বাঙালি জীবনের ছায়া-প্রতীক এক সময়ের চোঙওয়ালা গ্রামোফোন। দম দিলেই বাজত গান, নাট্যের অভিনয়। বিশ শতকের গোড়া থেকে আট দশক জুড়ে ছিল সেই নস্টালজিয়া। এখন তা বিস্মৃতপ্রায়। অথচ সে যন্ত্রই মাতিয়ে রাখত অন্দরমহল থেকে পুজোর প্যান্ডেল। সে সব শোনার অভিজ্ঞতা নিয়ে বিগত কয়েক বছর আকাডেমি থিয়েটারের নিবেদন ‘কলের গানে কালের গান’। এ বারে আসর বসছে ৪ মে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় বাংলা আকাডেমি সভাঘরে। স্মৃতিচারণ করবেন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। রেকর্ডে শোনা যাবে হারানো গীতি-সম্ভার।
|
উৎকর্ষ-দীপ |
ইউফ্রেটিস-এর তীরে নেবুচাদনেজারের শহর ব্যাবিলনে সে দিন রমরম করত শহুরে জীবন, আর তার কেন্দ্রে থাকত নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক মত-বিনিময়ের উদ্দীপ্ত অভ্যেস। মাঝে মধ্যেই মিলিত হতেন তাঁরা, আলাপ আলোচনায় নিজেদের সমৃদ্ধ করতেন। এই মানস-মিলনই নাকি ব্যাবিলনের নগরজীবনকে চারপাশের আর পাঁচটা জায়গা থেকে আলাদা করে রাখত। আজকের কলকাতায় কি পাওয়া যাবে সে দিনের ব্যাবিলনের উত্তরাধিকার? সত্যিকারের উচ্চ মানের আলাপ আলোচনায় কি পারে সে তার নাগরিককে সমৃদ্ধ করতে, এখনও? মাঝে মধ্যেই সংশয়ের মেঘ। মাঝে মধ্যেই আবার দুর্বার ঝড়ের দাপটে সেই সংশয়ী-মেঘের পলায়ন। ২৬ এপ্রিল সাহিত্য আকাদেমি ভবনে অধ্যাপক অশোক সেনের বক্তৃতা ‘রবীন্দ্রনাথ ও মার্ক্স’ কলকাতার নাগরিক মননের উৎকর্ষে আর এক বার আস্থা ফিরিয়ে আনল। মনে করিয়ে দিল, মার্ক্স এবং রবীন্দ্রনাথ, দুই পৃথিবীর দুই প্রকৃতির এমন দুই মনীষা বিষয়ে এত ব্যাপ্ত জ্ঞান এবং তাঁদের ভাবনার নিহিত সংযোগ বিষয়ে এত গভীর উপলব্ধি বিশ্বের খুব কম প্রান্তেই মিলবে আজ। দর্শন, ইতিহাস, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সাহিত্য: জ্ঞানের নানা পথে মধ্যেকার বেড়া ভেঙে এমন অনায়াস যাতায়াত করতে দেখা যাবে বিশ্বের খুব কম পণ্ডিতকেই। আরও এক বার উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে উঠল আমাদের নগরের উৎকর্ষ-দীপ। এ কি নিভে-যাওয়ার আগে জ্বলে-ওঠা? উত্তর দেবে পর-প্রজন্ম।
|
সবার জন্য |
প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে সেমিনার বা ওয়ার্কশপ তো লেগেই থাকে। সেখানে ভিড় জমান ‘পণ্ডিত’রা, সাধারণের ডাক পড়ে না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এনার্জি স্টাডিজ এবং সোলার এনার্জি সোসাইটি অব ইন্ডিয়া (ইস্টার্ন রিজিয়ন চ্যাপ্টার) এ বার সাধারণের জন্যই একটি জাতীয় কর্মশালার আয়োজন করতে চলেছে। বিষয় সোলার পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং। সূর্যালোক এ দেশে অফুরন্ত। অথচ সৌর সেল ব্যবহার এখনও জনপ্রিয় হয়নি। কর্মশালায় হাতে-কলমে দেখানো হবে কম খরচে সৌর সেল তৈরির খুঁটিনাটি, ফলে আত্মনির্ভরশীল হওয়ারও সুযোগ থাকছে। আসতে পারবেন বিজ্ঞানের সাধারণ স্নাতকরা। কর্মশালা চলবে স্কুল অব এনার্জি স্টাডিজ বিল্ডিং-এ ২-৫ মে, উৎসাহীরা যোগাযোগ করতে পারেন এটির ডিরেক্টর অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের সঙ্গে।
|
হাজার ছুঁয়ে |
দোহারের গানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯-এর ৭ অগস্ট স্টুডেন্টস হলে, কালিকাপ্রসাদ, রাজীব ও অন্য শিল্পীদের লোকগানের অনুষ্ঠানে। ২০০০-এর শেষে প্রথম লোকগানের সিডি ‘বন্ধুর দেশে’। দোহারের অবিরাম পথচলার এক যুগ কেটে গেল। দোহার যেমন দেশ-বিদেশ সফর করেছে লোকগান নিয়ে, গেয়েছে সিনেমায় ‘প্লেব্যাক’, বার করেছে ৮টি লোকসঙ্গীত ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের সংকলন, তেমনই সংগ্রহ করেছে দুই বাংলার কয়েক হাজার লোকগান। ৩ মে কলামন্দিরে দোহার মঞ্চস্থ করবে সহস্রতম অনুষ্ঠান ‘সহস্র দোতারা’। সেই সন্ধ্যায় ওরা শোনাবে পুরনো-নতুন লোকগান। প্রকাশ হবে ১২টি গানের নতুন সিডি ‘সহস্র দোতারা’। শুরুতে দোহার প্রণাম জানাবে বাংলার প্রবীণতম বাউল সনাতন দাস ঠাকুরকে। অনুষ্ঠানের সামগ্রিক প্রযোজনায় ওরিয়ন এন্টারটেইনমেন্ট।
|
মায়ি |
লবণহ্রদের নোনা বাতাসে মমতার ফল্গুধারা বইয়ে মায়ি একা থাকেন বিরাট এক গাছের তলায়। কাঠকুটো আর পলিথিন শিট দিয়ে তৈরি তাঁর ছোট্ট কুঁড়েঘর। অবশ্য তিনি একা থাকেন না। সঙ্গে থাকে অঞ্চলের সব অভিভাবকহীন নেড়িকুকুর। শীত আর রোদে কুঁড়েঘরটির ভেতর ঠাঁই নেয় তারা। প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নাম। আর বলতে গেলে মায়ি প্রায় অলৌকিক ভাবে জোগাড় করে ফেলেন এদের প্রতি দিনের খাবার। ক’দিন আগে গাড়ির তলায় সদ্গতি হল ‘দুলারি’র। তার কথা ভেবে এখনও মায়ির চোখ জলে ভরে যায়। ঝুরঝুরে বাসায় পনেরোটির মতো কুকুর নিয়ে বেশ আছেন স্বগৃহ থেকে বিতাড়িত এই দেহাতি জননী মনোজ-কাজলের মা, সল্টলেকের মায়ি। ছবিতে মায়ি তাঁর নিকানো দাওয়ায়, সঙ্গে মনোজ ও কাজল।
|
হাঙ্গারির ছবি |
মিক্লস জাঙ্কস মানুষটি হাঙ্গারির চলচ্চিত্রকার। তাঁর ছবি নিয়ে ষাট-সত্তর দশকে মাতোয়ারা হয়ে থাকত বাঙালি, এ-বঙ্গে তখন ফিল্ম সোসাইটির যুগ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকে সোভিয়েত ভাঙন অবধি হাঙ্গারির সমাজ ও রাজনীতিকে শিল্প-প্রতীকে তুলে আনত তাঁর ছবি। ইলেকট্রা মাই লাভ, মাই ওয়ে হোম, দ্য রেড অ্যান্ড দ্য হোয়াইট, রাউন্ড আপ... এ রকম আরও ছবি নিয়ে হাঙ্গারিয়ান ইনফরমেশন অ্যান্ড কালচারাল সেন্টারের সহায়তায় নন্দন ও ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ ৩-৫ মে তাঁর রেট্রো করছে নন্দনে। গত বছর নব্বই পূর্ণ হল তাঁর। আর অন্য দিকে নব্বই পূর্ণ করতে চলেছেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ও। ১৯৫৯-এ সাড়া-তোলা ‘কিছুক্ষণ’ ছবি নিয়ে তাঁর আত্মপ্রকাশ। ধন্যি মেয়ে, নিশিপদ্ম, অগ্নীশ্বর, মন্ত্রমুগ্ধ, আহ্বান, মৌচাক... এ রকম আরও অনেক ছবির অম্ল-মধুর স্বাদ বাঙালির মনে আজও অম্লান। এ বারে নন্দনে ২ মে তাঁর ছবি দেখাবে নন্দন ও তপন সিংহ ফাউন্ডেশন। বেরোবে একটি পুস্তিকাও।
|
সাঁঝের আলো |
বাংলা সিরিয়ালে খোলা হাওয়া আনা একটা যুগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন তিনি। অনেকেরই মনে পড়বে তেরো পার্বণ, উড়নচণ্ডী-র কথা। জোছন দস্তিদার-চন্দ্রা দস্তিদারের সেই আনকোরা, ঝকঝকে ধারাবাহিকের উদ্যোগে সকলের চোখ টেনে নিয়েছিলেন তাঁদের কন্যা খেয়ালী দস্তিদার। অভিনয়ে হাতেখড়ি ছোটবেলাতেই, মঞ্চে। নেপথ্যে চলেছিল কলমও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির স্নাতক খেয়ালীর আর এক ভালবাসা লেখা। সে লেখার প্রথম পূর্ণাঙ্গ বহিঃপ্রকাশ নাটকের আকারে। সাড়া জাগিয়েছিল তাঁর লেখা প্রথম নাটক ‘কান্দে কেনো বেহুলা সোন্দরি’। এর পরে অভিনয়ের পাশাপাশি টিভি ধারাবাহিক, টেলি-ছবির চিত্রনাট্য লেখা চলেছে সমান তালে। আর এ বার তিনি রীতিমতো ঔপন্যাসিকের ভূমিকায়। প্রথম উপন্যাসেই এক লেখিকার গোপনজীবনের কথা। প্রতিষ্ঠিত লেখিকা সুহাসিনী দত্তের জীবনের তিন পুরুষের চলাচলকে কেন্দ্র করে তাঁর প্রথম উপন্যাস সাঁঝের আলো। সম্প্রতি স্টারমার্কে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হল অভিনেত্রীর এই প্রথম উপন্যাসটি। প্রকাশক পত্র ভারতী। |
|
|
|
অনাদরে |
ক্ষমতাসীনের সমালোচনা করলে যে কী নিদারুণ নিরানন্দ-বিদায় ঘটে তা বোধহয় দেখেছিল গত শতকের ষাটের দশক। ১৯৬১-তে রবীন্দ্রনাথের শতবর্ষে লোকারণ্য, মহা ধুমধাম। আর তার ঠিক দু’বছর পরে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের শতবর্ষে তার ছিটেফোঁটারও সাক্ষী থাকেনি কলকাতা। সার্ধশতবর্ষেও সেই অনাদরের ব্যতিক্রম হল না। তাঁর প্রায় কোনও পাণ্ডুলিপিই রক্ষিত হয়নি, পাঁচশোরও বেশি গানের যৎকিঞ্চিৎ স্বরলিপিবদ্ধ, তারও অতি সামান্যই রেকর্ডে সংরক্ষিত। সাহিত্যে নীতির দায়ে রবীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করেছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল, তাই কি রবি ঠাকুরের ভক্ত বাঙালি তাঁকে নিল না? এই সার্ধশতবর্ষে, রবি-পুজোর এই ঘনঘটার মধ্যেও প্রশ্নটি ভাবায়। ১৮৬৩-র ১৯ জুলাই কৃষ্ণনগরে তাঁর জন্ম। দেওয়ান কার্তিকেয়চন্দ্র রায় ও প্রসন্নময়ী দেবীর এই কৃষ্ণনাগরিক সন্তানটি এ শহরে এসেছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজে ইংরেজি পড়তে। তার পরে বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা। চাকরিজীবনে ছিলেন প্রশাসনের বহু উচ্চ পদে। পাশাপাশি চলেছে কবিতা, নাটক আর গানে সাহিত্যচর্চা। পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ ও সতেরোটি নাটকের সঙ্গে সম্ভবত সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে আছে তাঁর চারটি গানের বই। বাংলা গানের ধারায় পৌরুষ এনেছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল, কিন্তু এই সার্ধশতবর্ষেও সে গানের চর্চা লক্ষণীয় ভাবে কম। আশার কথা, পুরনো রেকর্ড থেকে উল্লেখযোগ্য দ্বিজেন্দ্রগীতির একটি সংকলন প্রকাশ করল সারেগামা। তিনটি সিডি-র সেই সংকলনে প্রথমেই ১৯১০-এ রেকর্ড করা দ্বিজেন্দ্রলালের কণ্ঠে ‘তোমায় ভালবাসি বলে’। এই সময়ে দ্বিজেন্দ্রগীতি নিয়ে নিরন্তর চর্চা করে চলেছেন নূপুরছন্দা ঘোষ। তাঁর কর্মশালার শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান ১১ মে, বিড়লা অ্যাকাডেমিতে। |
|
|
|
|
|
|
|