দক্ষিণ কলকাতা
ঝিল সংস্কার
উদ্যোগী বাসিন্দারাই
রুগ্ন জলাশয়কে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন বাসিন্দারাই। তাঁদের উদ্যোগেই সংস্কার চলছে যাদবপুরের বিক্রমগড় কলোনির ঝিলটির। সহায়তা করছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন।
দক্ষিণ কলকাতার ৯৩ ও ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝে প্রায় দশ একর জুড়ে অবস্থিত জলাশয়টি ‘বিক্রমগড় ঝিল’ নামে পরিচিত। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর দশেক ধরে এই ঝিলটি বেহাল অবস্থা রয়েছে। ঝিলটিকে বাঁচাতে ২০০১-এ বাসিন্দাদের একাংশ ‘বিক্রমগড় ঝিল বাঁচাও কমিটি’ গড়ে তোলেন। কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপক ভট্টাচার্যর কথায়: “ঝিল বাঁচাতে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সংস্কারের কাজ শুরু করতে পেরে আনন্দ হচ্ছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিক্রমগড়, পোদ্দার নগর, কাটজু নগর, গল্ফগ্রিন, গল্ফগার্ডেন্সের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঝিলটি ফুসফুসের মতো।
কিন্তু একে ঘিরে অজস্র দোকান, গ্যারাজ, বাড়ি গড়ে উঠেছে। অভিযোগ, ঝিল সংলগ্ন এলাকা বেআইনি ভাবে দখলও হয়ে গিয়েছে। কচুরিপানায় ভরে মজে গিয়েছিল ঝিলটি। ঝিল বাঁচাতে পুরসভা-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে আবেদনও করা হয়েছিল। অবশেষে, এখন মজা জলাশয়ে পানা তোলার কাজ চলছে।
বিক্রমগড় উন্নয়ন সমিতির সহ সম্পাদক সুরজিৎ মিস্ত্রি বলেন, ‘‘ভাল হয়েছে। তবে আরও আগে কাজ শুরু হওয়ার দরকার ছিল। পুরসভা ঝিলের চারপাশ দখলমুক্ত করলে আরও ভাল হয়।” ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের তপন দাশগুপ্ত বলেন, “ঝিলের চারপাশ থেকে দখলদারি হটিয়ে সুন্দর করে সাজাতে চাই। সেই বিষয়ে পরিকল্পনাও করা হয়েছে।”
৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের মালা মহলানবীশ বলেন, “সংস্কারের পরে ওই ঝিলে মাছ চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিষয়ে পুরসভার কাছে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”
ঝিল সংস্কারে সাহায্যকারী পরিবেশবাদী সংগঠনের সম্পাদক অর্জন বসুরায়ের কথায়: “স্থানীয় মানুষের সহায়তায় কলকাতা সংলগ্ন এলাকার জীববৈচিত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত জায়গাগুলির পরিচর্যা এবং সংরক্ষণ আমাদের লক্ষ্য। আমরা সাঁতরাগাছি ঝিলের সংস্কারে সাহায্য করেছিলাম। একই ভাবে এখানেও বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।”
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) সঞ্চিতা মণ্ডল বলেন, “ঝিলটির সংস্কারের জন্য স্থানীয় বাসিন্দা ও একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের থেকে আমাদের কাছে আবেদন এসেছিল। আমরা সম্মতি দিই। তবে বাসিন্দাদের কাছে আবেদন সংস্কারের পরে যেন ঝিলটির ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণের দিকে নজর রাখা হয়।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.