পুরনো পাড়ায় উদাসীন গেইল
‘ঘুমিয়ে পড় তাড়াতাড়ি। না হলে গেইল চলে আসবে!’
শোলে-র গব্বর সিংহের ‘কুখ্যাত’ সংলাপটা একটু পাল্টে দিলে ক্যারিবিয়ান দানবের সঙ্গে দিব্যি খাপ খেয়ে যাবে। ছক্কার ঘায়ে নাক ভেঙে যাওয়া ছোট্ট টিয়াকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন। অথচ সেই ধ্বংসের স্রষ্টাকে ঘিরে উন্মাদনাও তো কম নয়। তিনি আছেন বলেই শনিবারের ইডেনে টিকিটের চাহিদা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। আর তাঁকে ঘিরে ইডেনের একটাই আকুতি। কালবৈশাখী নয়, কাল গেইল-ঝড় উঠুক।
টিম বাস থেকে নামা বিশাল চেহারাটা দেখা যেতেই শুক্রবার ক্লাবহাউস গেটের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়া শ’দুয়েক ভক্তের উল্লাস। ‘গেইল, গেইল’ চিৎকারে কান পাতা দায়। সে দিকে তাকালেনই না প্রাক্তন নাইট। কানে হেডফোন গোঁজা, মন পড়ে অন্য কোনও জগতে। উদাসী রাজার মতো পুরনো পাড়ার দিকে হেঁটে গেলেন ক্রিস গেইল।
দিল্লি টিমে সতীর্থ, আইপিএলে প্রতিদ্বন্দ্বী। শুক্রবার ইডেনে কোহলি ও গম্ভীর।
প্র্যাক্টিসেও সেই একই ঔদাসীন্য। বিরাট কোহলিরা যখন ফুটবল খেলছেন, গেইল নীরব দর্শক। ক্লাবহাউস গ্যালারি থেকে হঠাৎ দেখে গ্র্যানাইটের মূর্তি বলে ভুল হবে। প্রথমে হালকা নকিং, পরে নেট বোলারদের নিয়ম করে গ্যালারিতে ফেলা সব কিছুই যেন নীরব যন্ত্রমানবের প্রতিচ্ছবি। মাঠের উলটো দিকেই যে প্র্যাক্টিস করছে তাঁর পুরনো টিম, যে টিম থেকে তিনি রীতিমতো অসম্মানের সঙ্গে বিতাড়িত। সেই ম্যাকালাম, যার সঙ্গে তিনি বহু বার নাইটদের ইনিংস শুরু করেছেন। সেই লক্ষ্মী, যার সঙ্গে বেশ জমে গিয়েছিল ক্রিসের। তা তাদের দিকে গেইল এক বারের জন্যও তাকালেন বলে অভিযোগ নেই। সে সব স্মৃতি বোধহয় তাঁর কাছে এখন প্রাগৈতিহাসিক। পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে পাওয়া উপেক্ষা ভুলিয়ে দিয়েছে নতুন দলের কাছ থেকে আসা সম্মান। এ দিন টিম হোটেলেই তো বোঝা গেল, গেইলকে রীতিমতো আগলে রাখছে আরসিবি কর্তৃপক্ষ। সাক্ষাৎকারের অনুরোধ শোনা মাত্রই মিডিয়া ম্যানেজারের জবাব, গেইল খুব ক্লান্ত। ও থাক। বাকি যাকে চান, হয়ে যাবে।
ইডেনে গত বছর উড়িয়ে দিয়েছিলেন নাইটদের। এ বারও তাঁর কাছ থেকে সেই ‘দে ঘুমাকে’ ইনিংসের অ্যাকশন রিপ্লে চান টিম মালিক সিদ্ধার্থ মাল্য। মহাযুদ্ধের চব্বিশ ঘণ্টা আগে যাবতীয় আকর্ষণের উৎস পড়ে থাকলেন নিজের জগতে। যে জগতে ব্যাট-প্যাড ছাড়া তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ নিষেধ। শনিবারের ম্যাচের যে আলাদা কোনও গুরুত্ব থাকতে পারে তাঁর কাছে, অন্তত শরীরী ভাষা থেকে বোঝা অসম্ভব। টিম বাসে বসে করা টুইটেও নেই বিপক্ষকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া। ‘কাল আমার পুরনো টিম কেকেআরের সঙ্গে ইডেনে খেলা। চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ হবে।’
তৈরি হচ্ছেন গেইল।
চ্যালেঞ্জ তো সিএবি-র কাছেও। পুণে ম্যাচে গেইলের ব্যাট থেকে আসা ওই দুর্ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। সব আয়োজক শহরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দর্শক নিরাপত্তা বাড়াও। ইডেনের গ্যালারির দু’জায়গায় শনিবার থাকবেন পুলিশের দুই প্রতিনিধি। তাঁদের কাজ? বল গ্যালারির দিকে উঠলেও দূরবীন চোখে নিয়ে তার উপর নজর রাখা। যাতে কেউ আহত হলে তড়িঘড়ি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। আরও আছে। এমনিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচে দুটো অ্যাম্বুলেন্স মজুত থাকে ইডেনে। শনিবার সেটা বেড়ে হতে চলেছে চার। মাঠে থাকতে চলা বাইশ জন ক্রিকেটারের মধ্যে এক জনের নাম যখন ক্রিস গেইল, ঝুঁকি নিয়ে লাভ কী!

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.