একই সভায় সিপিএম-জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সহাবস্থান!
উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা পুরসভার সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সিপিএমের নেতাদের পাশাপাশি থেকেও খাদ্যমন্ত্রী কিন্তু তাঁর বক্তব্যে অনড়। শনিবার ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগেও জ্যোতিপ্রিয় বলে গিয়েছেন, “সিপিএমের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক না রাখা নিয়ে আমার বক্তব্য থেকে সরছি না। সিপিএমে এখন কোনও ভাল লোক নেই।”
হাবরার ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকের পর উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “সিপিএমের কেউ নিমন্ত্রণ করলে যাব না। এদের সঙ্গে একপাতে বসে জল, খাবার খেতে আমি অন্তত পারব না। এ কথা আমি আমার কর্মীদের সভায় বলেছি। দলের কর্মীরা এ কথা শুনে উৎসাহিত হয়েছেন। বিধানসভাতেও আমি সিপিএমের নেতাদের সঙ্গে কথা বলি না।”
তার কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য হাবরা পুরসভার অনুষ্ঠানে যান জ্যোতিপ্রিয়। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার অনুষ্ঠানে সিপিএম নেতারাও আমন্ত্রিত ছিলেন সেখানে। সে প্রসঙ্গে অবশ্য খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “পুর প্রশাসনের অনুষ্ঠান। ওঁরা কাকে আমন্ত্রণ জানাবেন, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।” |
দু’দিন আগে হাবরা-সহ ওই জেলারই ব্যারাকপুর ও বনগাঁয় ‘কিষাণ মান্ডি’র শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বিরোধী সিপিএম নেতারাও আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। অথচ, ওই জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসাসনিক বৈঠকে সিপিএমের জেলা সভাধিপতিকে ডাকা হয়নি। অন্যান্য জেলাতেও বিরোধী দলকে না-ডাকার এই রেওয়াজই চালু আছে। সাম্প্রতিক প্রশাসনিক অনুষ্ঠানগুলিতে তার ‘ব্যতিক্রম’ই দেখা যাচ্ছে। যা, প্রশাসনের একাংশের মতে ‘ইতিবাচক’।
সিপিএমের ‘সামাজিক সংস্রব’ ত্যাগ তাঁদের দলীয় নীতি নয়। তা সত্ত্বেও বারবার সিপিএমের বিরুদ্ধে ‘উষ্মা’ প্রকাশের কারণ ব্যাখ্যা করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “এ জেলায় প্রভাস ঢালির মতো দুষ্কৃতীকে চাঁদপাড়ার সিপিএম বিধায়ক মন্মথ রায় এবং বুল্টনের মতো দুষ্কৃতীকে সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী প্রশয় দিয়েছেন। আমার উপরে হামলাও হয়েছে। শাসনে সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টারেরা দিনের পর দিন খুন-সন্ত্রাস চালিয়েছে। সিপিএম বহু বছর আমাকে আমার নিজের গ্রামে ঢুকতে দেয়নি। তখন তো কেউ প্রতিবাদ করেনি!” বরং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে মিশে দুর্বল হতে চাই না। আমার জেলায় কেউ সিপিএম থেকে দলে আসতে চাইলে আমাদের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।” তবে সিপিএমের কেউ তাঁর কাছে সাহায্য চাইলে তিনি নিরাশ করবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
জ্যোতিপ্রিয়বাবুর এই বক্তব্যের থেকেও একধাপ এগিয়ে সিপিএমকে ‘নিকৃষ্ট শ্রেণি’ বলে বিঁধলেন তৃণমূলের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। হাওড়ার বাগনানে এক জনসভায় তিনি বলেন, “সিপিএম সম্পর্কে জ্যোতিপ্রিয়বাবু তাঁর ব্যক্তিগত মত বলেছেন। আমার মতে সিপিএম তার থেকেও নিকৃষ্ট শ্রেণির। আরও ভয়ঙ্কর। আমি নন্দীগ্রাম, খেজুরি এবং জঙ্গলমহলে সিপিএমের পৈশাচিক রূপ দেখেছি।” |